Justice Abhijit Ganguly: 'সুপ্রিম' নির্দেশে সরছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, কী বলছেন অভিষেক?
'আমরা বার বার বলে এসেছি। বিচারবিভাগের কয়েকজন এসব করছেন। ২৬টা সিবিআই কেস দিয়েছে! রামনবমীতে এনআইএ দিয়েছে! কারা করেছে সবাই দেখেছে! যারা দুর্নীতির সাথে যুক্ত, তাদের শাস্তি হোক আমরা চাই।'
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে সরছে মামলা। আর সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই রায় প্রসঙ্গে বলেন, আদালতের রায়কে স্বাগত। ভারতীয় বিচারব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আগামীদিনে সঠিক বিচার হোক।
তাঁর কথায়, 'হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টের রায় আমাদের কাছে শিরোধার্য। সম্পূর্ণ আস্থা ভরসা বিচার ব্যবস্থার উপর রাখি। যেহেতু এটি সাব জুডিস ম্যাটার তাই বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাই না। শুধু এটুকু বলব সঠিক বিচার হোক। তৃণমূল কংগ্রেসেরও যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় বা প্রমাণিত হয় তবে তারও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক এবং ভারতবর্ষের মাটিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক। নজিরবিহীন শাস্তি হওয়া দরকার। যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিচার হোক। বিচার ব্যবস্থার উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালত যে রায় দিয়েছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। মানুষ তার ন্যায্য বিচার আগামী দিন পাবে।'
উল্লেখ্য, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে সিবিআই হাজিরার নির্দেশ থেকে মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের চাকরি বরখাস্তের নির্দেশ- সবই এসেছে বিচাপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে। এমনকি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য প্রসঙ্গে বেশ কয়েকবার কড়া মন্তব্য করেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিয়োগ দুর্নীতি মামলা যুব নেতা কুন্তল ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পর, সংবাদমাধ্যমের সামনে কুন্তল ঘোষ একাধিকবার দাবি করেছিলেন যে তাঁকে দিয়ে নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সেই নিয়ে একটি চিঠি লিখে সিবিআই ও ইডির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব নেতা।
যার পরিপ্রেক্ষিতে বিচাপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় এই মন্তব্যও করেন যে, কুন্তল যা বলেছে, তাতে দরকারে অভিষেককে জেরা করা উচিত। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরার অনুমতি পেয়েছিল সিবিআই, ইডি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইডি, সিবিআইকে সেই অনুমতি দিয়েছিলেন। এমনকি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই নোটিসও পাঠায় অভিষেককে। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে সিবিআই আগের নোটিস শুধরে নতুন নোটিস পাঠিয়ে অভিষেককে জেরার বিষয়টি স্থগিত রাখে।
এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে সরিয়ে দেওয়ার পর অভিষেক আরও বলেন, 'আমরা বার বার বলে এসেছি। বিচারবিভাগের কয়েকজন এসব করছেন। ২৬টা সিবিআই কেস দিয়েছে! রামনবমীতে এনআইএ দিয়েছে! কারা করেছে সবাই দেখেছে! যারা দুর্নীতির সাথে যুক্ত, তাদের শাস্তি হোক আমরা চাই।' 'সুপ্রিম' নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি বদল। আদালতের বাইরে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মুখ খোলার জন্য নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে। অন্য বিচারপতির এজলাসে মামলা সরানোর নির্দেশ। নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। এখন কোন বিচারপতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলা শুনবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
যদিও সিপিআইএম নেতা ও বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সব মামলা থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে মামলাটি শোনা হচ্ছে, সেই মামলা অন্য বিচারপতির কাছে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।