সারদার প্রতারণার অ আ ক খ - বিশেষ রিপোর্ট
জমি-ফ্ল্যাট, ট্যুর প্যাকেজ, কিংবা অর্থ বিনিয়োগ। চোখ ধাঁধানো সুদের টোপকে হাতিয়ার করে রাজ্য জুড়ে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল সারদা গোষ্ঠীর। সেই ফাঁদেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। একটি রিপোর্ট।
জমি-ফ্ল্যাট, ট্যুর প্যাকেজ, কিংবা অর্থ বিনিয়োগ। চোখ ধাঁধানো সুদের টোপকে হাতিয়ার করে রাজ্য জুড়ে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিল সারদা গোষ্ঠীর। সেই ফাঁদেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। একটি রিপোর্ট।
কোটি কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারি। দেশ তোলপাড় করা স্ক্যামের ফাঁদে সর্বস্বান্ত রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাজকর্ম নিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই অনুসন্ধান শুরু করেছিল সেবি। সংস্থার ব্যবসা সংক্রান্ত বহু নথি কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু তথ্য দেওয়ার নামে, তিন বছর ধরে সেবিকে নানা ভাবে এড়িয়ে গেছে সারদা।
জমি-ফ্ল্যাট, ট্যুর-প্যাকেজ থেকে স্কিমে টাকা লগ্নি। সারদার বেআইনি ব্যবসার জাল বিস্তার করেছিল সর্বত্র।
সারদার বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নির ক্ষেত্রেও ছিল লোভনীয় অফার।
বিভিন্ন স্কিমে টাকা দিলে মিলবে জমি-ফ্ল্যাট। স্কিমে টাকা দিলে ছিল সুদের হাতছানিও।
একেবারে স্বল্প সঞ্চয়ের বাজার ধরতে অভিনব স্কিম এনেছিল সারদা। বারো থেকে ষাট মাসের মধ্যে একশ টাকা করে জমাতে পারবেন আমানতকারী। বিনিময়ে পাবেন চোকধাঁধানো রিটার্ন।
জমি বা ফ্ল্যাটের জন্য টাকা দিলেও আমানতকারীদের সামনে ছিল লোভনীয় সব হাতছানি। ১২-২৪% হারে সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত সারদা।
কোন জমি বা ফ্ল্যাট দেওযা হবে তা আমানতকারীদের আগের থেকে বলে দেওয়া হবে না। যখন জমি দেওয়া হবে তখনই তা চিহ্নিত করতে হবে। সেই জমি বা ফ্ল্যাটের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে ওই সংস্থা।
এই স্কিমে ,সম্পত্তির ওপর নিয়মিত নজরদারি করতে পারবেন না বিনিয়োগকারী।
সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী জমির বদলে পূর্ব ঘোষিত টাকা ফেরত পেতেই বিনিয়োগ করত।
সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেও ছিল নজরকাড়া চমক। যে চমকে নিমেষেই চোখ ধাঁধাতো আমানতকারীদের। সারদার বিজ্ঞাপনে একত্রিশ জায়গায় জমির উল্লেখ ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেই জমির সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচটি। ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসেও ছিল নানান অফার।
নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত টাকা জমালে নির্দিষ্ট সময়ে ২৫ শতাংশ টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি ছিল। আবার নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমালে কোনও একটি জায়গায় যাওয়ার অফার ছিল। বিনিয়োগকারীরা সেখানে না গেলে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রতি ছিল। কিন্তু বাস্তবে কেউ সেই টাকা হাতে পেতেন না।
এমনকি গাড়ি কারখানা বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানাতেও ছিল কুমিরছানার গল্প। কোথাওই কোনওভাবে কখনই উদপাদন হয়নি। সব জায়গায়তেই প্রকল্প শুরুর গল্প ফাঁদা হলেও বাস্তব ছিল ঠিক তার উল্টো। এভাবেই কোটি কোটি টাকার বেআইনি জাল ছড়িয়েছে সর্বত্র।