Bengal Cabinet Reshuffle: আমার দ্বিতীয় ইনিংস আগের থেকে উজ্জ্বল হবে, মন্ত্রী হয়ে জানালেন বাবুল
সুপ্রিয়, ২০১৯ সালের নির্বাচনে আসানসোল লোকসভা আসনে ১.৯৭ লক্ষ ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে কেন একজন বাঙালি সাংসদকে দলের জন্য তার সমস্ত কিছু দেওয়ার পরেও পূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে না। মোদী সরকারে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পশ্চিমবঙ্গের নতুন পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের সঙ্গে তার দ্বিতীয় ইনিংসটি, নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের (NDA Government) কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে তার প্রথম ইনিংসের তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল হবে। সুপ্রিয়, গত বছর বিজেপি থেকে পদত্যাগ করেন। তাকে সমর্থন করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘আমার সত্যিই এই কাকতালীয় ঘটনা সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। হ্যাঁ, জীবন অবশ্যই বৃত্ত সম্পূর্ণ করেছে। গত বছর আগস্টে যখন আমি (বিজেপি) ছেড়েছিলাম, এবং আজ আমি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছি।।
বুধবার রাজভবনে শপথ নেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় আট জন নতুন মুখের মধ্যে সুপ্রিয়ও রয়েছেন। বাবুল বলেন ‘দিদির হাত দিয়ে পোয়েটিক জাস্টিস এসেছে। কারণ আমি রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছিলাম, এবং তিনিই আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন, আমাকে সাহস যোগান এবং আমাকে বালিগঞ্জ আসনের প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করেন এবং তারপরে পুরো দল আমাকে সমর্থন করেছিল।‘
গত বছর রদবদলের সময় তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার পরেই, সুপ্রিয় ঘোষণা করেন যে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন কিন্তু পরে লোকসভা সদস্য হিসাবে পদত্যাগ না করার কথা বলেন তিনি। যদিও, গায়ক-রাজনীতিবিদ গত সেপ্টেম্বরে টিএমসি-তে যোগ দেন।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষের উন্নয়নের জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে আমার আগের অভিজ্ঞতা থেকে যা কিছু শিখেছি তা সবই দেব এবং আমার দ্বিতীয় ইনিংসকে আরও উজ্জ্বল করে তুলব।‘
সুপ্রিয়, ২০১৯ সালের নির্বাচনে আসানসোল লোকসভা আসনে ১.৯৭ লক্ষ ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে কেন একজন বাঙালি সাংসদকে দলের জন্য তার সমস্ত কিছু দেওয়ার পরেও পূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে না। মোদী সরকারে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি হয়তো কিছু ভুল করেছি কিন্তু আমি ২০১৪ সাল থেকে আমার সবকিছু দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছিল। কেন পশ্চিমবঙ্গের কেউ পূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে পারে না?’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার চার মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে তার মন্ত্রিসভার একটি বড় রদবদল করেছেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সহ নয়জন শপথ নিয়েছেন। ২০১১ সালে তার দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রথমবার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বড় রদবদল হল বুধবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মন্ত্রীসভার প্রায় অর্ধেক সদস্যের পোর্টফোলিও পরিবর্তন করেছেন।
গত বছরের মে মাসে টানা তৃতীয়বার টিএমসি ক্ষমতায় ফিরে আসে। এর পরে প্রথম মন্ত্রীসভার পুনর্গঠনটি হল, যখন গত মাসে এসএসসি কেলেঙ্কারিতে সিনিয়র মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফার করে ইডি। অনেকেই মনে করছেন এই ঘটনায় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে দল। সেখান থেকে উদ্ধার পেতেই এই পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় বাবুল সুপ্রিয়কে তথ্য প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স দফতর বরাদ্দ করা হয়। এই দফতর এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ছিল। একই সঙ্গে তাঁকে পর্যটন দফতরের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।
শশী পাঁজা এবং শোভানদেব চট্টোপাধ্যায়কে যথাক্রমে শিল্প ও বাণিজ্য এবং সংসদীয় বিষয়ক দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই দফতরগুলিও গ্রেফতার হওয়ার আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ছিল। প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সত্যজিৎ বর্মণকে। শিক্ষা দফতরের নতুন প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে তাঁকে।
বাবুল সুপ্রিয় ছাড়াও, আরও চারজন তৃনমূল নেতা মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন বুধবার। তাঁরা হলেন উদয়ন গুহ, পার্থ ভৌমিক, স্নেহাসিস চক্রবর্তী এবং প্রদীপ মজুমদার। রাজ্যপাল লা গণেশনের তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান।