চাপে মত বদল চিনের, মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণায় কৃতিত্ব নিল ট্রাম্প প্রশাসন
নতি স্বীকার করেও ভারতের সমালোচনা করতে ছাড়েনি পাকিস্তান। এ দিন ফয়জল বলেন, “পাকিস্তান বরাবরই সন্ত্রাসবাদ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। সেই কারণে কাশ্মীরে ভারত নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে এসেছে ইসলামাবাদ।”
![চাপে মত বদল চিনের, মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণায় কৃতিত্ব নিল ট্রাম্প প্রশাসন চাপে মত বদল চিনের, মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণায় কৃতিত্ব নিল ট্রাম্প প্রশাসন](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2019/05/02/190361-masood.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন: জইশ প্রধান আজহার মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি চিহ্নিত করায় নিজেদের কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আজ টুইটে আমেরিকার বিদেশ সচিব পম্পেও বলেন, ধন্যবাদ ইউএসইউএন (রাষ্ট্রসঙ্ঘের মার্কিন প্রতিনিধি দল)-কে। তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করা সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ মার্কিন কূটনীতির বড় জয়। আশা করি, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ফেরানো গুরুত্বপূর্ণ ধাপে পৌঁছনো গেল।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালেই পাক-মদত পুষ্ট জঙ্গি মাসুদ আজহারের সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে পাকিস্তানকে চাপে রাখতে দেখা গিয়েছে তাদের। প্রায়শই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তানকে বুঝিয়ে দিয়েছেন সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কোনও সমঝোতা করতে নারাজ তারা। এমনকি মোটা অঙ্কের অনুদানও বন্ধ করে ওয়াশিংটন।
পুলওয়ামা ঘটনার পর মাসুদ প্রসঙ্গে আরও নড়েচড়ে বসে মার্কিন প্রশাসন। ভারতকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। রাষ্ট্র সঙ্ঘে সন্ত্রাসবাদ বিরুদ্ধে মার্কিন ‘আগ্রাসন নীতির’ সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে বেজিংকে। এ বারও বারও ‘পদ্ধতিগত ত্রুটি’ দেখিয়ে ভেটো প্রয়োগ করে চিন। পরে, বাধ্য হয়ে বেজিংকে বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়, দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ করতে চলেছে তারা। গত বুধবার চিন জানায়, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা এবং নথি খতিয়ে দেখে মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি মেনে নিতে তাদের অসুবিধা নেই।
আরও পড়ুন- রাজ্যাভিষেক হওয়ার আগেই দেহরক্ষীকে বিয়ে তাইল্যান্ডের হবু রাজার
মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি চিহ্নিত করার পর পাক-বিদেশমন্ত্রক তরফে জানানো হয়, দ্রুত মাসুদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জঙ্গির নিয়ম কার্যকর করা হবে। যদিও রাষ্ট্র সঙ্ঘের এই পদক্ষেপে ভারতের কূটনৈতিক সাফল্য স্বীকার করতে নারাজ ইমরান খানের সরকার। সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়জল দাবি করেন, এই সিদ্ধান্তের পিছনের বিশ্বের অনেক দেশের ভূমিকা রয়েছে।
নতি স্বীকার করেও ভারতের সমালোচনা করতে ছাড়েনি পাকিস্তান। এ দিন ফয়জল বলেন, “পাকিস্তান বরাবরই সন্ত্রাসবাদ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। সেই কারণে কাশ্মীরে ভারত নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে এসেছে ইসলামাবাদ।” মাসুদে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তকমা দেওয়ার পিছনে দীর্ঘ লড়াই রয়েছে ভারতে। ২০০৯ সাল থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে নয়া দিল্লি মাসুদে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণার দাবি জানিয়ে এসেছে। ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং আমেরিকা ভারতের পাশে থাকলেও এই পদক্ষেপে চিন বরাবারই বিরোধিতা জানিয়েছে। মোট চার বার ভিটো প্রয়োগ করে বেজিং।
আরও পড়ুন- চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গি মাসুদ প্রসঙ্গে মুখ খুলল পাকিস্তান
উল্লেখ্য, সম্প্রতিকালে পুলওয়ামা হামলার পাশাপাশি পাঠানকোট, উরি হামলা, সংসদ হামলা-সহ একধাকি নাশকতায় নাম রয়েছে মাসুদ আজহারের সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। ২০০১ সালে ওই সংগঠনকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের তকমা দেয় আমেরিকা। চাপে পরে পরের বছরেই ওই জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান। যদি আইএস (পাক গোয়েন্দা সংস্থা) মদত পুষ্ট ওই জঙ্গি সংগঠন বিভিন্ন নাম ভাঁড়িয়ে নাশকতা কার্যকলাপ চালিয়ে যায় মাসুদ আজহার।