মহাশূণ্যের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ছবি এবার বিজ্ঞানীদের হাতের মুঠোয়!
অজানাকে জানার ইচ্ছে মানুষের সবসময়ের। যা কিছু রহস্যময়, তার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ এড়াতে পারে না কেউ। মহাকাশ এমনই এক ঠিকানা, যার প্রতি পরতে লুকিয়ে রহস্য। যদি বলি, তারার মৃত্যু দেখেছেন কখনও? দেখেছেন তার কেন্দ্র? কী হয় আগে-পরে! যুগান্তকারী সেই ছবিই এবার বিজ্ঞানীদের হাতের মুঠোয়।
![মহাশূণ্যের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ছবি এবার বিজ্ঞানীদের হাতের মুঠোয়! মহাশূণ্যের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ছবি এবার বিজ্ঞানীদের হাতের মুঠোয়!](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2016/07/09/60177-nasa-9-7-16.jpg)
ওয়েব ডেস্ক: অজানাকে জানার ইচ্ছে মানুষের সবসময়ের। যা কিছু রহস্যময়, তার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ এড়াতে পারে না কেউ। মহাকাশ এমনই এক ঠিকানা, যার প্রতি পরতে লুকিয়ে রহস্য। যদি বলি, তারার মৃত্যু দেখেছেন কখনও? দেখেছেন তার কেন্দ্র? কী হয় আগে-পরে! যুগান্তকারী সেই ছবিই এবার বিজ্ঞানীদের হাতের মুঠোয়।
ঝকমকে রাতের আকাশ। এদেরই জন্য। বহু আলোকবর্ষ দূরে তারাদের সংসার। রহস্যে ঘেরা। এক, দুই, তিন, চার। ছোটবেলায় এমন করে তারা গোনার চেষ্টা করেনি এমন মানুষ কম। রাতের ক্যানভাসে, যেন একেকটি হীরে।
মহাকাশের, মহাশূন্যের রহস্যের খোঁজে যারা দিনরাত এক করছেন, তাঁদের আবার অন্য ভাবনা। একের পর এক স্যাটেলাইট ছুটছে। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কী ঘটছে, কেন ঘটছে! সেই কাজেই বিজ্ঞানীদের বহুদিনের নজর ক্র্যাব নেবুলার দিকে। সুপারনোভা। অর্থাত তারার মৃত্যু। কোটি কোটি বছর আগে মৃত্যু হয়েছে যে নক্ষত্রের। ধোঁয়ার মতো যা ভেসে রয়েছে মহাশূন্যে। তার কী অপরূপ রূপ! মৃত্যুও এত সুন্দর!
এককথায় ইতিহাস সৃষ্টি। এ ছবি, আগে কেউ কোনওদিন দেখেনি। নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ক্যামেরাবন্দি করল সেই মহাজাগতিক দৃশ্য। নক্ষত্রে বিস্ফোরণ। ছড়াচ্ছে রেডিয়েশন। চারপাশে ম্যাগনেটিক ফিল্ড। মাইলের পর মাইল যার বিস্তৃতি। নিজের কেন্দ্রেই এটি ঘুরে চলেছে, প্রতি সেকেন্ডে ৩০ বার। নেবুলার মধ্যে অবস্থান দ্রুত গতির নিউট্রন স্টারের। নক্ষত্রের সেই কেন্দ্র, যা শেষের পরও শেষ হয়নি। ভর সূর্যের সমান। কিন্তু আয়তনে ছোট। পৃথিবী থেকে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান ক্র্যাব নেবুলার। ঠিকানা, টরাস নক্ষত্রপুঞ্জ।
আরও পড়ুন এই ২ দিন ব্যাঙ্ক ধর্মঘট থাকবে!
তবে এ ছবি যে কোনও তারার ধ্বংসাবশেষের, তা বিশ্বাস করা সত্যিই কষ্টের। এ তো রামধনুর সাত রং। মহাকাশের অতল অন্ধকারকেও যা রাঙিয়ে দিয়েছে। এতটাই দ্রুত এর গতি যে এতদিন কোনও ক্যামেরায় বন্দি করা যায়নি। তবে এবার সেই অসম্ভবকে সম্ভব করল নাসার হাবল টেলিস্কোপ। সেই পথেও কম কাঁটা ছিল না। ১০ বছরের ব্যবধানে এই মৃত তারাটির তিন-তিনটি হাই রেসলিউশন ছবি তোলে হাবল টেলিস্কোপ। সবগুলিকে একজায়গায় করতেই, ইউরেকা!! সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস। এটাই অবশ্য প্রথম বার নয়, আগেও ইতিহাস গড়েছে ক্র্যাব নেবুলা। সুপারনোভার বিস্ফোরণে যে গ্যাসপুঞ্জ তৈরি হয়, এধরনের কোনও ঘটনার দলিল মানবজাতির ইতিহাসে এটাই ছিল প্রথম।
ক্যালেন্ডারে সাল তখন ১ হাজার ৪৫। জাপান ও চিনের কিছু মহাকাশবিজ্ঞানীর নজরে আসে, আকাশে নতুন এক নক্ষত্রের উপস্থিতি। উজ্জ্বলতায় চাঁদের সমান। এরপরই বিজ্ঞানী মহলে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কোথা থেকে এল, কী এটি? সেই প্রথমবার জানা যায়, তারার মৃত্যুর তত্ত্ব।
পরের কয়েক বছরে ধীরে ধীরে কমেছে সেই তারার ঔজ্জ্বল্য। একসময় যা চিরতরে মিলিয়েও যায় সাধারণের চোখে। তবে হারিয়ে সে যায়নি। হাবল টেলিস্কোপের শ্যেনদৃষ্টি নতুন করে ইতিহাসের পাতায় তুলে দিল এই সুপারনোভাকে।