জঙ্গিপুর উপনির্বাচন ঘিরে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট কাজিয়া তুঙ্গে
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর লোকসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফের জোট জটিলতা কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে দেওয়া আসনে কংগ্রেস চায় তাদের সমর্থন জানাক তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, জঙ্গিপুর আসনে আলাদা প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলও। ফলে শেষ পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতির এই জঙ্গিপুর আসনটিতে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে কি না তা নিয়েই এখন রাজ্য রাজনীতি সরগরম।
মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর লোকসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়াকে কেন্দ্র করে ফের জোট জটিলতা কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেড়ে দেওয়া আসনে কংগ্রেস চায় তাদের সমর্থন জানাক তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, জঙ্গিপুর আসনে আলাদা প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলও। ফলে শেষ পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতির এই জঙ্গিপুর আসনটিতে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে কি না তা নিয়েই এখন রাজ্য রাজনীতি সরগরম।
জঙ্গিপুর কেন্দ্রটি থেকে গত দুবার নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু রাইসিনা হিলের বাসিন্দা হওয়ার জন্য তাঁকে ছাড়তে হয়েছে এই আসনটি। প্রণব বাবুর ছেড়ে যাওয়া আসনটিকে স্বাভাবিক ভাবেই নিজেদের দখলেই রাখতে চাইছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের তরফে প্রণবপুত্র অভিজিত্ মুখোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে বাকি সবাইকে বেশ খানিকটা পিছনে ফেলে দিয়েছেন। জেলা সভাপতি এবং কংগ্রেস এর দাপুটে সংসদ অধীর চৌধুরীকে অনেকটা রাজীও করে ফেলেছেন তিনি। তবে এরই পাশাপাশি দৌড়ে উঠে আসছে রাষ্ট্রপতির আপ্ত সহায়ক প্রদ্যুত্ গুহর নামও। তবে কংগ্রেসকে এই আসনটি ধরে রাখতে গেলে চাই তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন। কিন্তু অনেক আগেই প্রদেশ কংগ্রেসের সাথে কোন আসন সমঝোতায় তৃণমূল কংগ্রেস যাবেনা বলে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের বিশ্বাস এটা মুখ্যমন্ত্রীর রাগের কথা। আর তাছাড়া একগুচ্ছ কেলেঙ্কারির চাপে জর্জরিত কেন্দ্র এই মূহুর্তে বৃহত্তম জোট সঙ্গী তৃণমূল কে ক্ষেপিয়ে তোলার কোন ঝুঁকিই নিতে চায়না কেন্দ্র। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর মান ভাঙাতে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে দিল্লী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে জোটে যাওয়ার কোন সদোর্থক ইঙ্গিত মেলেনি তৃণমূল শিবিরের তরফ থেকে। এমনকি পৃথক ভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও শুরু করে দিয়েছে তারা। তবে এর সঙ্গেই দু`টি সমীকরণও উঠে আসছে। প্রথম সমীকরণ অনুযায়ী, অভিজিত্ মুখোপাধ্যায় যদি কংগ্রেসের প্রার্থী হন তাহলে নলহাটি বিধানসভার কেন্দ্রটিতেও উপনির্বাচন হবে। সেক্ষেত্রে জঙ্গিপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না। কিন্তু নলহাটি কেন্দ্রটি তৃণমূলকে ছেড়ে দিতে হবে কংগ্রেসকে। আবার অন্য সমীকরণ অনুযায়ী কংগ্রেসের তরফ থেকে অভিজিত্ মুখোপাধ্যায় প্রার্থী না হলে নলহাটি উপনির্বাচনের কোন প্রশ্নই উঠবে না। সেক্ষেত্রে জঙ্গিপুর কেন্দ্রটিতে জেতার সম্ভাবনা নিশ্চিত করতে তৃণমূলের সমর্থন প্রয়োজন হয়ে পড়বে কংগ্রেসের।
আপাতত এই দুই সমীকরণকে পাশে রেখেই দুই শিবির অত্যন্ত গোপনে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে রাজনৈতিক সূত্রে খবর। কিন্তু অন্যদিকে আর একটি বিষয়ও উঠে আসছে। জঙ্গিপুর কেন্দ্রে বামেরা কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী। এর আগে এখানে বহুবার জিতেছে তারা। যদি ত্রিমুখী লড়াইয়ের ফলে শেষপর্যন্ত বামেরা কোনওভাবে জয়ী হয় সেক্ষেত্রে আখেরে কিন্তু বড় ধাক্কা খেতে হবে তৃণমূল শিবিরকেই। কিছুটা হলেও প্রাসঙ্গিকতা হারাতে পারে তারা। তবে এতো কিছুর মধ্যেও রাষ্ট্রপতি নিজের ছেলেকে সাংসদ করতে শেষ তুরুপের তাসটা কি খেলবেন কিনা এখন প্রশ্ন তা নিয়েই।