'পু' থেকে 'গীত' হয়ে করিনা আজ ৩৫, জীবনের এক ডজন মাইলফলক
কপূর খানদানের মেয়ে, করিশমা কপূরের বোন। বলিউডে কপূর পরিচয়ের ভিড়ে তাই করিনার হারিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা ছিল প্রবল। কিন্ত মনে ছিল খিদে আর নিজেকে প্রমাণ করার অদম্য জেদ। তার জেরে কপূর তকমা থেকে বেরিয়ে বেবো আজ শুধুই করিনা। ৩৫ বছরের জন্মদিনে দেখে নেবো করিনার জীবনের এক ডজন মাইলফলক।
ওয়েব ডেস্ক: কপূর খানদানের মেয়ে, করিশমা কপূরের বোন। বলিউডে কপূর পরিচয়ের ভিড়ে তাই করিনার হারিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা ছিল প্রবল। কিন্ত মনে ছিল খিদে আর নিজেকে প্রমাণ করার অদম্য জেদ। তার জেরে কপূর তকমা থেকে বেরিয়ে বেবো আজ শুধুই করিনা। ৩৫ বছরের জন্মদিনে দেখে নেবো করিনার জীবনের এক ডজন মাইলফলক।
১. রিফিউজি (২০০০)
কহো না পেয়ার হ্যায় ছবির শুটিং ছেড়ে মাঝপথে বেড়িয়ে গিয়েছিলেন করিনা। বলিউডে পা রাখতে বেছে নিয়েছিলেন জে পি দত্তর রিফিউজি ছবি ডিগ্ল্যামারাস নাজনিনকে। কহো না সুপারহিট হলেও বছর শেষে ফিল্মফেয়ার বেস্ট ডেবিউ অ্যাওয়ার্ড করিনাই পেয়েছিলেন। প্রথম ছবি থেকেই নিজের জাত চিনিয়েছেন করিনা।
২. অশোকা (২০০১)
কেরিয়ারের শুরুতেই শাহরুখের বিপরীতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন করিনা। হোক না অশোকার মতো ঐতিহাসিক ছবি। শাহরুখ 'অশোক' খানের বিপরীতে করুবাকী করিনাকে কিন্তু দর্শকদের মনে ধরেছিল। তবে তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছিলেন সমালোচকরা। এই ছবির জন্যই প্রথম ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান তিনি।
৩. কভি খুশি কভি গম (২০০১)
অশোকার বছরেই মুক্তি পায় করিনার প্রথম ব্লকবাস্টার কভি খুশি কভি গম। ছবির মূল জুটির চরিত্রে শাহরুখ-কাজল থাকলেও, 'পু' হয়ে ওঠে করিনার সিগনেচার স্টাইল। একই বছর তাই ফিল্মফেয়ারে মনোনয়ন পান করিনা। অশোকার জন্য সেরা অভিনেত্রীর পাশাপাশি 'পু' করিনাকে এনে দেয় সেরা সহ অভিনেত্রীর মনোনয়নও।
৪. চামেলি (২০০৪)
কমার্শিয়াল ছবির এক নম্বর হিরোইনের তকমা যখন গায়ে লেগে গিয়েছে তখনই চামেলির মতো ছবিতে অভিনয়ের সাহস দেখিয়েছিলেন করিনা। অভিনয় যে তার রক্তে তা ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। ফিল্মফেয়ারে স্পেশাল পারমেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন করিনা।
৫. দেব (২০০৫)
শুধু চামেলিতেই থেমে থাকেননি। একের পর এক ছবিতে নিজেকে ভাঙতে থেকেছেন করিনা। কভি খুশি কভি গমের পু থেকে দেব ছবিতে করিনার আলিয়া। সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে অভিনয়ে উত্তরণ হচ্ছিল তার। ক্রমশ পরিণত হচ্ছিলেন করিনা। এই ছবি তাকে এনে দিয়েছিল ফিল্মফেয়ার ক্রিটিক চয়েস অ্যাওয়ার্ড।
৬. ওমকারা (২০০৬)
