তেরো দিনের লড়াই আর আশঙ্কার প্রহর
১৬ ডিসেম্বর, ২০১২: দিল্লিতে পাশবিক গণধর্ষণের শিকার তরুণী...মুনিরকা থেকে দ্বারকা যাওয়ার জন্য একটি এসি বাসে ওঠেন মেডিক্যাল ছাত্রী ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু। বাসের মধ্যে ছয় দুষ্কৃতী তরুণীকে ধর্ষণ করে মহিপালপুরের কাছে তাঁকে ও তার বন্ধুকে বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। মেডিক্যালের ছাত্রী ওই তরুণীর বন্ধুকেও। রাতে সেই তরুণীকে অচৈতন্য অবস্থায় ভর্তি করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে।
১৬ ডিসেম্বর, ২০১২: দিল্লিতে পাশবিক গণধর্ষণের শিকার তরুণী...মুনিরকা থেকে দ্বারকা যাওয়ার জন্য একটি এসি বাসে ওঠেন মেডিক্যাল ছাত্রী ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু। বাসের মধ্যে ছয় দুষ্কৃতী তরুণীকে ধর্ষণ করে মহিপালপুরের কাছে তাঁকে ও তার বন্ধুকে বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। মেডিক্যালের ছাত্রী ওই তরুণীর বন্ধুকেও। রাতে সেই তরুণীকে অচৈতন্য অবস্থায় ভর্তি করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে
১৭ ডিসেম্বর, ২০১২-- চার দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা হল। তরুণীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ। বাদ দেওয়া হল প্রায় পুরো অন্ত্র।
১৮ ডিসেম্বর, ২০১২-দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠল। দোষীদের ফাঁসির শাস্তি দাবি করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ। এই কাণ্ডে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিস।
১৯ ডিসেম্বর, ২০১২-- লেখার মাধ্যমে হাসপাতালে কথা বললেন দিল্লির সেই নির্যাতিতা। মেডিক্যাল বুলেটিনে বলা হল, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হছে তাঁর। ২০ ডিসেম্বর, ২০১২-- গণধর্ষণ কাণ্ডে সাক্ষী দিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা, তরুণীর বন্ধুর `সেটমেন্ট`ও নেওয়া হল। দিল্লিতে প্রতিবাদের আগুন ভয়াবহ রূপ নিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাল। ২১ ডিসেম্বর, ২০১২--- ভেন্টিলেটরে নিয়ে যাওয়া হল তরুণীকে। অণুচক্রিকার পরিমাণ হ্রাস পেল। তরুণীর বন্ধু মুকেশ নামের এক অভিযুক্তকে চিহ্নিত করল। হরিয়াণা, বিহারে তল্লাসি চালিয়ে আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হল। ২২ ডিসেম্বর-- মহকুমা শাসককে বয়ান দিলেন নির্যাতিতা। রাতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করায় তরুণীকে নিয়ে চিন্তা বাড়ল। দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ল। দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে হাজার হাজার জনতা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিলেন। ২৩ ডিসেম্বর-- আন্দোলনে হিংসা ছড়াল। মারমুখি জনতার ইটের আঘাতে আহত হলেন দিল্লি পুলিসের কনস্টেবল সুভাষ তোমার। সারাদিন বমি করে গেলেন তরুণী। ওয়াশ করার জন্য অস্ত্রোপচার করা হল
২৪ ডিসেম্বর-- প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এই ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি দিলেন। মনমোহনের আশ্বাস দোষীদের দ্রুত কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। শান্তি বজায় রাখার আবেদনও জানালেন প্রধানমন্ত্রী। ফের অস্ত্রোপচার করা হল তরুণীর।
২৫ ডিসেম্বর-- সকাল থেকেই তরুণীর অবস্থার উন্নতি হল। পুরো ঘটনার বয়ানও দিলেন। দোষীদের ফাঁসির সাজা চেয়েছেন এমন খবরও প্রকাশ পেল। রাতে হঠাত্ শারীরিক অবস্থার অবনতি হল। সেপসিসের প্রাথমিক উত্সর্গ দেখা দিল, চিন্তা বাড়ল।
২৬ ডিসেম্বর--- আন্দোলন তীব্র আকার নিল যন্তরমন্তরের সামনে। নিহত পুলিস কনস্টেবল সুভাষ তোমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। সন্ধ্যা থেকেই হঠাত্ই সফদরজং হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো হল। নিয়মমাফিক কোনও মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করা হল না, শুরু হল জল্পনা।
তিনবার হদরোগে আক্রান্ত হলেন তরুণী.. রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হল।
২৭ ডিসেম্বর-- দিল্লিতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হল... এ দিকে সিঙ্গাপুরে সেই তরুণীর অবস্থা আরও খারাপ হল।
২৮ ডিসেম্বর-- তরুণীর ৭টি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিল.. মাল্টি অরগ্যান ফেলিওরের লক্ষণও দেখা দিল। অণুচক্রিকার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেল। গোটা দেশ আশঙ্কায় ডুবে।
২৯ ডিসেম্বর-- রাত ২.১৫ টা নাগাদ লড়াই শেষ হল... মারা গেলেন সেই তরুণী। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানানো হল মৃত্যুর খবর। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং শোক জানালেন।