Biriyani of Begun: চপপ্রেমীদের তীর্থস্থান মান্নাবাবুর এই দোকান! এখানে মেলে বেগুনের বিরিয়ানিও...
Telebhaja of Purba Bardhaman: ভজহরি মান্না নন, ইনি কিশোরী মান্না। বানান চপ। স্থানীয় চপপ্রেমীদের কাছে প্রায় তীর্থস্থান মান্নাবাবুর এই দোকান! এখানে মেলে বেগুনের বিরিয়ানিও!

পার্থ চৌধুরী: বেগুনের বিরিয়ানি! হ্যাঁ, বেগুনের বিরিয়ানি এ বছরের হিট বড়শুলে! চপ-ও যে শিল্প হতে পারে, সেটা বোঝা যাবে পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলে এলে। এখানে মিলগেটের কাছের রাস্তার উপরে বিকেল থেকেই জমে যায় ভিড়। চপ যে কত রকমের হতে পারে, তা চোখে দেখা এবং চেখে দেখার এটা অন্যতম ঠিকানা গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায়। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই চপ কিনতে। আর এই চপ বিক্রি করেই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছেন মান্নাবাবু। না, ভজহরি মান্না নন, ইনি কিশোরী মান্না।
পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল বাজারে ছোট্ট একটি চালাঘরে শুরু হয়েছিল কিশোরী মান্নার তেলেভাজার দোকান। প্রথমে সাধারণ গ্রামীণ খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য শুরু হওয়া এই দোকান আগে ছিল হোটেল। পরে সেটা হয়ে যায় চপের দোকান। ক্রমশ অসামান্য এক যাত্রাপথ পেরিয়ে তা পরিণত হয়েছে চপপ্রেমীদের তীর্থস্থানে। সেই চালাঘর এখন বদলে গেছে পাকা দোকানে, আর তার সঙ্গে পাল্টেছে মেনু, পাল্টেছে জনপ্রিয়তার মাত্রা।এক সময় বড়শুল জুটমিল লোকের ভিড়ে গমগম করত। পরে মিল উঠে যায়। এখন আবার সেখানে অন্য ইন্ড্রাস্টি হয়েছে। এই সব উত্থানপতনের মধ্যে দিব্যি টিঁকে আছে এই দোকান।
বেগুনের বিরিয়ানি! হ্যাঁ সেটাও আছে এই দোকানে। মানে, বেগুনিকে বিরিয়ানি মশলায় মাখিয়ে তার নবজন্ম দেওয়া। কিশোরীবাবুর এখন বয়স হয়েছেন। ব্যবসা সামলান তাঁর ছেলে। সন্তোষ মান্না। সন্তোষের কথায়, বিকেলে মাত্র দু’ঘন্টার জন্য দোকান খোলা থাকে, কিন্তু দুপুর থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। আলু সেদ্ধ, মশলা তৈরি, পটল-বেগুন কাটা-- সবই হয় আগেভাগে। ঠিক বিকেল পাঁচটায় কড়াইতে তেল গরম হতে না হতেই শুরু হয় চপ ভাজার ধুম। তখনই ভিড় জমে যায় খদ্দেরদের।
এক সময়ে আলুর চপ, বেগুনি আর পেঁয়াজি নিয়ে সীমাবদ্ধ ছিল তাঁর দোকানের পসরা। সেখানে আজ যুক্ত হয়েছে চপের অসংখ্য ভ্যারাইটি। বিকেল হলেই কিশোরী মান্নার দোকানে পাওয়া যায় সয়াবিনের চপ, মাংসের চপ, চিংড়ির চপ, পটলের চপ, মোচার চপ, ভেজিটেবল চপ, বেগুনের বিরিয়ানি। সেই সঙ্গে পুরনো দিনের আলুর চপ, বেগুনি ও পেঁয়াজি। মেনুর বৈচিত্র আর টাটকা ভাজার সুবাস দূর দূরান্ত থেকে মানুষকে টেনে আনে তাঁর দোকানের সামনে। খেলে অম্বল হবে না, সেই গ্যারান্টিও মেলে, তবে তা দেন ক্রেতারাই।
এখানকার চপের দামও যথেষ্ট সাশ্রয়ী। আলুর চপ, বেগুনি, পেঁয়াজি পাওয়া যায় মাত্র পাঁচ টাকায়, সয়াবিন, মাংস, মোচা, চিংড়ি, পটলের মতো বিশেষ চপের দাম আট টাকা। এই সুলভ ও সুস্বাদু তেলেভাজার আকর্ষণে মেমারি, শক্তিগড়, রসুলপুর এমনকি বর্ধমান শহর থেকেও ক্রেতারা আসেন এখানে।
বছরের পর বছর ধরে এই দোকান শুধু বড়শুলের নয়, গোটা অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। এটি শুধু একটি দোকান নয়, এই অঞ্চলের ভোজনবিলাসেরও একটি অংশ হয়ে উঠেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)