Jiban Krishna Saha: ৬৫ ঘণ্টার রেকর্ড জেরা! দুর্নীতির 'জীবন'চরিতে গরুপাচার কারনামাও
জীবনকৃষ্ণের বাবার স্পষ্ট কথা, ছেলে যদি দুর্নীতি করে থাকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিক। অভিযোগ করেন, 'ছেলে আমার ব্যবসায় ক্ষতি করত। আমার সাথে সম্পর্ক ভালো না।'
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ৬৫ ঘণ্টার রেকর্ড জেরা! শুক্রবার সকাল থেকে সোমবার ভোর... তারপরই গ্রেফতার তৃণমূলের বড়ঞাঁর বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তাঁকে নিয়ে হয়েছে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে। ওদিকে ৩ দিন পর উদ্ধার হয়েছে বিধায়কের দ্বিতীয় মোবাইল। বিধায়কের বাড়ি লাগোয়া পুকুরের জল ছেঁচে উদ্ধার দ্বিতীয় মোবাইল। পাশাপাশি, তদন্তে সামনে এসেছে আরও বিস্ফোরক তথ্য।
শুধু শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নয়। 'জীবন'চরিত ঘাঁটলে উঠে আসছে দুর্নীতির আরও কারনামার ইতিহাস। গরুপাচারকাণ্ডেও নাম উঠে আসছে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বড়ঞাঁর বিধায়কের। বীরভূমে বিধায়কের বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান জীবনকৃষ্ণ সাহা। বাবা বিশ্বনাথ সাহার সাঁইথিয়ায় তেল মিল আছে। আলুর কোল্ড স্টোরেজের ব্যবসাও রয়েছে তাদের। বড়ঞাঁতে রেশন চালের ডিস্ট্রিবিউটর। একসময়ে পৈতৃক ব্যবসা দেখতেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু সেই ব্যবসায় তিনি ক্ষতি করেছিলেন বলে অভিযোগ বিধায়কের বাবার।
ইতিহাসে এমএ করেছেন জীবনকৃষ্ণ। তারপর বিএড-ও করেন। ২০০৪-এ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান তিনি। তারপর থেকেই পরিবারের সঙ্গে তাঁর আর কোনও যোগাযোগ নেই। ২০১৩-তে নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলে শিক্ষকতার চাকরি তিনি করেন। ২০২১-এ বদলি নিয়ে কুন্ডল হাইস্কুলে যোগদান করেন। ২০১০ সালে তিনি প্রথম ১০ জনকে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। সেই ১০ জনকে চাকরি পাইয়েও দেন তিনি। তারপর থেকেই অন্যান্য জেলা থেকে চাকরির জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে। ২০১০ থেকে ২০১৯- এই ৯ বছরে নিয়োগ দুর্নীতির বিশাল চক্র তিনি গড়ে তোলেন। বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে তাঁর নেটওয়ার্ক।
২০১৩ সালে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পান তাঁর স্ত্রী। সেই একই বছর চাকরি পান তাঁর শ্যালকও। দুর্নীতির ১০ বছরের পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তি গড়ে তোলেন জীবনকৃষ্ণ। এপ্রসঙ্গে জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা বিশ্বনাথ সাহা বলেন, ছেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক নেই। এমনকি তাঁর ব্যবসায় নানানভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে তাঁর ছেলে। মিড-ডে মিলের লাইসেন্স করতে গেলে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁর স্পষ্ট কথা, ছেলে যদি দুর্নীতি করে থাকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিক। এই বিষয়ে বা তাঁর এত বিশাল পরিমাণ সম্পত্তি নিয়ে কিছু বলার নেই। অভিযোগ করেন, 'ছেলে আমার ব্যবসায় ক্ষতি করত। আমার সাথে সম্পর্ক ভালো না।'