ভাল ছবি করার খিদে করিনাকে বারবার তাড়া করেছে। গ্ল্যামারের কথা না ভেবে তাই বারবার দেবের আলিয়া বা ওমকারার ডলির মতো নো মেকআপ লুকে পর্দায় আসতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি করিনা।
এই ছবিও করিনাকে এনে দিয়েছিল ফিল্মফেয়ার ক্রিটিক চয়েস অ্যাওয়ার্ড। বলিউডের এক নম্বর আসনে থাকা খুব কম অভিনেত্রীই জীবনে দু'বার সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়নও।
৭. জব উই মেট (২০০৭)
কমার্শিয়াল ছবিতে ফিরলেন করিনা। যেই করিনা আগের থেকে অনেক ধারালো। করিনার কেরিয়ারের উজ্জ্বলতম মাইলফলক জব উই মেট। গোটা ছবিতে দর্শক ডুবেছিলেন গীতরূপী করিনায়। এই ছবি করিনারই। ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেলেও অধরাই ছিল। এবার হল স্বপ্নপূরণ।
৮. কুরবান (২০০৯)
এই ছবি যখন মুক্তি পায় সইফিনার নতুন প্রেম তখন বলিউডের ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার। সইফের সঙ্গে যেই গুটিকয়েক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন করিনা তার একটি কুরবান। ছবি হিট হয়নি, সইফিনা জ্বরে কিছুটা ব্যবসা এসেছিল বক্সঅফিসে। তবে মুগ্ধ করেছিল করিনার অভিনয়। আরও একবার ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন করিনা।
৯. থ্রি ইডিয়টস (২০০৯)
ব্লকবাস্টার থ্রি ইডিয়টস আমিরের ছবি হলেও করিনা কিন্তু একবারের জন্যও হারিয়ে যাননি। বরং ছবিত করিনার উপস্থিতি যেন আরও বেশি অক্সিজেন দিয়েছেন আমিরের চরিত্রকে। স্বপ্ল পরিসরেও নিজের অভিনয়ের ধার বুঝিয়ে করিনা এই ছবির জন্যও আদায় করে নিয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন।
১০. উই আর ফ্যামিলি (২০১০)
কাজলের সঙ্গে কভি খুশি কভি গম ছবিতে কাজ করেছিলেন করিনা। ৯ বছর পর ফের উই আর ফ্যামিলি। কাজলই এখানে মূল হিরোইন। করিনা পার্শ্বচরিত্রে। একই ছবিতে কাজল থাকলে অনেক অভিনেত্রীই পিছিয়ে যান। পিছিয়ে আসাতো দূরের কথা, দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার ঝুলিতে ভরেন করিনা।
১১. গোলমাল থ্রি (২০১০)
রোম্যান্টিক, সিরিয়াস ছবিতে কাজ করে ফেলেছিলেন করিনা। বাকি ছিল কমেডি। সেই সাধও অপূর্ণ রাখেননি বেবো। বলিউডে কমেডি মানেই ছবি জুড়ে অভিনেতাদের দাপট। অভিনেত্রীদের খুব কমই দেওয়ার থাকে ছবিতে। কিন্তু তেমন ছবি থেকেই ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোয়ন আর কোনও অভিনেত্রী আদায় করতে পেরেছেন বলে মনে হয় না।
১২. হিরোইন (২০১২)
কর্পোরেট, ফ্যাশন সব ছবিতেই প্রথম করিনাকেই নিতে চেয়েছিলেন মধুর ভান্ডারকর। হিরোইনে করিনাকে নিতে চাইলেও প্রথমে রাজি হননি তিনি। পরে ঐশ্বর্য্য সরে আসায় আবার করিনার ভাগ্যেই শিকে ছেঁড়ে। ছবি সেভাবে প্রত্যাশা না জাগালেও করিনা নিরাশ করেননি। করিনার জীবনের অন্যতম ছবি হিরোইন। ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়নও পেয়ছিলেন। ছবি হিট হলে হয়তো পুরস্কারটিও তার কপালেই ছিল।