Midnapur Shocker: পথের কাঁটা নিজেরই সন্তান, নির্মম অত্যাচারে আধমরা করে মাঠে ফেলে দিয়ে এল গৃহবধু-নতুন স্বামী, তারপর...
Midnapur Shocker: বেধড়ক মেরে শিশুটির দুটি হাত ভেঙে দেওয়া হয়। মাথায় আঘাত করা হয়। মৃত্যু হয়েছে জেনে ফেলে দেওয়া হয় মাঠে
কিরণ মান্না: দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন স্বামীর সাথে নির্বিঘ্নে ঘর বাঁধতে মা-এর কাছে নিজের ছোট্ট শিশুই পথের কাঁটা? সেই কাঁটা সরাতে গভীর রাতে শিশুকে ঘুম থেকে তুলে মুখ বেঁধে এলোপাতাড়ি মার নিজের মা ও সৎ বাবার। শিশুর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে ভেবে গুণধর স্বামী-স্ত্রী একটি ফাঁকা বাদাম চাষের মাঠের ঝোপের আড়ালে রাতের অন্ধকারে ফেলে দিয়ে আসে। সারারাত্রি সংগাহীন শিশু ঠান্ডার মধ্যে পড়েছিল মাঠে। ভেবেছিল রাতেই শেয়াল টেনে ছিঁড়ে খেয়ে দেহ লোপাঠ করে দেবে। কিন্তু টানা প্রায় ৮ ঘন্টার পর সকালে জ্ঞান ফিরে আসে শিশুটির। তাও আবার লাল পিপড়ের কামড়ে। কিছুটা দূরে একটি বাড়িতে শিশু নিজেই গুরুতর আহত অবস্থায় কোন রকমে কাঁদতে কাঁদতে পৌঁছায় আর ওই বাড়ির লোককে দেখে জল একটু খেতে চেয়েই ফের উঠোনে জ্ঞাণ হারায় শিশুটি। দুটো হাত ভাঙ্গা, গায়ে পায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, মাথায় ফোলা আঘাতের চিহ্ন সহ রক্তাক্ত শিশুকে দেখেই শিউরে ওঠেন ওই পরিবারের লোকেরা। এমন লোমহর্ষক ঘটনা চাউর হতেই ছুটে আসে গ্রামবাসীরা।এরপরই হাড় কাঁপানো নির্মম অমানবিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। উত্তেজনায় ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন-মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে পদপিষ্টের পরিস্থিতি, কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা, হুড়োহুড়িতে আহত বহু
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর থানা এলাকার উত্তর হলদিয়া গ্রামের খয়রান্ডা এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ তড়িঘড়ি শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। বালিসাই বড়রাঙকুয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। ছ বছরের শিশু সামান্য সুস্থ হতেই তার বয়ান শুনে শিউরে ওঠেন পুলিস থেকে গ্রামবাসীরা। শিশুটি এখন যথেষ্ট আতঙ্কিত।
মা মামনি গিরি ও সৎ বাবা সুকদেব মন্ডল। মারের চোটে শিশুর দুটো হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে, পিঠে পায়ে আঘাতের চিহ্ন, বিড়ির ছেঁকা দেওয়া হয়েছে কষ্ট দেওয়া হয়েছে শিশুকে। এমনটাই পুলিস সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পরিশেষে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় আঘাত করা হয়েছে । মাথায় আঘাত পেয়ে হাত ভাঙ্গার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে শিশুটি জ্ঞান হারায়। এরপর শিশুটি মারা গেছে ভেবে বাড়ি থেকে দু কিলোমিটার দূরে গভীর রাতে স্বামী স্ত্রী মিলে একটি চীনেবাদামের মাঠের ঝোপের আড়ালে ফেলে দিয়ে আসে শিশুকে। ভেবেছিল রাতেই শেয়াল টেনে ছিঁড়ে দেহ লোপাট করে দেবে। শীতের মধ্যে সারা রাত্রি শিশুটি মাঠে পড়ে থাকে। কিন্তু ভাগ্যের জোরে পিপড়ের কামড়ে শিশুটির সকালে রোদ উঠতেই জ্ঞান ফেরে।
পুলিস শিশুর মা ও সৎ বাবা কে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে। তার আগে নিজের ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টার কথা চাউর হতেই গ্রামবাসীরা ওই কীর্তিমান সৎ বাবা ও মাকে ধরে গণধোলাই দিয়েছে। জানা গিয়েছে শিশুর প্রকৃত বাবা অর্থাৎ মামনির নিজের স্বামী কার্তিক গিরির বছর পাঁচেক আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর উত্তর হলদিয়া গ্রামে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বাস করতেন মামনি। ফের আড়াই মাস আগে প্রেম করে সুকদেব মণ্ডল কে বিয়ে করে মামনি। এরপরই শিশুর সাথে অমানবিক অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল শিশুকে মারধর ও কষ্ট দেওয়া। শেষমেষ ঝঞ্ঝাট হটাতে ছ-বছরের শিশু সন্তানকে খুন করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় যুগল দম্পতি। এমনটাই পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তবে বিড়ি সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে শিশুকে কষ্ট দেওয়া। মারধর করে হাত ভেঙ্গে কষ্ট দেওয়া এটার পেছনে কি রহস্য রয়েছে তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ। আজ পুলিশ হেফাজত চেয়ে যুগলকে কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে। মা হয়ে নিজের ফুটফুটে সন্তানকে খুনের প্রয়াস করতে পারে এমনটি স্বপ্নেও ভাবতে পারছে না এলাকার মানুষজন। প্রত্যেকে চাইছেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক এমন স্বামী স্ত্রীর।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)