গর্বের একশো বছরে পা ইস্টবেঙ্গলের! ছিন্নমূল বাঙালির লড়াইয়ের রঙ লাল, স্পর্ধায় হলুদ
দেশভাগ, ভিটেমাটি ছেড়ে আসা মানুষদের কাছে ইস্টবেঙ্গল হয়ে উঠল নাড়ির টান। সব ছেড়ে ভাসতে ভাসতে আসা মানুষগুলোর ভালবাসা, সমর্থন, লড়াইয়ের জোরে খুঁটি মজবুত হল ইস্টবেঙ্গলের।


নিজস্ব প্রতিবেদন- ভাগ্যিস মোহবাগান ছিল। না হলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্মই তো হত না। এই একটা ব্যাপারের জন্য মোহনবাগান ক্লাবকে ধন্যবাদ জানানো উচিত ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। ভাগ্যিস, সেদিন মোহনবাগান জিতেছিল। ইতিহাস ঘেঁটে দেখার দিন আজ। পিছিয়ে যেতে হবে একশো বছর। ১৯২০ সাল। কোচবিহার কাপের ফাইনালে মুখোমুখি মোহনবাগান ও জোড়াবাগান। চ্যাম্পিয়ন হল মোহনবাগান। সেদিন জোড়াবাগন জিতলে হয়তো ইস্টবেঙ্গলের জন্মই হত না। ম্যাচ হারের জন্য দলের দুই বাঙাল ফুটবলার শৈলেশ বসু ও নসা সেনের উপর সমস্ত দায় চাপিয়ে দিলেন কর্তারা। তার পরই রাগে জোড়াবাগানের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বসলেন ওপার বাংলার লোক সুরেশ চৌধুরি। সেই রাগ, অপমান, দুঃখ, অভিমান থেকে জন্ম নিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব।
দেশভাগ, ভিটেমাটি ছেড়ে আসা মানুষদের কাছে ইস্টবেঙ্গল হয়ে উঠল নাড়ির টান। সব ছেড়ে ভাসতে ভাসতে আসা মানুষগুলোর ভালবাসা, সমর্থন, লড়াইয়ের জোরে খুঁটি মজবুত হল ইস্টবেঙ্গলের। দেখতে দেখতে সেই ক্লাব একশো বছরে পা রাখল। পথচলা সহজ না হলেও এই একশো বছরের ইতিহাস গর্ব আর লড়াইয়ের বহু মুহূর্তের সাক্ষী। ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া একটা ক্লাব এক বছরের মধ্যে সাতটা ট্রফি জিতে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়ে ফেলেছিল। সেই সচিন শিল্ড থেকে শুরু করে একে একে কোচবিহার কাপ, আইএফএ শিল্ড, গিরিজা শিল্ড, ট্রেডস কাপ, আশিয়ান কাপ, জাতীয় লিগ জয়। একের পর এক ট্রফি শোভা পেয়েছে ময়দানের লাল-হলুদ রঙা তাঁবুতে। ছিন্নমূল বাঙালি আরো শক্ত হাতে আঁকড়ে ধরেছে তাঁদের প্রিয় ক্লাবকে।
আরও পড়ুন- একেই বলে খেলার ভক্ত! মাঠে ঢোকা যাচ্ছে না, হোটেল ভাড়া করলেন কয়েকজন
গত কয়েক বছরের ইতিহাস ইস্টবেঙ্গলের গরিমায় প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে সমর্থকদের মন খরাপ করেছে অবশ্যই। আক্ষেপ একটাই, বারবার খুব কাছে গিয়েও আই লিগ ছুঁয়ে দেখতে না পারার হতাশা। এরই মধ্যে একের পর এক সমস্যা এসেছে। ইস্টবেঙ্গল সব সমস্যার জট পাকানো সুতো ছাড়িয়েছে একে একে। সমস্যা, সমাধান, সমর্থন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, সব নিয়েই আজ গর্বের একশো ইস্টবেঙ্গলের। একশো বছর পার। লড়াইয়ের, স্পর্ধার। আজ ১লা অগাস্ট। লাল-হলুদ আবিরে সমর্থকদের মেতে ওঠার দিন। তবে এই বছর ইস্টবেঙ্গলর একশো বছরের উদযাপন মাটি করে দিয়েছে পরিস্থিতি। করোনার জন্য ভিড়ভাট্টা এখন বাদ।