ক্যানিং থেকে কাকদ্বীপ, নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে
আবহাওয়া দপ্তরের নির্দেশিকা বলছে, সুন্দরবন তথা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতে প্রলয় নৃত্য চালাবে সুপার সাইক্লোন আমফান। বিরাট অংকের ক্ষয়ক্ষতি হবে তাই নয় প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা
![ক্যানিং থেকে কাকদ্বীপ, নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে ক্যানিং থেকে কাকদ্বীপ, নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/05/19/251179-canning2.png)
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্যানিং থেকে সুন্দরবনের গোসবা, বাসন্তী, ঝড়খালি, সুন্দরবন উপকূল সর্বত্র হয়েছে চূড়ান্ত সর্তকতা। ইতিমধ্যে সরানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা ও নদী বাঁধের কাছে বসবাসকারী লক্ষাধিক মানুষকে। অধিকাংশকে নিরাপদ স্থানে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সুন্দরবনের প্রতিটা নদীতে ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে জলের গতি। ফুলে-ফেঁপে উঠছে প্রত্যেকটি নদীর জল। দুশ্চিন্তা আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সুন্দরবন তথা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কয়েক লক্ষ মানুষ।
আবহাওয়া দপ্তরের নির্দেশিকা বলছে, সুন্দরবন তথা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতে প্রলয় নৃত্য চালাবে সুপার সাইক্লোন আমফান। বিরাট অংকের ক্ষয়ক্ষতি হবে তাই নয় প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। যেমনটা দেখা গেছিল আইলার সময়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি ২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লার থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে আমফান। সুন্দরবনের ক্যানিং মহাকুমার কুমিরমারি, মোল্লাখালি, সাতজেলিয়া, ঝড়খালি, এবং গোসবা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সরানো হয়েছে বহু মানুষকে।
এই সমস্ত মানুষদের সরিয়ে কোথাও রাখা হয়েছে বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে তো আবার কোথাও বড় বড় স্কুল বাড়িতে। তবে সেখানে থাকার পরও আতঙ্ক কাটছে না এইসব মানুষদের মধ্যে। কারণ ইতিমধ্যেই সাগরের জল ১৫ থেকে ১৮ ফিট উচ্চতায় ঢেউ হতে পারে এই আশঙ্কা করছে সকলেই। যদি কেউ এর উচ্চতা আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী হয় তাহলে সাগরের বহু দ্বীপ এবং তার সংলগ্ন এলাকা, অন্যদিকে গোসবা ব্লকের বিভিন্ন দ্বীপ একেবারে জলের তলায় চলে যাবে। তছনছ হয়ে যাবে সুন্দরবনের জনজীবন। শুধু সুন্দরবনের নয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই ঝড়ের ফলে।
যে সমস্ত এলাকাগুলিতে দুর্গত মানুষদের রাখা হচ্ছে সেই বাড়ি গুলোতে ইতিমধ্যেই স্যানিটেশনের কাজ করা হয়েছে। কারণ বহু ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে করেন টাইম সেন্টার করা হয়েছিল ভিন রাজ্য থেকে আসা মানুষদের কে। ইতিমধ্যেই বহু এলাকায় রান্না করা খাবার সরবরাহ করতে শুরু করেছে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত। যে সমস্ত মানুষরা আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন আশ্রয়স্থল গুলিতে সেখানে এই খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- আমফান মোকাবিলায় ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন, কন্ট্রোলরুম চালু করল হাওড়া পুরনিগম
ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এবং প্রাণহানি যাতে কম করা যায় তার জন্য সিভিল ডিফেন্স ও জাতীয় বিপর্যয় কমিশনের কর্মীরা এসে পৌঁছেছেন সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সেই সমস্ত দ্বীপগুলিতে। অন্যদিকে সবেমাত্র নদীতে কোটাল মুখ শুরু হওয়ায় ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস দেখা দিচ্ছে নদীগুলি তে । আর এর ফলে বহু নদী বাঁধের ধ্বস নামতে শুরু করে দিয়েছে। মঙ্গলবার বিভিন্ন নদীতে যে পরিমাণ জল বেড়েছে তাতে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কা করছে সুন্দরবন বাসিও। কারণ বহু মাটির নদী বাঁধ এখনো পর্যন্ত সেইভাবে মেরামতি হয়নি এ বছর। লকডাউন এর কারণে থমকে ছিল মেরামতির কাজ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জায়গায় ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি ও শুরু হয়েছে। আকাশের মুখ পুরোপুরি এক কথায় বলতে গেলে গম্ভীর।
********************************************************
আমফান নিয়ে এই স্টোরিগুলো অবশ্যই পড়ুন-
** ভয়ঙ্কর গতিতে বাংলার দিকে এগোচ্ছে সুপার সাইক্লোন আমফান! কী করবেন, কী করবেন না জানুন
** কোন কোন জেলার ওপর দিয়ে কত কিমি বেগে বইবে আমফান, জেনে নিন
** আমফানের আস্ফালনে ফুঁসছে দিঘার সমুদ্র, সুনসান সৈকত, দেখুন ছবি
** আমফান মোকাবিলায় ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন, কন্ট্রোলরুম চালু করল হাওড়া পুরনিগম