জাতীয়তাবাদের অর্থ হিটলার, নাত্সিবাদ, ভাগবতের নিশানায় 'দেশপ্রেমী' দল
জাতীয়তাবাদ শব্দ নিয়ে আপত্তি রয়েছে সরসঙ্ঘ চালকের।

নিজস্ব প্রতিবেদন: 'জাতীয়তাবাদ', 'দেশপ্রেম' হয়ে উঠেছে বিজেপির রাজনীতির ভরকেন্দ্র। যে রাজনীতির সঙ্গে অ্যাডল্ফ হিটলারের নীতির তুলনা টানছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, জাতীয়তাবাদের জিগির তুলে মূল্য়বৃদ্ধি, বেকারত্বের মতো ইস্য়ুগুলি ধামাচাপা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের মুখে, জাতীয়তাবাদের সঙ্গে হিটলারের নাত্সী জার্মানির তুলনা।
''জাতীয়তাবাদ বলবেন না। এটা মানুষকে অ্যাডল্ফ হিটলারের নাত্সি জার্মানির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।'' ঠিক এই ভাষাতেই রাঁচির মোরাবাদির মুর্খার্জি বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্ঘের একটি অনুষ্ঠানে বললেন মোহন ভাগবত। ওই অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের এক আরএসএস কর্মীর সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতার কথা তুলে ধরে সরসঙ্ঘচালক বলেন,''জাতীয়তাবাদ শব্দের ব্যবহার করবেন না। দেশ বলুন। জাতীয় বলুন। জাতীয়তাও বলতে পারেন। জাতীয়তাবাদ বলবেন না। জাতীয়তাবাদের অর্থ হিটলার, নাত্সিবাদ।''
ভাগবত এদিন মন্তব্য করেন, ভারতকে বিশ্বনেতা হিসেবে তুলে ধরার লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে চলেছে আরএসএস। হিন্দুত্বের অ্যাজেন্ডাও ধরে রাখা হয়েছে। এটাই দেশকে একসূত্রে বাঁধা কাজ করবে। ভারতের শ্রীবৃদ্ধি হলে লাভবান হবে বিশ্ব। আরও একবার ভাগবত মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতের সংস্কৃতি বলতে হিন্দু সংস্কৃতিই বোঝায়। বিভেদ থাকলেও একে অপরের সঙ্গে জুড়ে রয়েছেন দেশের মানুষ। সকলকে একজোট করার ক্ষমতা রয়েছে ভারতের।
ভাগবতের মুখে জাতীয়তাবাদ শব্দ নিয়ে আপত্তি বেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিজেপি সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকে 'জাতীয়তাবাদ' হয়ে উঠেছে চর্চার বিষয়। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদকে পুঁজি করে ভোটে নেমেছিল মোদী-শাহ জুটি। পাকিস্তানের বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক করেছিল ভারতীয় সেনা। সেনিয়েই প্রচারে ঝড় তুলেছিল বিজেপি। খোদ প্রধানমন্ত্রী সেনার নামে ভোট চেয়েছিলেন। বিজেপির প্রচারের মূলেই ছিল, দেশকে রক্ষা করতে পারেন একমাত্র ৫৬ ইঞ্চি ছাতির নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীরা অবশ্য় বলছে, অচ্ছে দিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। উল্টে বেকারত্ব ৪৫ বছরে হয়েছে সর্বোচ্চ। এসব থেকে নজর ঘোরাতে উগ্র দেশপ্রেমের ঔষধি খাওয়ানো হচ্ছে। নাত্সি জার্মানির সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। সেটাই শোনা গেল ভাগবতের মুখে। তবে কি সরকারকে বার্তা দিতে চাইলেন সরসঙ্ঘচালক?
আরও পড়ুন- নেই ডিএ, বাড়িভাড়া ভাতা কমেছে ৩%, বিহিত চেয়ে মমতাকে চিঠি কর্মচারী সংগঠনের