Madan Mitra: এসএসকেএমে রোগী ভর্তি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর; পাত্তাই দিলেন না, কী বললেন মদন?

Madan Mitra: শুক্রবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় শুভদীপ পাল নামে এক যুবক জখম হন। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালেরই ল্যাব টেকনিশিয়ান। তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করাতে যান খোদ মদন মিত্র। এসএসকেএম-এর ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে নাকি তাঁকে ভরতি নেওয়া হয়নি।

Updated By: May 21, 2023, 05:30 PM IST
Madan Mitra:  এসএসকেএমে রোগী ভর্তি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর; পাত্তাই দিলেন না, কী বললেন মদন?

বিক্রম দাস: রোগী ভর্তি করতে গিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দুর্বব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল মদন মিত্রের বিরুদ্ধে। এনিয়ে ভবানীপুর থানায় এফআইআর করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই এফআইআরকে গলার মালা বলে মন্তব্য করলেন কামারহাটির বিধায়ক। গতকালই তিনি বলেছিলেন, ফের যদি কোনও মুমূর্ষু রোগী আসে তাহলে তাকে নিয়ে ফের যাব এসএসকেএম-এ।

আরও পড়ুন-অ্যাডভেঞ্চারেই ছিল জীবন, লাদাখের পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু কলকাতার দম্পতির

শুক্রবার রাতে ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজের এক ল্যাব টেকনিশিয়ানকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন মদন মিত্র। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দুর্বব্যবহার ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এনিয়ে সরব হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফোন যায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তার পরই মদন মিত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর হয় ভবানীপুর থানায়। এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি না হলেও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেই রোগী ভর্তি হন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। তাঁকেই আজ দেখতে গিয়েছিলেন মদন মিত্র। সেখানেই তিনি বলেন, ওই এফআইআরকে ভয় পাই না। ওই এফআইআর আমার গলায় গোলাপ ফুলের মালা। এসএসকেএমের ব্যবহারে দুঃখিত। 

কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক আরও বলেন, যে রোগীকে নিয়ে এত কাণ্ড তাঁকে প্রথমে ইনস্ট্টিউট অব নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা হয়। শেষপর্যন্ত পরিবারের লোকজন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের দফতরের দ্বারস্থ হন। তারপরই সেখান থেকেই রোগীর পরিবারের কাছে ফোন আসে। ফোন আসে মেডিক্যাল কলেজ থেকেও। সেই ফোনের ভিত্তিতেই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হল শুভদীপ পাল নামে ওই রোগী। তাকেই দেখতে আজ মেডিক্যাল কলেজে আসেন মদন। রোগীকে দেখে আসেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলে আসেন। 

ওই ঘটনা নিয়ে গতকাল যথেষ্টই চড়া মেজাজে ছিলেন মদন মিত্র। তবে আজ তাঁকে কিছুটা নরম বলেই মনে হল।  গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর উপরে অভিমান ঝরে পড়েছিল তাঁর গলা থেকে। তিনি বলেন, হয়তো আমি ওঁর চোখের বিষ হয়ে গিয়েছি। গত ৫ বছর ৫ মিনিটও আমার সঙ্গে ওঁর কথা হয়নি। তবে আজ তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর উদ্যোগ নিয়ে ওই রোগীকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেছে তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। 

মেডিক্যাল ভর্তি নিয়ে রোগীর পরিবারের এক সদস্য বলেন, দাদার জন্যই সম্ভবত ভর্তি করা গেল। তবে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলাম। তারপর ওখান থেকেই ব্যবস্থা হয়েছে। এর জন্য দাদাকে ধন্যবাদ দেব। রোগীর অন্য এক আত্মীয় বলেন, আমাদের রোগী সংকটজনক অবস্থা হওয়া সত্বেও পিজিতে বেড পাওয়া যায়নি। আমরা জানতাম একজনকেই পাশে পাওয়া যায়, তিনি হলেন মদন মিত্র। আর কারও কাছে তো পৌঁছাতে পারব না। সেইমতো ওঁর কোঁজ করে আমরা ভর্তির অনুরোধ করি। তখন উনি আমাদের সামনেই ভর্তির অনেক চেষ্টা করলেন। 

শুক্রবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় শুভদীপ পাল নামে এক যুবক জখম হন। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালেরই ল্যাব টেকনিশিয়ান। তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করাতে যান খোদ মদন মিত্র। এসএসকেএম-এর ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে নাকি তাঁকে ভরতি নেওয়া হয়নি। প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। গত ১৮ মে রাতে বাইপাসে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। প্রথমে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা হয় পরে বেসরকারি হাসপাতাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসা ব্যায়বহুল। তাই পরিবারের লোক মদন মিত্রের দ্বারস্থ হন।

তারপরেই এসএসকেএমে ট্রান্সফার করার চেষ্টা করে পরিবার। কিন্তু সেখানে ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও রোগীর ভর্তি তো দূরের কথা প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও হয়নি বলে অভিযোগ। এরপরেই বিস্ফোরক মদন মিত্র। তিনি  বলেন, 'বাম আমলে অনায়াসে ভর্তি করতে পারতাম ১ মিনিটে। দালাল চক্র সক্রিয় ৫০ - ২০ হাজার টাকা দিলে চিকিৎসা হয়। সে নো টু পিজি। এটা আর জনগণের হাসপাতাল নয়। আমাদের এরকম অবস্থা তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা।'

মদন মিত্রের আরও অভিযোগ, 'জরুরী অবস্থায় চিকিৎসক স্টেথোস্কোপ নিয়ে বাইরে এসে প্রাথমিক চিকিৎসাটা করতে হয়। এখন সেটা হচ্ছে না। তারা এসি রুমে থেকে চা সিগারেট খাচ্ছে। সব ফুর্তি করছে। আর পরিবারে কাছে সেখানে রাইফেল নিয়ে পুলিস আসছে। এই হসপিটালে গরিব মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না। ভিখারির মতন পড়ে রয়েছে। এটা হসপিটাল না অডিটোরিয়াম।' তাঁর দাবি, স্বাস্থ্যসচিব, মন্ত্রীকে জানিয়েও লাভ হয়নি কিছুই। শুধু তাই নয়, এসএসকেএম হাসপাতাল বয়কটের দাবিও জানান মদন।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.