বন দফতরের নজরদারি সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গে চোরাশিকারের থাবা

বনকর্তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে উত্তর পূর্ব যোগের আশঙ্কা।

Updated By: Dec 25, 2018, 07:08 PM IST
বন দফতরের নজরদারি সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গে চোরাশিকারের থাবা

মৌপিয়া নন্দী

বনকর্তাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে ফের গণ্ডার চোরাশিকারের ঘটনা উত্তরবঙ্গে। এবার গরুমারা। বড়দিনের সকালে গরুমারা ফরেস্ট রেস্ট হাউসের অদূরেই পাওয়া যায় একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ গণ্ডারের মৃতদেহ। গণ্ডারের খড়গটি তার দেহ থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে। বনকর্তারা নিশ্চিত, এটি চোরাশিকারের ঘটনা। গণ্ডারের দেহ ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের খোঁজ পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে চোরাশিকার রোধে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর।

এই প্রথম নয়। উত্তরবঙ্গে চোরাশিকার গত কয়েক বছর ধরেই বনকর্তাদের মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে। গরুমারা ও জলদাপাড়া দেশের এক শৃঙ্গ গণ্ডারের যে চারটি বাসস্থান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। গত কয়েকবছরে বার বার এই দুই জঙ্গলে নেমে এসেছে চোরাশিকারির থাবা। ২০১৪ সালে গরুমারায় সাম্প্রতিক কালের প্রথম গণ্ডার চোরাশিকারের ঘটনা সামনে আসে। ২২ বছর পর সেটাই ছিল গরুমারায় প্রথম চোরাশিকার।

২০১৭ সালের এপ্রিলে গরুমারাতেই ২টি গণ্ডার চোরাশিকারের ঘটনা ঘটে। একই সময়ে জলদাপাড়াতেও একটি গণ্ডার চোরাশিকারের ঘটনা সামনে আসে।

এর আগে ২০১৫ সালে ৩ টি গণ্ডার চোরাশিকার হয় জলদাপাড়ায়।

বনদফতর ও নিরাপত্তা সংস্থা নজরদারি বাড়ানো সত্ত্বেও চোরাশিকার আটকানো যাচ্ছে না উত্তরবঙ্গে। বছর কয়েক আগে চোরাশিকারের ঘটনা ঘটে বক্সা টাইগার রিজার্ভ এলাকাতেও। গত বছর ডিসেম্বরেই বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ৩টি কুকুর পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গে। যার মধ্যে একটি বেলজিয়ান মেলিনয়েস প্রজাতির। ওসামা বিন লাদেনের হদিশ পেতে এই প্রজাতির কুকুরেরই সাহায্য নিয়েছিল মার্কিন নেভি।

আরও পড়ুন- চিনের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে 'মেড ইন ইন্ডিয়া'র বগিবিল সেতু

বনকর্তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে উত্তর পূর্ব যোগের আশঙ্কা। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জলদাপাড়ায় চোরাশিকারে যুক্ত সন্দেহে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে ছিল অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা এক শার্প শ্যুটার। এর আগে চোরাশিকারিদের কাছ থেকে একে ৪৭ এর মত আধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে উত্তরবঙ্গে। কয়েকদিন আগেই বক্সায় চোরাশিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে বনকর্মীর গুলিতে জখম হন আরেক বনকর্মী। সবমিলিয়ে বাড়তে থাকা চোরাশিকার ঘুম ছোটাচ্ছে বনকর্তাদের । যদিও বনদফতর নজরদারির অভাবের জন্য কর্মীপদ শূণ্য থাকাকেই দায়ী করছেন।

 

.