চায়ের আড্ডায় মুকুলই করলেন মানভঞ্জন, বিজেপি ছাড়ছেন না বৈশাখী-শোভন
দীর্ঘ আড্ডাতেই মানভঞ্জন হয় শোভন ও তাঁর বান্ধবীর। বৈঠক শেষে জানিয়েও দেন, “শোভন-বৈশাখী বিজেপিতে ছিলেন, আছেন।”
নিজস্ব প্রতিবেদন: যোগ দিয়েই কি আবার বিজেপি ছাড়ছেন শোভন-বৈশাখী? গত কয়েকদিনে এহেন জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু উত্তরটা হল ‘না’। এবং তা স্পষ্ট করলেন খোদ মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী নিজেই। অভিমান, ক্লেশ, কষ্ট, ক্ষোভ- বৈশাখী-শোভনের এহেন যাবতীয় মান ভঞ্জন করলেন মুকুল রায়।
সোমবার রাতেই প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে ‘চা-আড্ডা’য় বসেন মুকুল রায়। তাঁদের দাবি, নেহাতই ‘চায়ে পে চর্চা’য় বেরিয়ে আসে সমাধান সূত্র। বৈঠক শেষে শোভন-বৈশাখী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আপাতত বিজেপি ছাড়ছেন না তাঁরা।
তবে শোভন-বৈশাখীর মনে যে একটা অভিমান তৈরি হয়েছিল, তা স্বীকার করে নেন মুকুল রায়ও। তিনি বলেন, “আমি দিল্লিতে ছিলাম। ওঁরাও দিল্লিতে ছিলেন। আমাকে আমার দলের মহাসচিব একবার বললেন, ওঁদের সঙ্গে কথা বলতে। কথা বলা মানে আমরা আড্ডায় বসি। সাড়ে তিন ঘণ্টা আড্ডার ফাঁকেই চলে কথা। ওঁদের সব কথাই শুনেছি। তবে যে জল্পনা উঠছে যে শোভন-বৈশাখী বিজেপি ছাড়ছেন, তা মিথ্যা। ওঁরা বিজেপিতে ছিলেন, আছেন। তবে ভবিষ্যতের কথা তো এখনই বলা যায় না। ভবিষ্যতে কী হবে, তা সময়ে বলবে।”
স্বাভাবিকভাবেই একই সুরে কথা বললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিনে সংবাদপত্রগুলিতে আমাদের বিজেপি ছাড়া নিয়ে বিভিন্ন লেখা বেরিয়েছে। তবে একথা বলে রাখি, এসবই মিথ্যা। বিজেপি ছাড়ার কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা বিজেপিতেই আছে। হ্যাঁ, আমার কিছু অভিমান, কষ্ট হয়েছিল। মুকুলদাকে সবটা জানিয়েছি। ওঁ শুনেছেন। এখন সমস্যা মিটে গিয়েছে।”
‘মুকুলদা’র পাশে বসেই বিজেপি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মুকুলদা আমার দাদার মতন। আমরা দিল্লিতে আসলেই ওঁর সঙ্গে দেখা করি। আজও করেছি। তৃণমূলে থাকাকালীনই আমি ওঁর পরামর্শ নিতাম। বিশেষ কিছু কারণে আমরা দুজনেই তৃণমূল ছেড়েছি। আজও কিছু সমস্যা হয়েছিল। কথা বললাম, মিটে গিয়েছে।”
প্রমাণ ছাড়াই মমতাকে গ্রেফতারের দাবি, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হল FIR
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ দুয়েক আগেই বৈশাখীকে নিয়ে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন শোভন। কিন্তু তার কিছুদিনের মধ্যেই তাঁদের সমস্যা হতে শুরু করে। যে আশা নিয়ে তাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন, তার কিছুই মেলেনি বলে উষ্মা প্রকাশ করতে থাকেন বৈশাখী। সংবাদমাধ্যমকেই তিনি বলেন, “যে কারণে তৃণমূল ছাড়া, সেই একই জিনিস যদি এখানে ঘটে, তাহলে কিছু বলার নেই। অপমান সহ্য করে তো পুরনো দলেই থাকা যেত!” যদিও শোভনের গলায় বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও কথা শোনা যায়নি। কিন্তু বৈশাখীর এহেন মন্তব্যের পরই তাঁদের বিজেপি ছাড়ার জল্পনা তুঙ্গে ওঠে।
অস্বস্তিতে পড়ে যায় বিজেপিও। দু’তরফের অস্বস্তি কাটাতে শেষমেশ ময়দানে নামেন মুকুল রায়। দীর্ঘ আড্ডাতেই মানভঞ্জন হয় শোভন ও তাঁর বান্ধবীর। বৈঠক শেষে জানিয়েও দেন, “শোভন-বৈশাখী বিজেপিতে ছিলেন, আছেন।”