Manoj Tiwary, Ranji Trophy Final 2023: শাহবাজের রান আউটে ঘুরল ম্যাচ, নিজের ঘাড়েই দায় নিলেন মনোজ
ভেবেছিলেন এবার কাঙ্খিত ট্রফিটা হাতে তুললেই, ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। তবে ফাইনালের আগে বদলে নেন সিদ্ধান্ত। অবশ্য মনোজের ১০ হাজার পূর্ণ হতে এখনও ৯২ রান বাকি।
সব্যসাচী বাগচী
এবারও সেই চায়ের কাপ এবং ঠোঁটের তফাৎ সেই থেকেই গেল। সকাল থেকেই কলকাতার আকাশের মুখ ভার। তেমনই মুখ ভার করে থাকলেন মনোজ তিওয়ারিও (Manoj Tiwary)। চতুর্থ দিনের শুরুটা শাহবাজ আহেমদকে (Shabaz Ahmed) নিয়ে ভালোই করেছিলেন বঙ্গ অধিনায়ক। কিন্তু ক্ষণিকের ভুলে ক্রিজে জমে যাওয়া শাহবাজকে রান আউট করালেন। এরপর উনাদকাটের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে থাকা একটা ডেলিভারিকে বিচ্ছিরিভাবে খোঁচা লাগিয়ে নিজেও ফিরলেন বঙ্গ অধিনায়ক। অধিনায়কের আউট হওয়ার ধরণ দেখে তখন লক্ষ্মী রতন শুক্লার মুখে হাত দিয়ে বসে আছেন। ঘরের মাঠে সৌরাষ্ট্রের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বিপক্ষের হাতে রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy Final 2023) তুলে দিল বাংলা। একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দুই ইনিংসে মোট ১২৯ রানে ৯ উইকেট নিলেন উনাদকাট (৪৪/৩ ও ৮৫/৬)। বাকিটা তো ইতিহাস।
চতুর্থ দিন যে তাঁর ভুলেই বাংলা মানসিকভাবে আরও পিছিয়ে গিয়েছিল সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন মনোজ। কেরিয়ারে চারবার রঞ্জি ফাইনাল খেলে হার মানলেন। এরপর ভগ্ন শরীরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে মনোজ বলেন, "হ্যাঁ আমার ভুলেই শাহবাজ রান আউট হল। কতটা কষ্ট হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। শাহবাজ আউট হওয়ার পর যে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মানসিক ধাক্কা খেয়েছিলাম সেটা স্বীকার করে নিতে কোনও অসুবিধা নেই। এটাও ম্যাচ হারের অন্যতম কারণ। আমি একবারও বলছি না যে, আমি ও শাহবাজ থাকলে আমরা জিততাম। তবে একটা লড়াই ফিরিয়ে দিতে পারতাম, সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।"
ভেবেছিলেন এবার কাঙ্খিত ট্রফিটা হাতে তুললেই, ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। তবে ফাইনালের আগে বদলে নেন সিদ্ধান্ত। অবশ্য মনোজের ১০ হাজার পূর্ণ হতে এখনও ৯২ রান বাকি। তাই ৯৯০৮ রানে আটকে থাকা মনোজ এখনই থামতে চাইছেন না। তিনি বলেন, "হ্যাঁ ট্রফি জিতে খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। তবে ফাইনালের আগে দলের কোচ, সতীর্থরা ফের সিদ্ধান্ত বদলের কথা বলেছিল। বাকিটা দেখা যাক।
ঈশান পোড়েল থেকে অভিমন্যু ঈশ্বরণ কিংবা আকাশ ঘটক থেকে সুমন্ত গুপ্ত, মেগা ফাইনালে দলকে দায়িত্ব নিয়ে ডুবিয়েছেন। তরুণ তুর্কিদের পারফরম্যান্স নিয়ে মনোজ একেবারেই সন্তুষ্ট নন। যদিও তাঁদের ন্যাতানো বডি ল্যাঞ্জয়েজের পরেও বঙ্গ অধিনায়ক জনসমক্ষে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে রাজি নন। তবে স্বীকার করলেন যে, মোক্ষম ম্যাচে টস ফ্যাক্টর হওয়ার মতো ভুলেভরা দল নির্বাচনও হারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াল।
জেতার আশা অনেকটা কমে গিয়েছিল। তবুও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মনোজ ও শাহবাজ। সেই স্বপ্নে যে খোদ বঙ্গ অধিনায়ক জল ঢেলে দেবেন সেটা আর কে জানত! মনোজ প্রমাণ করে দিলেন সব স্বপ্ন সত্যি হয় না। একইসঙ্গে লজ্জার হারের পরেও মনোজের একটা দাবি সত্যি হল। মাঠে বল পড়ার আগেই তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, 'ম্যাচটা ওয়ান সাইডেড হবে।' তাই তো হল। তবে ফলাফল বাংলার পক্ষে নয় সৌরাষ্ট্রের দিকে গেল। সেটাও একপেশে ভাবে। অবশ্য সেটা স্বাভাবিক। কারণ বিপক্ষ যে সব বিভাগেই সেরা দল।