পিকে আসায় দলের ক্ষতি, টাকা কে দিচ্ছে? এবার বেসুরো TMC বিধায়ক জটু লাহিড়ি
প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে এবার সরব হলেন হাওড়ার শিবপুর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক জটু লাহিড়ি।

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন আর এক তৃণমূল বিধায়ক। হাওড়ার শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ির মন্তব্য, পিকে আসার পর দলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তিনি নিজে প্রথম প্রথম কথা শুনেছেন। তারপর আর নির্দেশ শোনেননি। দলনেত্রীকে বলেও লাভ হয়নি বলে দাবি তৃণমূল বিধায়কের।
প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে এবার সরব হলেন জটু লাহিড়ি। তাঁর কথায়,''হঠাৎ শুনলাম দলকে পরিচালনার জন্য ভোট বিশেষজ্ঞ আসছেন। পিকে না কে কী নাম! মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর যা ক্ষমতা আছে, বাইরের কাউকে দরকার নেই। মানুষ বিশ্বাস করেছে, এ আমাদের অধিকার রক্ষা করবে। বাইরে থেকে কাউকে আনার প্রয়োজন নেই। আমার নিজের ধারণা, পিকে-কে আসার পর থেকে আমাদের দলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমি নিজেই অপমানিত বোধ করেছি। একটা ইয়ং ছেলে এসে বলছে, আপনাকে এই মিছিলটা করতে হবে। তাঁর সঙ্গে আসলেন এক ভদ্রমহিলাও। তিনি নাকি জেলার কী! সে এসে বলল, অমুক করতে হবে, মিছিল করতে হবে, রাত জাগতে হবে। প্রথম প্রথম করেছি। টিকিয়াপাড়ায় একটা বাড়িতে ছিলাম। আস্তে আস্তে মনে হচ্ছে, এটা ঠিক নয়।''
টিম পিকে-র সঙ্গে কাজ করে তিনি অপমানিত বোধ করছেন বলেও জানিয়েছেন প্রবীণ বিধায়ক। বলেন,''মমতা ব্যানার্জিকে দেখে সারা বাংলার মানুষ মনে করেন, ইনি পারবেন। বাইরে থেকে ভাড়া করে আনার দরকার নেই। বিনা পয়সায় তো করছে না। যে ছেলেটা আসত ৩০ হাজার টাকা মাইনে পেত। ভদ্রমহিলা আসতেন, তিনি ৪৫ হাজার টাকা পান। এসব টাকা কে দিচ্ছে? বাংলা জুড়ে কত লোক এভাবে টাকা-পয়সা পাচ্ছে! মমতা একাই একশো। এসব কাউকে দরকার ছিল না। আমি নিজে অপমানিত হয়েছি। মাস দু'য়েক আগে বলেছে, তিনটে যাত্রা করতে হবে। তুমি বলার কে? সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শুক্লা আছেন। তার বাইরে কারও নির্দেশ শুনব না। আমার কাছে আর আসবে না।''
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হাওড়ার পুরসভার মেয়রের পদ থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জটু লাহিড়ি। তাঁর ক্ষোভ,''২০১৩ সালে আমায় বলা হল, কোনও বিধায়ক কাউন্সিলর হতে পারবেন না। হাওড়া পুরসভার খুঁটিনাটি আমার চেয়ে বেশি দ্বিতীয় কেউ জানে না। ২০১৩ সালে এই মুকুল রায় বলেছিলেন, দিদি বলেছেন কোনও বিধায়ক কাউন্সিলর হবেন না। অথচ কলকাতা পুরসভায় বিধায়কই দাঁড়ালেন। সল্টলেকেও তাই হল। আমার বেলাতেই খালি হল না। অতএব আমাকে বাদ দেওয়ার জন্যই এটা হয়েছিল। আমি থাকলে মেয়রের দাবিদার হয়ে যাব। নিশ্চিতভাবে পরিচালন ব্যবস্থায় গলদ হয়েছিল। অথচ কলকাতা ও সল্টলেকে এটা হল না। এই তো অবস্থা!''
জটু লাহিড়ির মন্তব্য নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার আগে পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর খাসতালুকে জনসভা মমতার, হাজির থাকবেন পূর্ব মেদিনীপুরের বিধায়করাও