লোকপালের ভবিষ্যত্
লোকপাল বিলের ভবিষ্যত্ আপাতত নির্ভর করছে রাজ্যসভায় ভোটাভুটির ওপর। কিন্তু রাজ্যসভায় ইউপিএ সরকারের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে সংখ্যার সমীকরণ চিন্তায় রেখেছে ইউপিএকে।
লোকপাল বিলের ভবিষ্যত্ আপাতত নির্ভর করছে রাজ্যসভায় ভোটাভুটির ওপর। কিন্তু রাজ্যসভায় ইউপিএ সরকারের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে সংখ্যার সমীকরণ চিন্তায় রেখেছে ইউপিএকে। রাজ্যসভায় সংখ্যাধিক্যের জেরে লোকসভায় খারিজ হওয়া সংশোধনীগুলি পাশ করিয়ে নিতে পারে বিরোধীরা, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। যদি সেটাই হয় তাহলে সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে সরকারকে আবার পাশ করাতে হবে লোকপাল বিল। লোকসভায় ইতিমধ্যেই ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে গেছে লোকপাল এবং লোকায়ুক্ত বিল। এবারে এই বিল রাজ্য সভায় ভোটাভুটির জন্য পেশ করা হবে। আর এখানেই সংখ্যার প্রশ্নে আটকে লোকপাল বিলের ভবিষ্যত। এই মুহুর্তে রাজ্যসভায় ইউপিএর সাংসদ সংখ্যা নিরানব্বই। বিরোধীদের একশ একত্রিশ। নির্দল এবং মনোনীত সাংসদের সংখ্যা চোদ্দ জন। পরিস্থিতি যা তাতে নির্দল এবং মনোনীত সাংসদেরা সরকারের পক্ষে দাঁড়াবেন তা এক প্রকার নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে বিলের সমর্থনে সাংসদ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে একশ তেরো। কিন্তু রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করানোর জন্য প্রয়োজন একশো তেইশজন সাংসদের সমর্থন। এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বিএসপি এবং এসপি সাংসদদের ভূমিকা। এই দুই দলের তেইশ জন সাংসদ যদি লোকসভার মতো রাজ্যসভা থেকেও ওয়াকআউট করেন তবে বিরোধী বেঞ্চের শক্তি একশো একত্রিশ থেকে কমে একশো আটে দাঁড়াবে। একমাত্র তবেই রাজ্যসভায় লোকপাল বিল পাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু যেহেতু রাজ্যসভায় বিরোধীরা সংখ্যার বিচারে যথেষ্ট শক্তিশালী, তাই তাদের আনা সংশোধনীগুলো এক্ষেত্রে গৃহীতি হওয়ার সম্ভাবনা একপ্রকার পাকা। তখনই দেখা দেবে নতুন সমস্যা। কারণ তেমনটা হলে লোকসভায় পাশ হওয়া বিল এবং রাজ্যসভায় পাশ হওয়া বিলের মধ্যে বেশকিছু ফারাক তৈরি হবে।
এই জটিল পরিস্থিতি থেকে বেরোনর পথও বলা রয়েছে সংবিধানে। সেক্ষেত্রে দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশন ডাকবেন রাষ্ট্রপতি। সেখানেই সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভোটে বিলটিকে পাস করাতে হবে। বৃহস্পতিবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সেক্ষেত্রে এই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে অপেক্ষা করতে হবে বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত।