Baruipur Ex-Navy Officer Murder: বারুইপুর খুনে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য, কোনও অনুতাপ নেই মা-ছেলের মধ্যে
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, খুনের পর উজ্জ্বলের দেহাংশ লোপাটের সময়ে মোবাইল সঙ্গে নিয়ে যায়নি রাজু। উদ্দেশ্য ছিল তাদের লোকশন যাতে খুঁজে না পাওয়া যায়
বিক্রম দাস: বারুইপুরে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর খুনের তদন্তে তার স্ত্রী ও ছেলেকে জেরা করে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুন করা এবং দেহ ৬ টুকরো করে তা লোপাট করার পরও কোনও অনুতাপ নেই মা ও ছেলের মধ্য়ে। এমনটাই খবর পুলিস সূত্রে। জেরায় মৃত নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীর ছেলে রাজু জানিয়েছে, বাবার অত্যাচার সহ্য করতে পারছিলাম না। তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, খুনে পর মোবাইল থেকে বহু ছবি ডিলিট করে দিয়েছে রাজু। কেন ওইসব ছবি মুছে ফেলা হয়েছে তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিস।
আরও পড়ুন-'ঠেলায় পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে', মমতার মোদী সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কটাক্ষ দিলীপের
খুনের কারণের কথা স্বীকার করেছে দুই অভিযুক্ত। পাশাপাশি খুনের পর দেহ টুকরো করে ফেলার পেছনে যে দিল্লি খুনের মোডাস অপারেন্ডি ছিল তাও পুলিসকে জানিয়ে দুজন। রাজু যে তারা বাবার দেহ কেটে টুকরো করেছে তাও সে স্বীকার করেছে। কিন্তু এখনও কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিস মনে করছে মা ও ছেলের মধ্যে একটা বোঝাপাড়া রয়েছে। তারা পুলিসকে কী বলবে তা আগে থেকেই তারা ঠিক করে রেখেছিল। ফলে তাদের বয়ানের মধ্যে বেশকিছু ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে। রাজু তার ফোন থেকে ছবি ও কল লগ ডিলিট করেছিল কেন, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, খুনের পর উজ্জ্বলের দেহাংশ লোপাটের সময়ে মোবাইল সঙ্গে নিয়ে যায়নি রাজু। উদ্দেশ্য ছিল তাদের লোকশন যাতে খুঁজে না পাওয়া যায়। খুনের পর রাজু তার মায়ের সঙ্গে যেসব কথা হয় তার কল রেকর্ড ডিলিট করে দেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠছে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছবি থাকাতেই কি তা ডিলিট করতে বাধ্য় হয়েছিল রাজু?
খুনের পর উজ্জ্বলের দেহ ৬ টুকরো করা হয়। তার মধ্যে ৪টি টুকরো ইতিমধ্যেই উদ্ধার করেছে পুলিস। বাকী দুটি অংশ কোথায় ফেলা হয়েছে তা খুঁজে দেখতে জোরদার তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি পুকুরে খোঁজ চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, পুরসভার একটি জঙ্গলেও তল্লাশি চলছে। রাজুর দাবি যে করাত দিয়ে সে বাবার দেহ কেটেছিল তা সে পুকুরে ফেলেছিল। কিন্তু সেটি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কীভাবে খুন? পুলিস সূত্রে খবর, উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলেকে জেরা করে জানা গিয়েছে, মদ খেয়ে স্ত্রী ও ছেলের উপরে অত্যাচার করতেন উজ্জ্বল। তাতে পুরনো ক্ষোভ ছিল উজ্জ্বলের উপরে। পরীক্ষার ফি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বচসা বাধে বাবা-ছেলের মধ্যে। পরীক্ষার ফি বাবাদ ৩ হাজার চাকা চায় ছেলে রাজু চক্রবর্তী। সেইসময় ছেলেকে চড় মারেন মত্ত উজ্জ্বল। পাল্টা বাবাকে ধাক্কা দেন রাজু। এতেই মাটিতে পড়ে যান উজ্জ্বল। এরপরই তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। উজ্জ্বলের মৃত্যুর পর হতভম্ব হয়ে পড়ে রাজু ও তার মা। এরপরই উজ্জ্বলের দেহ কেটে টুকরো করে ফেলার পরিকল্পনা করে তারা। বাড়িতেই ছিল করাত। তা দিয়েই উজ্জ্বলের দেহ ৬ টুকরো করে ফেলা হয়। পর তা সাইকেলে চাপিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসা হয়। পরদিন ১৫ নভেম্বর উজ্জ্বলের নামে মিসিং ডাইরি করেন তাঁর স্ত্রী। পুলিস তদন্তে নেমে ওই দুজনকে জেরা করলেও কিছু কবুল করতে চায়নি তারা। পরে জেরায় ভেঙে পড়ে উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলে।