Jesus Christ: প্রকাশ্যে এল যিশুখ্রিস্টের নাম, যেটি আপনি ভাবছেন সেটি নয়...

Jesus Christ: বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মানুষের উপাস্য দেবতা তিনি। তিনিই খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক। যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিশ্বের সাহিত্য, সঙ্গীত ও চিত্রশিল্পকে প্রভাবিত করে এসেছেন তিনি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন ভিন্ন নামে তিনি পরিচিত তাঁকে কোথাও বলে 'ব্লু আইড বয়'...

Updated By: Jan 21, 2025, 04:39 PM IST
Jesus Christ: প্রকাশ্যে এল যিশুখ্রিস্টের নাম, যেটি আপনি ভাবছেন সেটি নয়...

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যিশুখ্রিস্টের কথা বললে প্রথমেই আমাদের মাথায় যা আসে লম্বা বাদামি চুল, হালকা দাড়ি, নীল চোখ, মাথায় কাঁটার মুকুট। তাঁকে জনসমক্ষে নবরূপে পরিচয় করাবার প্রয়োজন পড়ে না। বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মানুষের উপাস্য দেবতা তিনি। তিনিই খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক। যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিশ্বের সাহিত্য, সঙ্গীত ও চিত্রশিল্পকে প্রভাবিত করে এসেছেন তিনি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন ভিন্ন নামে তিনি পরিচিত তাঁকে কোথাও বলে 'ব্লু আইড বয়', কোথাও তাঁর পরিচয় 'জিসাস', কোথাও 'ইসাস', 'যিশু' বা 'জোসুয়া' নামে তিনি সকলের কাছে পরিচিত। বাইবেলের একাধিক সংস্করণে, বিশেষত নিউ টেস্টামেন্টে তাঁকে ডাকা হয়েছে 'হোশিয়া' নামে। কিন্তু কোনটি আসল নাম তাঁর? সেই নিয়েই আজকের এই ছোট্ট প্রতিবেদন। 

আরও পড়ুন: Apiculture: হু হু করে কমছে মৌমাছির সংখ্যা, ফুলেই লুকিয়ে ঘাতক বিষ!

যিশুখ্রিস্টের আসল নাম কী! প্রশ্নটা শুনে অবাক হওয়াই স্বাভাবিক। যিনিই যিশু, তিনিই তো জিসাস উত্তরে এটাই প্রথমে মাথায় আসে। আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও ভাষার উপর ভিত্তি করেই তাঁর নাম বদলে গেছে নানান প্রান্তে। তবে এই প্রশ্নকে তুচ্ছ মনে হলেও, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছে যুগ যুগ ধরে সৃষ্টি হয়েছে নানান বিতর্ক। অনেকেরই মত, 'জেসাস' বা 'জিসাস' (Jesus) নামটা ইউরোপীয়দের দেওয়া। আবার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের একাংশের মতে 'জেসাস' বা 'জিসাস'-এর নামে প্রার্থনা করে হলে ভুল ব্যক্তির উপাসনা করা হয়। তাঁদের কথায়, যিশুখ্রিস্টে আসল নাম হল 'জোশুয়া' (Joshua)। বিশেষ করে মেসিয়ানিক ইহুদিরা এই বিশেষ তত্ত্বে বিশ্বাসী। আজ থেকে প্রায় দুশো বছর আগে, এই বিতর্কের সমাধান করতেই শুরু হয়েছিল যিশুর প্রকৃত নামের অনুসন্ধান বা গবেষণা। এই নিয়ে গবেষণা চলছে আজও। একাধিক ধর্মতাত্ত্বিকদের মতে, যিশুর নামের সঙ্গে ব্যুৎপত্তিগত ও ঐতিহাসিক পটভূমি জড়িয়ে রয়েছে। ব্যুৎপত্তিগত দিক থেকে দেখতে গেলে 'জিসাস' বা 'জেসাস' কথাটি এসেছে হিব্রু শব্দ 'জোশুয়া' থেকে, যার অর্থ 'দ্য সন অফ নান' অর্থাৎ সন্ন্যাসিনীর সন্তান। আবার 'জোশুয়া' বলতে বোঝায় 'জেসন অফ জোসেফ' বা জোসেফের সন্তান। 'ইজরায়েলের মহান নেতা' বা 'মুক্তির পথপ্রদর্শক'-এর অর্থও হল হিব্রু ভাষায় 'জোশুয়া', বাইবেলেও উল্লেখিত রয়েছে 'জোশুয়া সাকসিডেড মোজেস'। অর্থাৎ, মোজেসের উত্তরসূরি হলেন যিশু। নিউ টেস্টামেন্টের কিছু কিছু জায়গায় 'জোশুয়া'-কে লেখা হয়েছে 'হোশেয়া' (Hoshua) হিসাবেও। এক্ষেত্রেও এর অর্থ একই। তবে হিব্রু ভাষায় 'Jehoshua' শব্দের বিবর্তনই এই তারতম্যের মূল কারণ। অন্যদিকে, 'জেসাস' একটি গ্রিক শব্দ। গ্রিক ভাষায় এই কথাটির অর্থ করলে দাঁড়ায় 'সন অ্যান্ড সার্ভেন্ট অফ গড' অর্থাৎ, ঈশ্বরের সন্তান। 

