Ambikesh Mahapatra: কার্টুনকাণ্ডে অবশেষে রেহাই; 'সরকারের অসহিষ্ণুতা বহুগুণ বেড়েছে', মত অম্বিকেশের
তখন মকুল রায়কে সরিয়ে রেলমন্ত্রী পদে বসানো হয়েছিল দীনেশ ত্রিবেদীকে। ২০১২ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ব্যাঙ্গচিত্র শেয়ার করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। এরপরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পরে জামিনে মুক্তি পান।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তখনও মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, এখনও রাজ্য চালাচ্ছেন তিনিই। মাঝে পেরিয়ে দিয়েছে ১১ বছর! কার্টুনকাণ্ডে মামলা থেকে অবশেষে অব্য়াহতি পেলেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। জি ২৪ ঘণ্টার 'আপনার রায়' অনুষ্ঠানে তিনি বললেন, 'নানাভাবে পুলিসকে প্রভাবিত করে, বিচারব্যবস্থাকে দিয়ে মামলা চালানো হচ্ছিল'।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দৌলতে এখন মিমের ছড়াছড়ি। কিন্তু ২০১২ সালে এই শব্দটির সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না প্রায় কেউই। মুকুল রায়কে সরিয়ে রেলমন্ত্রী পদে বসানো হয়েছে দীনেশ ত্রিবেদীকে। সেই নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ব্যাঙ্গচিত্র শেয়ার করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। তাতে দেখা গিয়েছিল, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীনেশ প্রসঙ্গে নবনিযুক্ত রেলমন্ত্রী মুকুলকে বলছেন, দুষ্টু লোক ভ্যানিশ'। গ্রেফতার করা হয় অম্বিকেশকে। পরে জামিন পান, এবার মামলা থেকেও অব্যাহতি মিলল।
আরও পড়ুন: খড়গপুর আইআইটিতে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ডিরেকটরকে তীব্র ভর্ৎসনা আদালতের
এদিন জি ২৪ ঘণ্টা দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অম্বিকেশ মহাপাত্র বলেন, 'যে কোর্ট মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যে কোর্ট থেকে জামিন দেওয়া হয়েছিল, যে কোর্টে পুলিস চার্জশিট দিয়েছিল, সেই কোর্ট থেকে কিন্তু অব্যাহতিটা হয়নি। সেই কোর্টে নানান অছিলায় মামলাটিকে দীর্ঘায়িত করছিল'। জানান, 'অ্যারেস্ট সময়ে পূর্ব যাদবপুর থানায় ৪ সেকশন দিয়ে লকআপে ঢুকিয়েছিল। কিন্তু কোর্টে যে চার্জশিট জমা পড়েছিল, সেখানে কেবল ৬৬এ ধারা ছিল। অন্য ধারা যুক্ত করার মতো কোনও প্রমাণ ছিল না। পরবর্তী সময়ে পুলিসকে দিয়ে শাসকদল একটা পিটিশন দাখিল করে ৫০০ ও ৫০৯ যুক্ত করার জন্য। কিন্তু আইনে সেটা যুক্ত করার সংস্থান নেই। চাইলেও আদালতে সেটা গ্রহণ করার কথা নয়। কিন্তু ,সেটা গ্রহণ করে বিচারপতি মামলাটি দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা জারি রেখেছিলেন'।
কীভাবে অব্যাহতি মিলল? অম্বিকেশ মহাপাত্র বলেন, '২০২১ সালে সেপ্টেম্বর কোর্ট এমন একটা অদ্ভূত রায় দিল, যে রায় দেখে আইনজীবীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। চার্জশিট হয়েছিল ৬৬এ ধারায়। আলিপুর ক্রিমিনাল কোর্ট রায় দিল, ৬৬ ধারা থেকে অব্যাহতি দিলেও মামলা থেকে অব্য়াহতি দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা জজ কোর্টে যাই। ১ বছরে ধরে শুনানির পর এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত'।
এর আগে, কার্টুনকাণ্ডে যখন জামিনে মুক্তি পান, নাগরিক অধিকার রক্ষার আন্দোলনে রাস্তা নেমেছিলেন অম্বিকেশ। গড়ে তুলেছিলেন 'আমরা আক্রান্ত' নামে একটি সংস্থা। এখনও কি সেই ভূমিকাতেও দেখা যাবে? জবাব, গত ১১ বছরে সরকারের অসহিষ্ণুতা বহুগুণ বেড়েছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করা, আইনের শাসনকে হেয় করার সার্বিক প্রচেষ্টা চলছে। যেখানেই গণতন্ত্র আক্রান্ত হবে, নাগরিক অধিকার আক্রান্ত হবে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে। আমার প্রতিবাদের ধ্বনি সোচ্চারিত হবে'।