Howrah: অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেমিকার বিয়ের পাকা দেখা, অবসাদে আত্মহত্যা করল প্রেমিক
ডোমজুড়ের কোলড়া মধ্যপাড়ার বাসিন্দা শেখ জাহিরুদ্দিন সঙ্গে পাশের গ্রাম নতিবপুরের মেয়ে পারভিন খাতুনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক মাস তাদের সম্পর্কে চিড় ধরে।
দেবব্রত ঘোষ: প্রেমিকার বিয়ে অন্যত্র ঠিক হয়ে যাওয়ায় অবসাদে আত্মহত্যা করল প্রেমিক। মঙ্গলবার রাতে হায়দরাবাদে জাহিরউদ্দিন শেখ (২৭) নামে ওই যুবক আত্মহত্যা করেন। এই খবর রাতেই ডোমজুড়ের কলোড়া মধ্যপাড়ায় তার বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর জাহিরের বাড়ির লোকজন এবং গ্রামবাসীরা প্রেমিকার বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ। বাদ যায়নি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িও। পরে ডোমজুড় থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় জাহিরের বাড়ির লোকজন ডোমজুড় থানায় মেয়ের দাদার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিস আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা শুরু করেছে।
ডোমজুড়ের কোলড়া মধ্যপাড়ার বাসিন্দা শেখ জাহিরুদ্দিন সঙ্গে পাশের গ্রাম নতিবপুরের মেয়ে পারভিন খাতুন(২০) এর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক মাস তাদের সম্পর্কে চিড় ধরে। কর্মসূত্রে জাহিরুদ্দিন হায়দরাবাদে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন। সেখান থেকে মাঝে মাঝে পারভিনের সঙ্গে ফোনে কথাও বলতেন। এই নিয়ে মেয়েটির দাদা শেখ সফিউদ্দিন আপত্তি জানায় বলে অভিযোগ। তিনি ফোনে জাহিরুদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি দিতেন যাতে তার বোনের সঙ্গে সে কোন সম্পর্ক না রাখেন।
গত রবিবার পারভীনের পরিবারের লোকজন অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেন। বিয়ের কেনাকাটাও শুরু করে ওই পরিবার। এই খবর জাহিরউদ্দিনের কাছে পৌঁছালে সোমবার রাতে সে নিজের ফ্ল্যাটে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুর খবর গ্রামে চাউর হতেই জহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীদের একাংশ পারভীনের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। এমনকি বিয়ের জন্য তৈরি সোনার গয়না, কাপড় জামা এবং টাকাপয়সা লুট করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এর পাশাপাশি গ্যাস সিলিন্ডার খুলে বাড়িতে আগুন লাগানো হবে বলে হুমকি দেয় লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ডোমজুড় থানার পুলিস। গ্রামবাসীরা চড়াও হয় কোলড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়িতেও। জাহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকজন মেয়েটি দাদা শেখ শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা শুরু করেছে।
তবে মেয়েটির মা জানিয়েছেন, তাদের মেয়েকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত ওই ছেলেটি। তাই গত রবিবার অন্য জায়গায় মেয়ের বিয়ের পাকা দেখা হয়। এমনকি বাড়িতে সোনার গয়না এবং দামি কাপড় কেনাকাটা করে রাখা ছিল। গতকাল রাতে তাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় জাহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকেরা। তবে জাহিরউদ্দিনের পরিবারের লোকজন মেয়েটির সঙ্গে তাদের ছেলের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানিয়েছে দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ে অন্যত্র ঠিক হয়ে যাওয়ায় অবসাদে আত্মহত্যা করেছে জাহিরউদ্দিন। পুলিস গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, এটা একেবারে ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি চেয়েছিলেন বসে মিটিয়ে দিতে।