Cow Smuggling: অবশেষে তিহাড়েই দেখা, মেয়েকে কাছে পেয়ে কী বললেন আবেগপ্রবণ অনুব্রত?
Cow Smuggling: একাধিকবার সুকন্যা মণ্ডলের বয়ানে অসংগতি পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। তাঁর সম্পত্তির হিসেবই তিনি ঠিকঠাক দিতে পারছিলেন না। একসময় মনে করা হচ্ছিল সুকন্যা মণ্ডলের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন অনুব্রত। কিন্তু বারবার জিজ্ঞসাবাদে উঠে আসে যে তাঁর সম্পত্তি সম্পর্কে সবটাই জানতেন সুকন্যা

জ্যোতির্ময় কর্মকার: গোরু পাচার মামলায় জড়িয়ে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই একই জেলে রাখা হয়েছে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও। কিন্তু বাবা-মেয়ের দেখা হচ্ছিল না। শনিবার শেষপর্যন্ত মেয়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলেন অনুব্রত মণ্ডল। মেয়ের সঙ্গে দেখা করার আবেদন করেছিলেন অনুব্রত। অনুমতি মিলেওছিল। কিন্তু বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সময়। শনিবার বাবা-মেয়ের সেই সাক্ষাত হল।
আরও পড়ুন-অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ, মঞ্চে যোগেন-শুভাপ্রসন্নরা
গত মঙ্গলবার তিহাড় জেল থেকে অনুব্রতকে যখন আদালতে তোলা হয় তখন অনুব্রত সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'মেয়ের সঙ্গে দেখা হতে পারে।' যেদিন থেকে সুকন্যা গ্রেফতার হয়েছিলেন সেদিন থেকেই জোর ধাক্কা খেয়েছিলেন অনুব্রত। তখনই তিনি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁকে যেন মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়। সেই আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর আজ নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে বাবা-মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাত হয়।
সূত্রের খবর, বহুদিন পর শেষপর্যন্ত জেলে সাক্ষাত হওয়ার পর বাবা-মেয়ে দুজনেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কথা হয় মিনিট পনের। অনুব্রত বারবার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন তিনি ইডির হাজিরা দিতে দিল্লি এলেন?
কয়েকদিন আগেই আদালতে যাওয়ার পথে আবেগপ্রবণ হয়ে অনুব্রত ইডি আধিকারিকদের প্রশ্ন করেন, আমার মেয়েকেও গ্রেফতার করলেন। আপনাদের বিবেক বলে কি কিছু নেই? তৃণমূলের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২৬ এপ্রিল দিল্লির টানা জেরার পর সুকন্যা মণ্ডলকে গ্রেফতার করে ইডি। গোরু পাচারকাণ্ডে বিপুল টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই টাকার একটি বড় অংশ অনুব্রত মণ্ডল তাঁর সহযোগী, নিরাপত্তাকর্মী ও মেয়ের নামে সম্পত্তি করেছেন বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে ইডির হাতে এসেছে ককন্যা মণ্ডলের বিপুল সম্পত্তির তালিকা। কোথাও রাইস মিল, কোথাও জমি, কোথাও নগদ ফিক্সড ডিপোজিট। সুকন্যার সম্পত্তির বহর দেখে তাজ্জব ইডি।
অনুব্রতর গ্রেফতারের আগেই ইডি গ্রেফতার করেছিল তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন ও তাঁর চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট মণীষ কোঠারি। তাদের জেরা করে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসে ইডির। এরপর বহু আইনি বাধা পেরিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতা করে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। অনুব্রতর ঠাঁই হয়েছে তিহাড় জেলে। সেখানেই আছেন সারগল হোসেন ও মণীষ কোঠারি। সূত্রের খবর সুকন্যাকে যখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তখনই তিনি জানিয়েছেন সবকিছু জানেন বাবা ও মণীষ কাকু। কিন্তু সম্প্রতি বারবার ইডির সমন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন সুকন্যা। আজ তাঁকে টানা জেরার পর তদন্ত অসহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
ইডি সূত্রে খবর, একাধিকবার সুকন্যা মণ্ডলের বয়ানে অসংগতি পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। তাঁর সম্পত্তির হিসেবই তিনি ঠিকঠাক দিতে পারছিলেন না। একসময় মনে করা হচ্ছিল সুকন্যা মণ্ডলের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন অনুব্রত। কিন্তু বারবার জিজ্ঞসাবাদে উঠে আসে যে তাঁর সম্পত্তি সম্পর্কে সবটাই জানতেন সুকন্যা।
সুকন্যা মণ্ডলের আয়কর রিটার্নে মিলেছিল চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা কেষ্ট-কন্যার সম্পত্তি বেড়েছে রকেট গতিতে। সিবিআই সূত্রে খবর, ৮ বছরে সুকন্যার আয় বেড়েছে প্রায় ১৭৫ গুণ! ২০১৩-১৪ থেকে ২০২১-২২-এর মধ্যে আয় বেড়েছে প্রায় ১৭৫ গুণ। ২০১৯-২০-তে আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।