শ্বাসকষ্টে ছটফট করছে রোগী! হাসপাতাল কর্মীরা বললেন, ''নিজের কাপড় নিজেকেই কাচতে হবে''
বৃদ্ধকে এমন কথা শোনানোর পাশাপাশি একই কথা জানিয়ে দেওয়া হল সঙ্গে আসা ছেলে এবং পুত্রবধূকেও।
![শ্বাসকষ্টে ছটফট করছে রোগী! হাসপাতাল কর্মীরা বললেন, ''নিজের কাপড় নিজেকেই কাচতে হবে'' শ্বাসকষ্টে ছটফট করছে রোগী! হাসপাতাল কর্মীরা বললেন, ''নিজের কাপড় নিজেকেই কাচতে হবে''](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/09/19/275947-aaaaa.jpg)
তন্ময় প্রামাণিক - এতটাও অমানবিক হওয়া যায়! আসলে অমানবিকতাই যেন দস্তুর কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে! ৮৬ বছরের বৃদ্ধ শ্বাসকষ্টে ছটফট করছেন। স্ট্রেচারে শুইয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়, হাসপাতালের কর্মীরা বললেন, "আপনি নিজের জামা কাপড় নিজেই কাচবেন। পারবেন তো? না হলে এটাই পড়ে থাকবেন।" সঙ্গে থাকা পরিবার একথা শুনে তো হতবাক! ৮৬ বছরের প্রবীণ শ্বাসকষ্টে ছটফট করছেন। আর তাঁকে গ্রিন বিল্ডিংয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কয়েকজন কর্মী বললেন, জামা-কাপড় নিজেকেই কাচতে হবে। না হলে ওই জামাকাপড় পরেই থাকতে হবে!
বৃদ্ধকে এমন কথা শোনানোর পাশাপাশি একই কথা জানিয়ে দেওয়া হল সঙ্গে আসা ছেলে এবং পুত্রবধূকেও। নিজের জামা-কাপড় নিজেক কাচতে হবে। নাহলে যা পরে রয়েছেন ছুটির সময় তাই থাকবে বৃদ্ধের শরীরে। কথাগুলো শুনেই ভিরমি খাওয়ার অবস্থা গড়িয়াহাটের বাসিন্দা সঞ্জয় মৈত্রের। ৮৬ বছরের বাবা সিওপিডি আক্রান্ত। সঞ্জয় বলেন, "বেশ কিছুদিন একটি নার্সিংহোমে বাবার চিকিৎসা চলছিল। ভালো হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কাশি এবং জ্বর ফিরে আসায় আবার হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য এখানে আসি।'' বৃদ্ধকে তাঁরা প্রথমে নিয়ে আসেন শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালে। সেখানে বলা হয়, করোনা উপসর্গ এবং শ্বাসকষ্ট রয়েছে। ইমিডিয়েট অক্সিজেন দরকার। তার পরই কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সঞ্জয়বাবু বলেন, এখানে ভর্তি নেওয়া হয়। আমাদের একটি মুচলেকা লেখানো হয়েছে, করোনা আক্রান্ত কিনা তা না জানা গেলেও করোনা চিকিৎসার ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করাতে ইচ্ছুক। আমরা সম্মতি দেওয়ার পর বাবাকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রিন বিল্ডিংয়ে। নিয়ে যাওয়ার সময় কর্মীরা বলেন, জামাকাপড় নাকি রোগীকে কাচতে হবে। ৮৬ বছরের মানুষটা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কথা বলার ক্ষমতাই নেই, তিনি কী করে কাপড় কাচবেন! আমরা গোটা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি।"
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, "আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই ধরনের অভিযোগ না ওঠে! কেন এই অভিযোগ, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে খুঁজে দেখা হচ্ছে।"