অন্ধ্রে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, অন্যত্র উপনির্বাচন শান্তিতেই

যুধুধান রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তেলুগু মুলুকের উপনির্বাচন কার্যত অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভোটগ্রহণ পর্বেও দেখা গেল সেই মরিয়া মনোভাবের প্রতিচ্ছবি। নেল্লোর লোকসভা-সহ ১২ জেলার ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেস, ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং তেলুগু দেশম কর্মীদের মধ্যে বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল আজ।

Updated By: Jun 12, 2012, 10:54 AM IST

যুধুধান রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তেলুগু মুলুকের উপনির্বাচন কার্যত অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভোটগ্রহণ পর্বেও দেখা গেল সেই মরিয়া মনোভাবের প্রতিচ্ছবি। নেল্লোর লোকসভা-সহ ১২ জেলার ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেস, ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং তেলুগু দেশম কর্মীদের মধ্যে বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল আজ। উঠল, রিগিং, বুথ দখল, সরকারি ক্ষমতা অপপ্রয়োগের অভিযোগ। অন্ধ্রপ্রদেশ ছাড়া দেশের বাকি ৭ রাজ্যের ৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ছিল মোটের উপর শান্তিপূর্ণ। আগামী ১৫ জুন সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে এই সমস্ত কেন্দ্রগুলির পাশাপাশি ইতিমধ্যেই ভোট হয়ে যাওয়া কেরলের নেয়াত্তিনকারা বিধানসভা আসনের ভোটগণনা।
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া ও দাসপুরের পাশাপাশি সিপিআইএম বিধায়ক সুকুমার বর্মনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার নলচর(তফশিলী জাতি, সংরক্ষিত) বিধানসভা কেন্দ্রেও আজ উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ হয়, মধ্যপ্রদেশের মহেশ্বর(তফশিলী জাতি, সংরক্ষিত), উত্তরপ্রদেশের মাথ, তামিলনাড়ুর পুড়ুকোট্টাই, মহারাষ্ট্রের কাইজ(তফশিলী জাতি, সংরক্ষিত) এবং ঝাড়খণ্ডের হাটিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে।
তবে এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর লোকসভা এবং ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন ছিল তাত্‍পর্যপূর্ণ। নেল্লোর লোকসভা ও ১৮টি বিধানসভার মধ্যে ১৬টিই কংগ্রেসের দখলে ছিল। জগনপন্থী কংগ্রেস সাংসদ মেকাপতি রাজমোহন রেড্ডি সাংসদ-পদ ছেড়ে নেল্লোর থেকে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে উপনির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টি সুব্রমণি রেড্ডিকে। অন্ধ্রের প্রধান বিরোধী দল তেলুগু দেশম প্রার্থী ভি ভেনুগোপাল রেড্ডি ভোটের লড়াইয়ে থাকলেও তাঁর জেতার সম্ভাবনা যথেষ্ট ক্ষীণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

অন্যদিকে ১৬ জন কংগ্রেস বিধায়ক দলত্যাগ করে জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় দলত্যাগ বিরোধী আইনে আইনসভার তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হয়। তাঁরাই এবার ওয়াইএসআর কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়ছেন। ফলে, এই আসনগুলিতে কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর জগনমোহন রেড্ডির প্রতি সাধারণ মানুষের সহানূভুতির ভোট ওয়াইএসআর কংগ্রেসের দিকে যেতে পারে। ফলে, আজকের উপনির্বাচন কংগ্রেস ও রাজশেখর রেড্ডির পুত্র, উভয়ের কাছেই অ্যাসিড টেস্ট বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি এবং প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুফল ঘরে তোলার ব্যাপারে আশাবাদী চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টিও।
একই ভাবে আল্লাগাড্ডা থেকে বিধানসভায় নির্বাচিত প্রজারাজ্যম পার্টির বিধায়ক শোভা নাগি রেড্ডি ইস্তফা দিয়ে এবার জগনের দলের হয়ে ভোটে লড়ছেন। অন্যদিকে ২০১৪ সালের ভোটে তিরুপতি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী প্রজারাজ্যম পার্টির সভাপতি চিরঞ্জিবী সদলবলে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ায় এই কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জগনমোহন রেড্ডির কাছে এই উপনির্বাচন কার্যত রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে যুদ্ধ। ওয়াইএসআর কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের নেতা রাজনৈতিক চক্রান্তের বলি হয়ে জেলে গিয়েছেন। উপনির্বাচনে এর সমুচিত জবাব দেবেন অন্ধ্রের মানুষ।

.