তৃণমূলের পথেই ২০২১-এ তৃণমূল বধের নীল নকসা তৈরি বিজেপির
অঞ্জন রায়
অঞ্জন রায়
লোকসভা নির্বাচনে ফলে রাজ্যে নতুন অক্সিজেন পেয়েছে বিজেপি। প্রত্যাশা পরিণত হয়েছে প্রত্যয়ে। আর তার পরই তৃণমূলের পথে তৃণমূলকে বধের পথে হাঁটতে শুরু করেছে তারা। যে কৌশলে ২০০৯-২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের বাম সরকারকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল তৃণমূল। এবার তৃণমূলকে ঘায়েল করতে সেই পথেই চলেছে বিজেপি। রাখঢাক না করে জানিয়ে দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
২০০৬ সালে সিঙুর আন্দোলনের পর থেকেই রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করে বাম সরকার। নন্দীগ্রামকাণ্ডের পর সেই রাশ কার্য চলে যায় বিরোধী দল তৃণমূলের হাতে। মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাইটার্স বিল্ডিং বসলেও রাজ্য তখন চলত কালীঘাট থেকে। ২০১১-য় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত সেই অবস্থার সাক্ষী থেকেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা। ফের একবার কি সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে বিজেপি? ক্ষুরধার রাজনৈতিক আন্দোলনে কি তারা বদলে ফেলতে চাইছে ক্ষমতার সমীকরণ।
সিঙুরকাণ্ডের পর থেকেই তত্কালীন বাম সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতার পথে হাঁটে তৃণমূল। রাজ্য সরকারের যাবতীয় বৈঠক বয়কট করেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। রাজ্যের প্রশাসনের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন তত্কালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক সংঘর্ষে জেলায় কোথাও কারও মৃত্যু হলে সেই দেহ কলকাতায় নিয়ে আসত তৃণমূল। কলকাতার রাজপথে হত শোক মিছিল। রবিবার সন্দেশখালিতেও একই ছবি দেখলেন রাজ্যবাসীরা। কলকাতায় নিহত বিজেপি কর্মীদের দেহ আনার জন্য চরম দ্বৈরথ হল পুলিস ও বিজেপি নেতাদের মধ্যে। কিন্তু পুলিসের বাধায় শেষ পর্যন্ত সফল হননি তারা। এর পর নবান্নের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হচ্ছেন দিলীপ-লকেটরা।
শুধু সংখ্যালঘুরাই অনুপ্রবেশ করায় না, অনুপ্রবেশ করায় বিজেপিও, দাবি মমতার
পাশাপাশি একের পর এক পঞ্চায়েত ও পুরসভা দখল করেও তৃণমূলকে চাপে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের পরিকল্পনা অনুসারে বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলকে লাগাতার অস্বস্তিতে রাখা। যাতে প্রশাসনিক কাজে মন না দিতে পারেন তৃণমূল নেতারা। সেই সুযোগে প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চায় বিজেপি।
এই নিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, '২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা সরাবই। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গবাসী আমাদের সবুজ সিগন্যাল দিয়ে দিয়েছেন। আমরা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো হাতে হাত রেখে বসে পরিস্থিতির সাক্ষী থাকব না। আমরা তৃণমূল ও তার পরিচালিত প্রশাসন প্রতিরোধ করব। এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না তৃণমূলকে।'