সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলায় সুপ্রিম কোর্টের কড়া ধমক NRC-র ২ শীর্ষ আধিকারিককে
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে হাজেলাকে প্রশ্ন করা হয়, কোন ক্ষমতাবলে তিনি প্রকাশ্যে ওই মন্তব্য করেছেন। ওই মন্তব্যের জন্য আপনাদের জেলে পাঠানো উচিত।

নিজস্ব প্রতিবেদন: অসমের নাগরিকপঞ্জী নিয়ে সংবাদমাধ্যম মুখ খোলায় সুপ্রিম কোর্টে কড়া ধমক খেলেন এনআরসি-র কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা ও রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশ। এমনকি তাঁদের জেলে পাঠানো উচিত বলেও মন্তব্য করল ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত।
সংবাদমাধ্যমে কী বলেছিলেন হাজেলা? অসমের নাগরিকপঞ্জী প্রকাশের পর এনিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক যখন তুঙ্গে সেসময় বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন তিনি। একটি সর্বাভারতীয় দৈনিকে সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে হাজেলা বলেন, যেসব মানুষের নাম নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ পড়েছে তারা নতুন করে নথি দিয়ে তালিকায় নাম তুলতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, ওই তালিকা এখনও প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। ৪০ লাখ মানুষ অনুপ্রবেশকারী হতে পারে না।
আরও পড়ুন-কেন্দ্র মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করুক, নইলে আমরা ক্ষমতায় এসে করব, বললেন রাহুল
সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতেই ওই নাগরিকপঞ্জীর কাজ চলছে। বিরোধীরা এনিয়ে প্রবল হইচই করলেও সরকার বলার চেষ্টা করে আসছে যে ওই নাগরিকপঞ্জী একটি খসড়া মাত্র। তবে সেকথা মাথায় নিচ্ছে না বিরোধীরা।
নাগরিকপঞ্জীর দায়িত্বে থাকা একজন আধিকারিকের মন্তব্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হতেই প্রবল ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে হাজেলাকে প্রশ্ন করা হয়, কোন ক্ষমতাবলে তিনি প্রকাশ্যে ওই মন্তব্য করেছেন। ওই মন্তব্যের জন্য আপনাদের জেলে পাঠানো উচিত।
এদিন হাজেলা ও শৈলেশকে বিচারপতি বলেন, ‘ভুলে যবেন না আপনারা আদালত নিযুক্ত আধিকারিক। আপনাদের কাজ হল নাগরিকপঞ্জী তৈরি করা, সংবাদমাধ্যমের কাছে যাওয়া নয়।’ সংবাদপত্রে হাজেলার সাক্ষাতকারের একটি কপিও তুলে ধরে দেখান বিচারক। ভবিষ্যতে সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন বিচারক।
আরও পড়ুন-লাগাতার কুপ্রস্তাব, প্রকাশ্যে গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাল কাউন্সিলর
শীর্ষ আদালতে তীব্র ধমক খেলে ক্ষমা চেয়ে নেন হাজেলা। তবে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেই তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছিলেন।
নাগরিকপঞ্জী থেকে ৪০ লাখ মানুষ বাদ পড়ার পর হাজেলার মন্তব্য তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করে দেয়। বিরোধীরা অভিযোগ করে, সরকার অবৈধ নাগরিক তাড়ানোর অছিলায় মুসলিম ও বাঙালিদের দেশছাড়া করার চেষ্টা করছে। তবে এনিয়ে খোদ রাজনাথ সিং ও বিজেপি সভাপতি বারবার বলার চেষ্টা করেন নাগরিকপঞ্জী একটি খসড়া তালিকা মাত্র। কোনও ভারতীয় নাগরিকের নাম নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ যাবে না। বিরোধীরা অবশ্য সরকারের কথা কানেই তোলেনি।