পুজোর আগেই চূড়ান্ত চার্জশিট! সারদা মামলার সাক্ষী IPS-সহ প্রাক্তন প্রভাশালী তৃণমূল নেতা
সন্দেহের তালিকায় ছিল বারো জন প্রভাবশালীর নাম। তাদের মধ্যে ৬ জনের নাম থাকছে চার্জশিটে। আইকোর, প্রয়াগ নিয়েও ব্যাপক নড়াচড়া। এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর CBI সূত্রে।

নিজস্ব প্রতিবেদন: একুশের ভোটের আগে আবারও সারদা মামলা নিয়ে নড়াচড়া। পুজোর আগেই চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেওয়ার নির্দেশ। নির্দেশ CBI সদর দফতরের। প্রাক্তন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। বর্তমান এক IPS অফিসারকেও গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী করা হচ্ছে। নতুন ছয় প্রভাবশালী হেভিওয়েটের নাম থাকছে চার্জশিটে। নাম থাকছে গুরুত্বপূর্ণ এক IPS অফিসারের । সন্দেহের তালিকায় ছিল বারো জন প্রভাবশালীর নাম। তাদের মধ্যে ৬ জনের নাম থাকছে চার্জশিটে। আইকোর, প্রয়াগ নিয়েও ব্যাপক নড়াচড়া। এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর CBI সূত্রে।
সারদা। বাংলায় চিটফান্ড কেলেঙ্কারির অভিধানে এক অন্যতম বিতর্কিত ও বহুচর্চিত নাম। সারদা গ্রুপের পাহাড় সমান সম্পত্তি ও ব্যবসার গোটাটাই ছিল আম জনতার লগ্নি করা টাকায়। ২০১০ থেকে ২০১২। মাত্র দু'বছরেই ফুলফেঁপে ওঠে সারদার ব্যবসা।
২০১২-তে সেবির তরফ থেকে সমস্ত ব্যবসা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরেও বাড়তে থাকে ব্যবসার বহর। ২০১৩-তে সারদার ব্যবসা সুবিশাল পর্বতে পরিণত হয়। আচমকা ধ্বস নামে সে বছরই। প্রায় ১৭ লক্ষ লগ্নিকারীর ২৪৬০ কোটি টাকা এক ঝটকায় অন্ধকার চোরাবালিতে হারিয়ে যায়।
এক নজরে সারদা মামলার গতি-প্রকৃতি:
** এপ্রিল, ২০১৪- সারদা গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় ৩৮৫টি এফআইআর দায়ের হয়।
** ২৮৮টি চার্জশিট ফাইল করে SIT।
** ১১ জনকে গ্রেফতার করে CBI, SIT।
** ২২৪ টি স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়
গ্রেফতার হয়েছেন যাঁরা-
২৩ নভেম্বর, ২০১৩- গ্রেফতার কুণাল ঘোষ
২১ অগাস্ট, ২০১৪- গ্রেফতার দেবব্রত সরকার
৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪- গ্রেফতার রজত মজুমদার
২১ নভেম্বর, ২০১৪- গ্রেফতার সৃঞ্জয় বোস
১২ ডিসেম্বর, ২০১৪- গ্রেফতার মদন মিত্র
২০১৩ অগাস্ট মাস। ততক্ষণে রাজ্য সরকার গ্রেফতার করে ফেলেছে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখার্জিকে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনের মাধ্যমে টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু করলেও তা আদালতের নির্দেশে বন্ধ করতে হয়। ২০১৪ সালের মে মাসে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদা সহ ৪৪ টি আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধে একযোগে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বাংলা ছাড়াও, তদন্তের জাল ছড়িয়ে পড়ে ওড়িশা, অসম, ঝাড়খণ্ড ও ত্রিপুরাতেও। শুরু হয় তীব্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। নাম জড়ায় একের পর তাবড় নেতা-মন্ত্রীদেরও। কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিস। গ্রেফতারি শুরু করে CBI-ও।
আরও পড়ুন- অক্সিজেন মাস্ক খুলে ওয়ার্ড থেকে ৫ ঘণ্টা উধাও করোনা রোগী, জানতেই পারল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
মামলা চলেছে। নাম জড়িয়েছে অভিনয় জগতের তারকা থেকে পোড় খাওয়া, প্রভাবশালী পুলিসকর্তার। উঠে এসেছে ক্রীড়াজগতের বিশিষ্টদের নামও। একাধিক গ্রেফতারি হয়েছে, জামিনও হয়েছে। মামলার ফয়সলা হয়নি। রাজনীতির গনগনে আঁচে প্রতি ভোটেই ইস্যু হয়েছে সারদা-দুর্নীতি। ভোটের পর ভোট মিটেছে, কিন্তু লগ্নি করা টাকা এখনও ফেরত পাননি লাখো লাখো মানুষ। ফের একবার ধীরে ধীরে গুরুত্ব পাচ্ছে, শিরোনামে আসছে সারদা চিটফান্ড স্ক্যাম। সূত্রের খবর, এবার চূড়ান্ত চার্জশিট। চার্জশিটের প্রস্তুতির জল্পনাই বলে দিচ্ছে সামনে যে ভোট আসছে! একুশের বিধানসভা ভোট।