Municipal Recruitment Scam: 'সুপ্রিম' নির্দেশে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও নাটকীয় মোড়! কোন দিকে গড়াল জল?
সোমবারই পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এফআইআর রুজু করে সিবিআই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ মেনেই এফআইআর রুজু করে সিবিআই। অয়ন সিল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই।
জ্যোতির্ময় কর্মকার: পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের নয়া মোড়। বলা ভালো, নাটকীয় মোড়! নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে অব্যাহতির পর সুপ্রিম কোর্ট এবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীততে কলকাতা হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশের উপরও স্থগিতাদেশ জারি করল। ফলে পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই আপাতত স্থগিত হয়ে গেল। একইসঙ্গে স্থগিতাদেশ জারি হল ইডির তদন্তের উপরেও। একসপ্তাহের জন্য এই স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করার সময় তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে গিয়েই পুরসভাতে নিয়োগেও দুর্নীতির খোঁজ পায় ইডি। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে সরানোর পর এবার তাঁর পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই-ইডি তদন্তের নির্দেশের উপরও জারি হল স্থগিতাদেশ।
উল্লেখ্য,সোমবারই পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এফআইআর রুজু করে সিবিআই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশ মেনেই এফআইআর রুজু করে সিবিআই। অয়ন সিল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই। অয়ন শীলের বাড়িতে উদ্ধার করা নথির তথ্য মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দিয়েছিল ইডি। ইডির সেই রিপোর্টে মেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। অয়ন শীলের বাড়িতে পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছে বলে রিপোর্টে দাবি করে ইডি। উদ্ধার হওয়া নথিতে কাঁচড়াপাড়া, নিউ ব্যারাকপুর, টিটাগড়, বরানগর, কামারহাটি, হালিশহর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদমের মত একাধিক পুরসভার নাম রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। ইডি দাবি করে, অপরাধ সংঘটিত করার পিছনে রয়েছে উচ্চ প্রভাবশালী ব্যক্তি। পুরসভার নিয়োগে রাজনৈতিক নেতাদেরও মদত রয়েছে। ওএমআর কারচুপি করে বেআইনি নিয়োগ করা হয়। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে কম করে ২০০ কোটি টাকা আয় করেছেন অয়ন শীল।
ইডি এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বড় নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, সিবিআই চাইলে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তও করতে পারে। কারণ তাঁর মতে, দুর্নীতির জাল অনেক দূর দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে। তাই চাইলে ইডির রিপোর্টের সূত্র ধরে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে পারে সিবিআই। তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই। এপ্রসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, 'পুর নিয়োগের তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে পারবে।' যার জবাবে সিবিআইও জানায় যে, তারা তদন্ত করতে রাজি। সিবিআই বলে,'আদালত নির্দেশ দিলে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে রাজি।' তারপরই পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়ন সিল সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, ইডির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় রীতিমতো ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, 'সাধারণ মানুষ মাত্র ১০ হাজার টাকা আয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ১০ হাজার টাকা উপার্জনের জন্য খেটে মরছেন। আর এক-একজনের কাছে এত এত টাকা! অর্পিতা মুখোপাধ্যায়েরদের কাছে এত টাকা আসে কোথা থেকে? একাংশ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে কোটি কোটি টাকা! আসছে কোথা থেকে? এইসব নেতাদের ছুঁলেই কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। আর সাধারণ মানুষকে ছুঁয়ে দেখুন বাজারে তাদের কত দেনা আছে। সাধারণ মানুষের সব জানা উচিত। কারণ, দেশের আসল মালিক তার জনগণ।' এখন পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই-ইডির তদন্তের উপর এক সপ্তাহের জন্য শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশ জারি করায়, এবার জল কোনদিকে গড়ায়, সেটাই দেখার।