অমর্ত্য সেনকে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাগজ অপ্রাসঙ্গিক! আলোচনা চাইলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য
উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কথায়, 'এই গোটা বিষয়ে ক্ষতি হচ্ছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ও অমর্ত্য সেনের। আর কিছুই না।' উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনে একটি জমির কিছু অংশ ছেড়ে দিতে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, অমর্ত্য সেন জোর করে ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন।
প্রসেনজিৎ মালাকার : 'মুখ্যমন্ত্রী যে কাগজ দিছেন, তা প্রাসঙ্গিক নয়। আমরা অমর্ত্য সেনকে সম্মান করি। আমরা এখনও চাই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক।' জি ২৪ ঘণ্টাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন বিশ্বভারতীর উপচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কে যোগ হল নয়া মাত্রা। পাশাপাশি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন,'মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে আমাকে আক্রমণ করেছেন, তাতে তার বোঝা উচিৎ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য ঠিক করে কেন্দ্রীয় সরকার।' একইসঙ্গে সাফাই দেন, 'আমি নোবেল প্রসঙ্গে যা বলেছি, সেটা বিশ্লেষণ করেছি শুধুমাত্র। এছাড়া কিছুই না। যাচাই করে দেখলেই বোঝা যাবে আমি সঠিক বলছি।' উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কথায়, 'এই গোটা বিষয়ে ক্ষতি হচ্ছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ও অমর্ত্য সেনের। আর কিছুই না।'
প্রসঙ্গত, জমিজট বিতর্কের মাঝেই সোমবার অর্মত্য সেনের বাড়ি প্রতীচীতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে বাড়ির জমির মাপজোঁক সংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, সকালে বোলপুরে বিএলআরও অফিসে যান মমতা। জমির নথি হস্তান্তরের পর, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে কড়া ভাষায় তোপ দাগেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'জমির কাগজ নিয়ে এসেছি। তথ্যের উপর ভিত্তি করে সত্য বলতে চাই। জমির প্রকৃত নথি অমর্ত্য সেনকে তুলে দিলাম। ১৯৮৪-এর পরের ল্যান্ড রেভিনিউ রিপোর্ট অনুযায়ী, যে জমিটা লিজে দেওয়া হয়েছিল তার পরিমাণ ১.৩৮ একর।' এখন বিশ্বভারতীর দাবি, ১.২৫ একর জমি লিজে রাখার কথা! সেখানে অমর্ত্য সেন আরও ১৩ ডেসিমেল ছবি অধিগ্রহণ করে রেখেছেন! জমির নথি হস্তান্তরের পরই হিসব কষে মমতা বুঝিয়ে দেন যে, বিশ্বভারতীর দাবি ভুল।
ওদিকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সরকারি তরফে জমির নথি হাতে পাওয়ার পর অমর্ত্য সেন বলেন, 'যাঁরা আমাকে হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছেন, তাঁদের বলব তাঁদের বোধের উপরে আমরা যে খুব একটা আস্থা রয়েছে তা বলতে পারছি না। তাই এনিয়ে খুব বিশাল একটা ঝড় উঠছে তা বলা যুক্তিযুক্ত বলে মনে হচ্ছে না। বিষয়টিকে বড় করার কোনও ইচ্ছে আমার নেই।' উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনে একটি জমির কিছু অংশ ছেড়ে দিতে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, অমর্ত্য সেন জোর করে ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন। ওই ১৩ ডেসিমেল জমি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অমর্ত্য সেনের পরিবারের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের জমি অবৈধভাবে দখলে রাখার অভিযোগ করেন। অমর্ত্য সেন তখনই জানিয়েছিলেন যে, জমির প্লটটি দীর্ঘমেয়াদী লিজে রয়েছে। অমর্ত্য সেন জানান, বাড়ির কিছুটা অংশ বিশ্বভারতীর কাছ থেকে লিজ নেওয়া। বাকি অংশ কেনা হয়েছে।
আরও পড়ুন, Primary TET: 'OMR শিট অত্যন্ত সুরক্ষিত আছে', টেট পরীক্ষার্থীদের আশ্বাস পর্ষদ সভাপতির