ভারতীয় ক্রিকেটে যুগান্তকরী সিদ্ধান্ত, লোধা কমিটির যাবতীয় প্রস্তাব মেনে বিসিসিআই-তে সংস্কারের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
ভারতীয় ক্রিকেটে যুগান্তকরী সিদ্ধান্ত। লোধা কমিটির যাবতীয় প্রস্তাব মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট। এই বিষয়ে সোমবার তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েদিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের দুই সদস্যের ডিভিসন বেঞ্চ। দেশের কোনও মন্ত্রী বিসিসিআইয়ের কোনও পদে থাকতে পারবেন না। সত্তরউর্ধ্ব কোনও ব্যাক্তিও বোর্ডের কোনও পদে থাকবেন না।
এক রাজ্য পিছু এক ভোট চালু হচ্ছে। যে সমস্ত রাজ্যে একাধিক অ্যাসোসিয়েশন আছে তারা রোটেশন পদ্ধতি মেনে ভোট দিতে পারবে।বিসিসিআইকে ছমাসের মধ্যে রায় কার্যকর করতে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ক্রিকেটকে পরিচ্ছন্ন করতে লোধা কমিটির অভিনব দাওয়াই---
বোর্ডের প্রশাসনে মন্ত্রী,সরকারি আমলাদের ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তাব করেছে আর এম লোধার কমিটি। প্রস্তাবে বলা হয়েছে কোনও বোর্ড কর্তা পরপর দুবারের বেশি পদে থাকতে পারবেন না। সব মিলিয়ে তিনটি টার্মের বেশি কেউ বোর্ডের পদে থাকতে পারবেন না।
আরও পড়ুন-লোধা কমিটি নিয়ে কী বলেছিল সিএবি
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সত্তর বছরের পর বিসিসিআই ছাড়তে হবে সকলকে। পাশাপাশি এক রাজ্য থেকে একটি অ্যাসোসিয়েশনকেই বোর্ডের পূর্ণসদস্য করার প্রস্তাব দিয়েছে লোধা কমিটি। এই প্রস্তাবে বিপাকে পড়েছে বিসিসিআই। এর ফলে বেশ কিছু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অস্তিত্ব সংকটে। সুপ্রিম কোর্ট লোধা কমিটির প্রস্তাব মেনে নিলে বোর্ড সভাপতি শশাঙ্ক মনোহরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের অস্তিত্ব থাকবে না। বিলুপ্ত হয়ে যাবে সৌরাষ্ট্র,বরোদার মতন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। আবার ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরতে পারে বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। সার্ভিসেস, রেলওয়েজের,ইউনিভার্সিটির ভোটাধিকার লোপের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। বোর্ড কর্তাদের তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় ফেলার প্রস্তাবও রেখেছে লোধা কমিটি। যদিও বোর্ডকর্তারা ঠিক করে ফেলেছেন অনেক সুপারিশেরই বিরোধীতা করা হবে সুপ্রিম কোর্টে।
২০১৩ সালে স্পট ফিক্সিং নিয়ে সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। অনেকেই আইপিএল তুলে দেওয়ার দাবি করেছিলেন। বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টকে। ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে নির্বাসিত হয়েছিলেন শ্রীসন্থ,চান্ডিলারা। সেই বেটিংকেই বৈধ করার যে প্রস্তাব দিল লোধা কমিটি। আর এই প্রস্তাবকে ঘিরে তৈরি হল বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে ভারতের আইনে আদৌ কি বেটিংকে বৈধ ঘোষণা করা সম্ভব।
ক্রিকেট স্বচ্ছ করার স্বার্থে বেশি করে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের কাজে লাগানোর প্রস্তাব করল লোধা কমিটি। এজন্য প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মহিন্দার অমরনাথ,ডায়না এডুলজি ও অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে এই কমিটি ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করবে। বিসিসিআইয়ের আর্থিক সহযোগিতায় চললেও এই কমিটি বোর্ডের কথায় চলবে না। লোধা কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে ক্রিকেটারদের বক্তব্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। মহিন্দার অমরনাথদের স্টিয়ারিং কমিটির মাথায় থাকবেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব জি কে পিল্লাই।
ক্রিকেটীয় বিষয়ে যেমন প্রাক্তন ক্রিকেটার মতামত প্রাধান্য পাবে তেমনি অন্যান্য বিষয়গুলি দেখবেন সিইও। আর স্বার্থ সংঘাতের বিষয়টিতে সব সিদ্ধান্ত নেবেন এথিক্স অফিসার।