World Refugee Day 2021: 'দাদা, আমি বাঁচতে চাই' যেন আজও তীব্র সুরে ধ্বনিত হয়

| Jun 20, 2021, 18:04 PM IST
1/8

শরণার্থীদের প্রসঙ্গ উঠলে বাঙালির অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। কেননা, সে হাড়ে হাড়ে এই শব্দের অর্থ বুঝেছে, আজও বুঝছে। ভারতভাগ, স্বাধীনতা-পর্বে সীমান্তকেন্দ্রিক যে বিপন্ন রক্তক্ষরণ, তারও অনেক পরে-পরে বিভিন্ন ইস্যুতে দুদেশের নাগরিকদের এক অংশকে যে ভয় বঞ্চনা ও অসহায়তার মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করতে হয়েছে, তার ইতিহাস যা লেখা রয়েছে, না-লেখা কাহিনি তার চেয়ে বেশি।

2/8

আজ, ২০ জুন  World Refugee Day 2021। আর কী আশ্চর্য সমাপতন, এই সময়েই কোভিড-পর্বে শরণার্থী শিবিরগুলিতে টিকাকরণের এক হতাশাজনক ছবি উঠে এল! জানা গিয়েছে, শরণার্থীরা বিশ্ব জুড়ে টিকাকরণের আওতার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। আমাদের পূর্বাঞ্চলের নিরিখে শরণার্থী শিবিরের প্রসঙ্গ উঠলে বাংলাদেশের কক্সবাজারের  রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের প্রসঙ্গ ওঠা স্বাভাবিক। এই শিবিরে রয়েছেন কমপক্ষে ৯ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। বিশ্বের বৃহত্তম ও সব চেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই শরণার্থী শিবির প্রসঙ্গে 'ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিসে'র মুখপাত্র জানিয়েছেন, 'কোভিডে শরণার্থীরা খুবই বিপন্ন অবস্থায় আছেন। অপরিষ্কার বাসস্থান। জলাভাব।  সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ভয়ানক ভাবে। গত দু'মাসে কক্সবাজার শিবিরে ব্যাপক কোভিড সংক্রমণ ঘটেছে। কারও টিকাকরণ হয়নি।'  

3/8

এতই যখন অবহেলা তখন কেন এমন একটি দিন পালিত হয় ? পালিত হয়, কারণ, মানুষকে বারবার শরণার্থীদের অসহায়তার কথাটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাঁদের সচেতন করাটাই এদিনের উদ্দেশ্য হিসেবে স্থির করা হয়েছে। United Nations দিনটি শরণার্থীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সূত্রেই পালন করার কথা ভেবেছে।   

4/8

অথচ আমরা জানি শরণার্থী শিবির কী যন্ত্রণার। আমাদের অনন্য চলচ্চিত্র শিল্পী চিত্রপরিচালক ঋত্বিক ঘটক তাঁর নির্মিত ছবিতে কত ভাবেই যে এই ছিন্নমূল মানুষের যন্ত্রণা তুলে ধরেছেন তার ইয়ত্তা নেই। 'মেঘে ঢাকা তারা'য় কলোনির মেয়ে নীতাকে কে ভুলতে পারে?  

5/8

United Nations জানাচ্ছে, বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৯ কোটি মানুষ শরণার্থী। যাঁদের ঘিরে এ পৃথিবীতে প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। অথচ, কারও হেলদোল থাকে না। এই মুহূর্তে তুরস্কে ৪০ লক্ষ মানুষ ছিন্নমূল, কলম্বিয়ায় আশ্রয়চ্যুত প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। তবে খুব বেশিদিন যে দিনটি পালিত হচ্ছে তা নয়। মাত্র ২০০১ সালে World Refugee Day পালিত হতে শুরু করে।  

6/8

অবশ্য সমস্যার যে কবে শুরু কে ঠিক করে বলতে পারে? সীমান্তের দিকে আকুল তাকিয়ে থাকা মানুষের ইতিহাস কে লিখবে? যে ভূমি-বিচ্যুত, সে পরবর্তী সময়ে যদি ভালও থাকে, তবু কি সে শিকড় ভুলতে পারে? তাই রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। 

7/8

একত্রিত মানুষই ভাল থাকে, বিচ্ছিন্ন জন নয়। এ বছরের এদিনটির থিমের মধ্যেও সেই বেঁধে বেঁধে থাকারই ইঙ্গিত। এ বছর বিশ্ব শরণার্থী দিবসের মূল ভাবনা-- Together we heal, learn and shine। রাষ্ট্রসঙ্ঘ এ কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে, শরণার্থী মানুষ, একলা মানুষ বিচ্ছিন্ন মানুষকে আমাদের কাছে টেনে নিতে হবে। কোভিড-পর্বে এই সঙ্গবদ্ধতা আরও জরুরি। 

8/8

কাছে টেনে না নিলে সে এত দূরে চলে যায় যে, তখন নিজেকেই লজ্জায় পড়তে হয়। কেন আজও আমরা মেনে নিতে পারি না, শরণার্থী মানুষ আমাদের মতোই স্বাভাবিক সুস্থ মানুষ? এমন এক মানুষ যার খিদে আছে, ঘুম আছে, প্রেরণা আছে, প্রবৃত্তি আছে, স্বপ্ন আছে, গান আছে! কলোনির উদাস ছেলে যখন নদীর পাড়ে গাছের তলায় দাঁড়িয়ে রেওয়াজ করে তখন কি সীমান্ত মুছে যায় না?