ছুটি মেলেনি, ফেসবুক লাইভে 'সারপ্রাইজ ষষ্ঠী' জামাইয়ের, চমক দিলেন শাশুড়িও
শাশুড়ির কাছ থেকে পছন্দমতো ভূরিভোজের টাকা পেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন জামাইও।

নিজস্ব প্রতিবেদন : ডিজিটাল যুগে অনলাইন জামাইষষ্ঠী। ফেসবুকে লাইভে উপস্থিত জামাই। স্ক্রিনেই জামাইকে ফোঁটা দিলেন শাশুড়ি। চাকরির সুবাদে সশরীরে উপস্থিত হতে পারেনি জামাই। তাই বিকল্প ব্যবস্থা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন জামাইষষ্ঠীতে হাজির হলেন জামাই। জামাইষষ্ঠী হল, আর ভূরিভোজ হবে না? পছন্দমতো বিভিন্ন পদের টাকাও অনলাইনেই পৌঁছে গেল জামাইয়ের কাছে। জামাইয়ের পছন্দের বিভিন্ন খাবারের টাকা অনলাইনে জামাই বাবাজীবনের অ্যাকাউন্টে ফেলে দিলেন শাশুড়ি।
পূর্ব মেদিনীপুরের জামাই দেবীপ্রসাদ হাজরা। বিয়ের কয়েক দিন পরই চাকরির জন্য ঘর ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে। কর্মস্থল ১৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে হরিদ্বারে। এদিকে প্রথম বছর জামাইষষ্ঠী। শ্বশুরবাড়িতে আসবে জামাই। সে একেবারে রাজকীয় ব্যাপার স্যাপার। শাশুড়ির হাতে হরেক কিসিমের সুস্বাদু পদ। ভূরিভোজের এলাহি আয়োজন। কতশত ইচ্ছে ছিল! কিন্তু বাধ সাধল চাকরি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির দরখাস্ত করেও, ছুটি মঞ্জুর হয়নি।
ছুটি না পাওয়ায় শেষমেশ কি জলে যাবে জামাইষষ্ঠী? মন খারাপ শাশুড়ি থেকে মেয়ে-জামাই সবার। ষষ্ঠী করতে অগত্যা জামাইকে ছাড়া একা মেয়েকেই আসতে হয় বাপেরবাড়ি। এমনসময় মাথা খাটিয়ে উপায় বের করলেন জামাই। হাতে তো স্মার্টফোন রয়েছে! ব্যস, সেটাই হয়ে উঠল মুসকিল আসান। ফেসবুক লাইভে ধরা দিলেন জামাই। সশরীরে শ্বশুরবাড়ি আসতে না পারলেও, ষষ্ঠীর দিনে ভিডিও চ্যাটে জামাইকে দেখেই খুশি হয়ে উঠল শাশুড়ির মন। অনলাইনেই জামাইকে ফোঁটা দিলেন শাশুড়ি।
এখন জামাইষষ্ঠী মানেই ভূরিভোজ। ফল, মাছ, মাংস, মিষ্টি- হাজারো পদের সমাহার। জামাইয়ের জন্য ব্যাগভর্তি করে বাজার থেকে আসে আম, মিষ্টি। আসে জামাইয়ের পছন্দের মাছ, মাংস। নিজে হাতে সেসব রান্না করে জামাই বাবাজীবনকে খাইয়ে তবে শাশুড়ির তৃপ্তি। কিন্তু, এখানে তো জামাই আসতেই পারেননি শ্বশুরবাড়িতে। ষষ্ঠী হয়েছে অনলাইনে। তাহলে বাদ যাবে ভূরিভোজ? জামাই যখন অনলাইনে ষষ্ঠীর ব্যবস্থা করলেন, তখন শাশুড়িও আর পিছিয়ে থাকেন কেন? অনলাইনে জামাইয়ের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিলেন শাশুড়ি।
খামতি রইল না আর কোনও আয়োজনেরই। কথায় বলে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। ডিজিটাল যুগের জামাই হয়ে দেবীপ্রসাদ হাজরাও সেটাই করে দেখালেন। একমাত্র মেয়ের জামাইকে ফোঁটা দিতে পেরে দিলখুশ শাশুড়ির। ওদিকে শাশুড়ির কাছ থেকে পছন্দমতো ভূরিভোজের টাকা পেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন জামাইও।