আরও পড়ুন: Indian Painting: মধুবনী থেকে রাজস্থানি! জেনে নিন ছবির বিপুল বিশ্বে ভারতের রং-বিপ্লবের ইতিহাস...

ভাষাতাত্ত্বিকদের মতে, হিব্রু থেকে গ্রিক ভাষায় বাইবেল অনুবাদের সময়ই বদলে গিয়েছিল 'যোশুয়া' শব্দটি। এক্ষেত্রে তাঁর নামকে প্রাধান্য না দিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর মাহাত্ম্যকে কারণ, ততদিনে যিশু পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে। 'জিসাস' কথাটি ব্যবহার করেছিলেন গ্রিকরা। গ্রিক দেবতা 'জিউস'-এর প্রভাবে তাঁর নামকরণ হয়নি বলে জানা যাচ্ছে। আবার পরবর্তীকালে 'জিসাস' বা 'জেসাস' থেকে 'ইসাস' কিংবা বাঙালির মুখে মুখে উচ্চারিত হয়েছে 'যিশু' নামটি।  'জিসাস' যে গ্রিক দেবতা 'জিউস' নন, এই বিতর্কের ইতি টানতেই পরবর্তী কালে চালু হয়েছিল 'জিসাস অফ নাজারেথ' শব্দটি। বিতর্ক এখানেও থেমে থাকেনি। 'যোশুয়া' নামটি কার দেওয়া, তা নিয়েই শুরু হয়েছিল চর্চা; কারোর মতো তাঁর মাই এই নাম রেখেছিলেন তাঁর। প্রথম এবং দ্বিতীয় শতাব্দীর ইজরায়েলে 'যোশুয়া' নামটি ছিল অত্যন্ত সাধারণ একটি নাম। তবে অনেকেরই দাবি খোদ ঈশ্বরের স্বর্গদূত তিনি, তাই এই নামকরণও করেছিলেন তিনি নিজেই। যিশুর নাম অনুকরণ করেই পরবর্তিকালে এই নামটি প্রচলিত হয়ে ওঠে গোটা দেশ জুড়ে, ঠিক যেমন তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা মিললেও 'জেসাস' ও 'যোশুয়া'-র দ্বন্দ্ব কাটেনি, তেমনই এই বিতর্কের ইতি পড়েনি আজও। যখন নিউ টেস্টামেন্ট ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল, তখন 'লেসাস' কে 'লেসুস' হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৭ শতকের মধ্যে, 'জে' ধ্বনি প্রচলিত হয়ে ওঠে এবং 'লেসুস' হয়ে ওঠে 'যিশু', যার ফলে আধুনিক দিনের নামের জন্ম হয়। নাম পরিবর্তন যেমন আমাদের অবাক করে তেমনই আর একটি তথ্য জানলে সকলে চমকে যাবেন, তা হল যিশুখ্রিস্টের জন্ম আসলে ২৫ ডিসেম্বর নয়। পোপ জুলিয়াস বলেছিলেন, তিনি কেবল চতুর্থ শতাব্দীটিকে তারিখ হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। 

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.