Bangladesh Quota Movement: বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ঠিক কত?
Bangladesh Quota Movement: রবিবার সচিবালয়ে এক বিবৃতিতে মন্ত্রী এ কথা জানান। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয় ১ জুলাই। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সারা দেশে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অনেক লাশ এখনও সনাক্ত করাই যায়নি। অধিকাংশ লাশ ইতিমধ্যেই দাফন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নিহতের সংখ্যা ঠিক কত তা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ও সরকারি হিসবেও তফাত রয়েছে।
আরও পড়ুন-ঘাটতি পূরণ হবে অনেকটাই! তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, সপ্তাহভর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে
দেশের বেসরকারি একটি সংস্থার মতে মৃতের সংখ্যা ২৬৬। একটি নামী দৈনিক বলছেন কোটা আন্দোলনের গোলমালে মারা গিয়েছেন ২০৯ জন। সরকারি হিসেব এসব মানুতে রাজি নয়। তাদের দাবি মৃতের সংখ্যা দেড়শোর বেশি হবে না। খোদ মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, নিহতের সংখ্যা ১৪৭।
এদিকে, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিদিনের হিসেব অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা ১৮৫। এদের অধিকাংশের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ১৫টি লাশের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ওইসহ মৃতদেগের ডিএনএ স্যাম্পেল নেওয়ার পর সেগুলিকে শেষকৃত্যের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতালসহ উত্তরা, বনশ্রী, মিরপুরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গুলিবিদ্ধ অনেকেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত অবস্থায় গত তিন দিনে হাসপাতালে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন। তাদের বেশির ভাগই মারা গেছেন গুলিবিদ্ধ হয়ে। নিহতদের মধ্যে ছাত্র, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, গাড়ি চালক, সাংবাদিক ও পুলিশ রয়েছেন। রাজনৈতিক দলের কর্মীও রয়েছেন নিহতের তালিকায়। এদের মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যাই বেশি। এ ছাড়া নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন গুলিবিদ্ধ হয়ে। জানা গেছে, অস্বাভাবিক, সন্দেহজনক এবং হঠাৎ মৃত্যু হলে ব্যক্তির পরিচয় ও মৃত্যুর কারণ শনাক্তে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত করে প্রথমত মৃত্যুর কারণ, নেচার অব ডেথ বা মৃত্যুর ধরন জানা যায়।
আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন। তাদের বেশির ভাগই মারা গেছেন গুলিবিদ্ধ হয়ে। নিহতদের মধ্যে ছাত্র, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, গাড়ি চালক, সাংবাদিক ও পুলিস রয়েছেন। রাজনৈতিক দলের কর্মীও রয়েছেন নিহতের তালিকায়। এদের মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যাই বেশি। এ ছাড়া নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন গুলিবিদ্ধ হয়ে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৫০টি থানার মধ্যে লালবাগ, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় কেউ অপঘাতে মারা গেলে ওই লাশের ময়নাতদন্ত হতো স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। বাকি ময়নাতদন্ত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। এখন ডিএমপির মিরপুর বিভাগের সব থানা, উত্তরা (পূর্ব ও পশ্চিম), তুরাগ, দক্ষিণখান, বাড্ডা, ভাটারা থানার মৃতদেহ যায় শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মর্গে। এই তিন মর্গে সহিংসতায় নিহত ১৩৯টি লাশ আসে। এর মধ্যে ১৫টি ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে যান স্বজনরা। ৫৬ জন নিহত হন ঢাকার বাইরে। এ লাশগুলোর ময়নাতদন্ত হয় ঢাকার বাইরে সরকারি হাসপাতাল মর্গে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় সর্বশেষ মারা যান পোশাকশ্রমিক ইয়ামিন চৌধুরী (১৮)। তিনি ১৯ জুলাই রাজধানীর বাড্ডায় সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। ইয়ামিনের বাবা রতন চৌধুরী জানান, তার ছেলে উত্তর বাড্ডার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। ১৯ জুলাই বেলা ১টার দিকে কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। উত্তর বাড্ডা সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে এলে তার পেটে ও ডান হাতে গুলি লাগে। পথচারীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়। মা-বাবার সঙ্গে বাড্ডার হাসান উদ্দিন রোডে থাকতেন ইয়ামিন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাঞ্চনপুরে।
কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৪৭ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। রোবিবার সচিবালয়ে এক বিবৃতিতে মন্ত্রী এ কথা জানান। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন শুরু হয় ১ জুলাই। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সারা দেশে। এর পরদিন থেকে এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে গণমাধ্যমে হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করলেও সরকারের তরফ থেকে এই প্রথম মৃতের সংখ্যা জানানো হল। অবশ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)