ধর্মতলার হোটেলের ঘরে খুন অর্চনা, আত্মঘাতী প্রেমিকও! দেহ লোপাট করে কর্তৃপক্ষ
১৭ সেপ্টেম্বর বলরামের সঙ্গে ধর্মতলায় তাদের হোটেলে উঠেছিলেন অর্চনা। আর তারপর হোটেলের ঘরেই খুন হন অর্চনা।

নিজস্ব প্রতিবেদন : আনন্দপুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নয়া মোড়। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই উল্টোডাঙার গৃহবধূ অর্চনা পালংদারকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছে প্রেমিক বলরাম। তদন্তের পর নিশ্চিত করে জানাল পুলিস। বলরামের ফোনের কললিস্ট ঘেঁটেই মেলে খূনের সূত্র। সেই সূত্র ধরে ধর্মতলার এক হোটেলকর্মীকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতারের পরই সামনে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
১৭ সেপ্টেম্বর মোবাইল সারানোর নামে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান অর্চনা। ৩ দিন পর চৌবাগা লকগেটে গৃহবধূ অর্চনার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার করে আনন্দপুর থানার পুলিস। দেহে তখন পচন ধরে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে সেদিন অর্চনার পরিচয় জানা যায়নি। পরদিন অর্চনার স্বামী পিন্টু পালংদার স্ত্রীর দেহ শনাক্ত করেন। তাতেই সামনে আসে উল্টোডাঙার গৃহবধূর পরিচয়।
এই খুনের ঘটনায়, প্রথম থেকেই সন্দেহের তির গিয়ে পড়ে অর্চনার প্রেমিক বলরামের উপর। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন বলে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় পুলিস। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল বলরাম। তার কোনও খোঁজ মিলছিল না। বলরামের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করে পুলিস। তল্লাশি চালানো হয় পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও। প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বাসিন্দা ছিল বলরাম। কলকাতায় ফুলের ব্যবসা ছিল তার।
আরও পড়ুন, মন মতো জন্মদিন পালন হল না! অভিমানে শুভদিনেই আত্মঘাতী কিশোরী
এরপরই এদিন সকালে ঝাড়খণ্ড থেকে আশিস যাদব নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিস। বলরাম ও আশিস দুজনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বলরামের কললিস্ট ঘেঁটেই আশিস যাদবের নাম জানতে পারে পুলিস। ধৃত আশিস যাদব ধর্মতলার এক হোটেলের কর্মী। তাঁকে জেরা করেই উল্টোডাঙার গৃহবধূ খুনের ঘটনায় মিসিং লিঙ্কটি খুঁজে পায় পুলিস। সামনে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জেরায় আশিস জানান, খুনের দিন অর্থাত্ ১৭ সেপ্টেম্বর বলরামের সঙ্গে ধর্মতলায় তাদের হোটেলে উঠেছিলেন অর্চনা। আর তারপর হোটেলের ঘরেই খুন হন অর্চনা।
পুলিসকে আশিস জানিয়েছেন, সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে যুগলের মধ্যে বচসা বাঁধে। তারপর হোটেলের ঘরেই প্রেমিকা অর্চনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে প্রেমিক বলরাম। অর্চনাকে খুনের পর হোটেলের ঘরে নিজেও আত্মঘাতী হয় বলরাম। ঘটনার কথা সামনে আসতেই বদনাম এড়াতে প্রমাণ লোপাট করতে সচেষ্ট হয়ে ওঠে হোটেল কর্তৃপক্ষ। রাতারাতি সরিয়ে ফেলা হয় যুগলের দেহ। বস্তাবন্দি করে অর্চনার দেহ ফেলে আসা হয় আনন্দপুর পাম্পিং স্টেশনে।
আরও পড়ুন, 'বাবাকে বলবি মামা সাইকেল কিনে দিয়েছে', ছেলেকে শিখিয়ে পড়িয়ে দেন অর্চনা
তবে এখনও বলরামের দেহের কোনও খোঁজ মেলেনি। পুলিস জানিয়েছে, ধৃত আশিস যাদবকে সঙ্গে নিয়ে এবার বলরামের দেহের সন্ধান চালানো হবে। একইসঙ্গে জোড়া দেহ লোপাটের মতো জঘন্য অপরাধের জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।