Ranojoy Bishnu: গাইডের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার! ট্রেকিংয়ে গিয়ে মৃত্যুর মুখে রণজয়...
Ranojay Bishnu: কাশ্মীরে ট্রেকিংয়ে গিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন রণজয় বিষ্ণু। অভিনেতা শোনালেন সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা যা রীতিমতো আতঙ্কের। অভিনেতা বলেন, প্রায় তিনবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে মনে হয় আর বাড়ি ফিরতে পারবেন না তিনি। শারীরিক মানসিক চাপে কেঁদে ফেলেন অভিনেতা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এই মুহূর্তে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের হিন্দি সিরিয়াল ‘ঝনক’-এর(Jhanak) শুটিংয়ে কাশ্মীরে রয়েছেন রণজয় বিষ্ণু(Ranojay Bishnu)। সেই শ্যুটিংয়ে তিনদিনের ছুটি পেয়েই চারজন বন্ধু মিলে ট্রেকিংয়ে(Trekking) যান অভিনেতা। সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রী পত্রালিও। ৮ সেপ্টেম্বর ভোরে রওনা দেন তাঁরা কিন্তু সেই ট্রেক সুখকর হয়নি তাঁদের। ট্রেকের শেষদিনে মৃত্যুর মুখে পড়েন তাঁরা। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন রণজয়।
আরও পড়ুন- Tollywood: শালবনিতে অবৈতনিক বিদ্যালয় গড়ল টিম ‘মানবজমিন’, স্বপ্নপূরণ শ্রীজাত-রানার...
রণজয় বলেন, ‘শ্যুটিংয়ে গ্যাপ পাই তিনদিনের জন্য, আমরা তিন-চারজন ঠিক করি ট্রেকে যাব, সেই মতোই ট্রেকে যাই। আরশান এবং ফাম্বার ভ্যালির মাঝে ট্রেক এখনও শুরু হয়নি তাও আমরা ট্রেকে যাই। প্রথম দিনে প্রায় ১২ কিলোমিটার ট্রেক করতে হয় তাঁদের আর দ্বিতীয় দিনে ৮ আর শেষদিনে ১৫ কিলোমিটার ট্রেক করি। পাহাড়ে আমি ঘুরি কিন্তু এটা আমার প্রথম ট্রেকের অভিজ্ঞতা। সবাই খুব এক্সাইটেড ছিলাম’।
তবে সবটাই সুখকর ছিল না। রণজয় বলেন, ‘কিন্তু বিগিনারদের জন্য এই ট্রেকটা খুব শক্ত হয়ে যায়। এতটাই কঠিন যে বেঁচে ফিরব কিনা বুঝতে পারছিলাম না। আমরা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের গাইডের সঙ্গে আমাদের বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়ে যায় কারণ তাঁর কোনও অধিকার নেই যে আমাদের জীবন নিয়ে খেলার। আমরা সবাই প্রায় কেঁদে ফেলি। আমরা ফিরতে পারব কিনা সংশয় তৈরি হয়’।
রণজয় বলেন, ‘ফেরার দিন আমাদের বলা হয় যে ‘সিন্থন টপ’-এ যেতে হবে, ওখান থেকে আমরা হোটেলে ফিরব। আমরা যখন পৌঁছাই, দেখি ওরা দাঁড়িয়ে আছে। সকাল ৮টায় বেরিয়ে দুপুর ২ টোয় ঐ পয়েন্টে পৌঁছাই। আমাদের পেটে কোনও খাবার নেই। এমনকী জলও নেই। ওরা কোনও ব্যবস্থাই করে রাখেনি। এতটাই বোকা। জল নেই, খাবার নেই। আমরা বলি এবার ঘরে ফিরতে হবে। ও আমাদের একটা রাস্তা দেখায়, যেটা পুরো খাঁড়া। আমরা রেগে গিয়ে বলি যে এই রাস্তায় গিয়ে তো প্রাণ হারাব! তারপরও আমরা চলতে থাকি। তিনবার আমার মনে হয়েছে যে আমি আর বাঁচব না। বাড়ির লোকেদের কথা মনে পড়ছে। আমি একবার রেগে ওকে বলি যে আমরা অভিনেতা, মজার জন্য ট্রেকে এসেছি। আমার উপর ছয়-সাতজন লোকের দায়িত্ব আছে, আমি মরে গেলে, তাঁরাও মরে যাবে।’
রাস্তার বর্ণনা দিয়ে রণজয় বলেন, ‘ পুরো পাথরের রাস্তা, পা দিলে পাথর গড়িয়ে যাচ্ছে। দেওয়াল ধরে ধরে এগোচ্ছি, একদিকে পুরো খাদ। একজায়গায় পা দিলাম, দুটো পাথর গড়িয়ে গেল। তখনই ভাবলাম এই বোধ হয় মরে গেলাম। আর বাঁচব না। পা আর চলছি না। আমি দুবার ব্ল্যাক আউট হয়ে যাই। আমাকে আরিফ বলে একটা ছেলে বাঁচায়। আমি ভগবান দেখিনি ওকে দেখলাম। ও আমায় বাঁচালো। রাত হয়ে গেছে আমি একজায়গায় বসে পড়েছিলাম। আরিফ জিনিস রেখে ফের আসে, আমায় তুলে নিয়ে যায়, ফেরার সময় আমরা দুজনেই ঈশ্বরকে ডাকছিলাম। আমার সঙ্গীরা আগেই পৌঁছে যায়, ওরা ভাবছিল পুলিসে খবর দেবে, এতটাই আমার দেরি হয়েছে। অনেকবছর পর কাল আমি কেঁদেছি কারণ আমার পরিবারের কথা মনে পড়ছিল’।
আরও পড়ুন- Jawan: ‘জওয়ান’-এ গোরক্ষপুর শিশুমৃত্যুর ছায়া! শাহরুখকে ধন্যবাদ ডা: কাফিল খানের...
রবিবার ট্রেক থেকে ফিরেই সোমবার শ্যুটিংয়ে যোগ দিয়েছেন রণজয়। তাঁদের গাইড ইউনিসকে নিয়ে বিরক্ত অভিনেতা। অভিনেতা বলেন, ‘যদি আপনারা কাশ্মীরে ট্রেকে আসেন তো ইউনিস বলে নামটা মনে রাখবেন। ভুলেও ওর সঙ্গে যাবেন না। আর আরিফ ভগবান’। তাঁর দাবি, ‘‘আসলে পারিশ্রমিকের লোভে তিনি চার দিনের ট্রেকিং শর্টকার্টে তিন দিনে সারতেই এটা করলেন। পর্যটকদের জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলার কোনও মানে নেই।’