গুয়াহাটির রাজপথে নারী নিগ্রহ, নির্বাক জনতা
একের পর এক নারী নির্যাতন! সংক্রামক ব্যাধির মতোই তার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে গোটা ভারতে।
একের পর এক নারী নির্যাতন! সংক্রামক ব্যাধির মতোই তার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে গোটা ভারতে। এবারের স্পটলাইট আসামের গুয়াহাটির ব্যস্ত এলাকা চত্বর।
সোমবার রাতে জিএস রোডের একটি পানশালা থেকে এক তরুণী তার বন্ধুকে নিয়ে বেরোনোর সময় মুখোমুখি হয় একদল দুষ্কৃতীর। প্রথমে তাকে উত্যক্ত করা হয় এবং পরে শুরু হয় নির্যাতনের পালা। মেয়েটি সাহায্য চেয়েছিল, কিন্তু পায়নি। বরং ঘটনাস্থলে উপস্থিত গুয়াহাটিবাসীর একাংশ তাঁর লাঞ্ছনা মোবাইল-বন্দি করতেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
ঘটনাচক্রে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি নজরে আসে সাংবাদিক মুকুল কলিতার। শেষে তাঁর হস্তক্ষেপে পুলিশ এসে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। অভিযুক্ত ১৬ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত অমরজ্যোতি কলিতা এখনও ফেরার। কিন্তু ইতিমধ্যেই এমএমএস হয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে ১১ জনকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হলেও কেন বাকিরা অধরা? কেনই বা পুলিস থানার মাত্র সোয়া কিলোমিটার দূরে ঘণ্টাখানেক ধরে এক তরুণীর উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার চালাতে পারল দুষ্কৃতীরা? অসম পুলিসের ডিজি জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরির জবাব, "পুলিস এটিএম মেসিন নয় যে অপরাধ ঘটলেই কেউ সেই মেসিনে কার্ড ঢোকাবে আর পুলিস সঙ্গে সঙ্গে হাজির হবে"।
সাম্প্রতিককালের একের পর এক নারী নিগ্রহের ঘটনার ধারাবাহিকতা মেনে গুয়াহাটি কাণ্ডেরও সুয়োমটো মামলার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। এর আগেও অবশ্য যৌন লাঞ্ছনার ক্ষেত্রে আইনমাফিক যাবজ্জীবন কারাবাস, নয়তো বা মৃত্যুদন্ডের সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের তরফে। অসম সরকারের তরফে ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত এবং দোষীদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সোমবার রাতে গুয়াহাটির শিলং রোডের ঘটনার ন্যয়বিচার হয়তো হবে, হয়তো বা হবে না। কিন্তু নারী নিগ্রহের এই ধারাবাহিকতা রুদ্ধ করার জন্য উপযুক্ত আইনের প্রয়োজনিয়তা নিয়ে কিন্তু দাবি উঠেছে ইতিমধ্যেই।