সারদার উত্থান-পতন
সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত একাধিক প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আর সেটাই সারদা কাণ্ডের তদন্ত সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত একবছরে শাসক দলের একাধিক নেতামন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। একনজরে দেখা নেওয়া যাক এখনও পর্যন্ত কীভাবে এবং কাদের নাম সারদার জালে জড়িয়েছে।
সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত একাধিক প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আর সেটাই সারদা কাণ্ডের তদন্ত সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত একবছরে শাসক দলের একাধিক নেতামন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। একনজরে দেখা নেওয়া যাক এখনও পর্যন্ত কীভাবে এবং কাদের নাম সারদার জালে জড়িয়েছে।
একাধিক রাজ্যে প্রতারণার জাল জড়িত বহু রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তি!
ভিও-এই দুটি বিষয়কে সারদা মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার অন্যতম বড় কারণ হিসাবে দেখিয়েছে শীর্ষ আদালত।
একবছরের বেশি সময় ধরে চলা সারদা মামলায় বিভিন্ন সময়ে জড়িয়েছে শাসক দলের নেতামন্ত্রীদের নাম।
১৬ এপ্রিল ২০১৩
সারদা কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস
২৩ এপ্রিল ২০১৩
শোনমার্গ থেকে গ্রেফতার সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন
২৪ এপ্রিল ২০১৩
প্রকাশ্যে আসে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের সিবিআইকে লেখা চিঠি। চিঠিতেই প্রথমবার উঠে গেল তৃণমূলের সাংসদ কুণাল ঘোষের নাম। ছিল সৃঞ্জয় বসুর নামও।
এরপরই, উঠে আসে শাসক দলের নেতামন্ত্রী থেকে শাসক ঘনিষ অনেকের নাম। জানা যায় সারদার ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। নেতাজি ইন্ডোরের সভায় সুদীপ্ত সেনকে সার্টিফিকেট দিতে শোনা যায় সারদা কর্মী সংগঠনের নেতা মদন মিত্রকে।
একের পর এক দলের নেতামন্ত্রীদের নাম সারদার সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী।
৩ রা মে ২০১৩
ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে দলের কর্মিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: "কুনাল চোর ? মদন চোর ? টুম্পাই চোর ? আমি চোর ? মুকুল চোর ? আর তোমরা সব সাধু ?"
তেসরা মে যে কুণাল ঘোষকে মুখ্যমন্ত্রী সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন, বিশে সেপ্টেম্বর মধ্য কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে সেই কুণাল ঘোষই প্রকাশ্যে ইঙ্গিত দিলেন সারদার জাল ছড়িয়েছে শাসকদলের গভীরে।
২৩ নভেম্বর, ২০১৩
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ক্লিনচিট পাওয়া কুণাল ঘোষকেই গ্রেফতার করে বিধাননগর কমিশারেট।
কুণাল ঘোষ ফেসবুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়, মদন মিত্র, শুভেন্দু অধিকারী, কেডি সিং-সহ বারো জনের নাম লিখে বলেছিলেন, এঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে সারদা কারবারের এ টু জেড জানা যেতে পারে। গ্রেফতারির আশঙ্কায় আগেই একটি বিস্ফোরক ভিডিও রেকর্ডিং করেছিলেন কুণাল ঘোষ। সেই ভিডিওয়ে কুণাল ঘোষের জবানিতে উঠে আসে একের পর এক তৃণমূল নেতার নাম।
কিন্তু, একমাত্র কুনাল ঘোষ ছাড়া শাসকদলের কোনও নেতাকেই জেরা করেনি পুলিস। তবে, তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নাট্যকর্মী ও এবারের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে। জেরা করা হয়েছে কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংয়ের প্রাক্তন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংকেও। ইডি সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন সহ শাসকদলের বেশকয়েকজন নেতাকে। সারদা কেলেঙ্কারিতে ইডির অর্ন্তবর্তী তদন্ত রিপোর্টেও উঠে এসেছে অন্তত কুড়ি জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম। প্রশ্ন উঠছে, কী কারণে সিবিআইয়ে এত আপত্তি ছিল রাজ্যের? যে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত, তাদের আড়াল করতেই কী সিবিআই এড়ানোর মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়েছিল রাজ্য ?