Same Sex Marriage: বিয়ে করেছেন কেন? মঙ্গলকোটে আক্রান্ত সমপ্রেমী দম্পতি!
এদেশে সমপ্রেম অপরাধ নয়। ঐতিহাসিক রায়ে সংবিধানের ৩৭৭ ধারা বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: বিয়ে করেছেন কেন? আক্রান্ত সমপ্রেমী জুটি। তাঁদের মারধর করলেন পরিবারে লোকেরাই! দুই যুবতীকে উদ্ধার করল পুলিস। নিজেদের মতো থাকার নির্দেশ দিল আদালত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল পূ্র্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটেরই কাশেমনগর গ্রামে থাকেন শিউলি মাঝি, আর মাথরুন গ্রামের বাসিন্দা শম্পা মাঝি। দু'জনের সম্পর্ক প্রায় দেড় বছরের। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আলাপ হয়েছিল তাঁদের। আড়াই মাস আগে বিয়ে করেন শম্পা ও শিউলি। শিউলির বাড়ির লোকের বিয়ে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু বাদ সেধেছেন শম্পার বাড়ি লোকের! শুধু তাই নয়, মেয়ের নামে থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছেন।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে দিঘা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব প্রধান শিক্ষকের, প্রতিবাদে রাস্তায় পড়ুয়ারা
এবছর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন শম্পা। শুক্রবার সকালে কন্যাশ্রী সংক্রান্ত কাজে স্কুলে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন শিউলিও। তখন দু'জনের উপর চড়াও হয়ে শম্পার বাড়ির লোকেরা বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিস। শিউলি ও শম্পাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। স্রেফ মামলা রুজু করা নয়, দু'জনকে পেশ করা হয় কাটোয়া আদালতে। বিচারকের নির্দেশ, 'ওই দুই যুবতী প্রাপ্তবয়ষ্ক। তাঁরা নিজেদের মতো থাকতে পারেন'। কিন্তু এই সম্পর্ক কি মেনে নেবে শম্পার পরিবার? আতঙ্ক এখনও কাটেনি সমপ্রেমীর দম্পতির।
ভারতে সমপ্রেমে বিয়ে কিন্তু আর অপরাধ নয়। এক ঐতিহাসিক রায়ে সংবিধানের ৩৭৭ ধারা বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ব্রিটিশ আমলের এই আইনে প্রকৃতি বিরুদ্ধে যেকোন ধরনে যৌনতাকেই অপরাধ বলে গণ্য় করা হত। অপরাধ তো বটেই, সমপ্রেম বা প্রকৃতি বিরুদ্ধে যৌনাচারের জন্য ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার আইন ছিল।
২০০১ সালে প্রথমবার সমপ্রেমের আইনি স্বীকৃতি দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নাজ ফাউন্ডেশন। সংবিধানের ৩৭৭ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করা হয় দিল্লি হাইকোর্টে। সমপ্রেমের পক্ষেই রায় দিয়েছিল আদালত। কিন্তু ২০১৩ সালে সেই রায় খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফের শুরু হয় আইনি লড়াই। অবশেষে ২০১৮ সালে সমপ্রেমকে স্বীকৃতি দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। এমনকী, গত বছর হায়দারাবাদে পরিবারের সম্মতি নিয়ে বিয়েও করেন এক সমপ্রেমী জুটি। কলকাতার সুপ্রিয় চক্রবর্তী আর হায়দরাবাদের অভয় দং। দু'জনে প্রেম প্রায় ৮ বছরের। কিন্তু তখন এদেশে সমপ্রেম ছিল নিষিদ্ধ, আইনের চোখে দন্ডনীয় অপরাধ। ফলে সম্পর্ক গোপন রাখতে হয়েছিল তাঁদের। সুপ্রিম কোর্টের রায় পর বিয়ে করেন সুপ্রিয় ও অভয়।