Andy Roberts vs Kapil Devils: 'কপিলস ডেভিলস' কপাল জোরে বিশ্বকাপ জিতেছিল! ৪০ বছর পরেও অ্যান্ডি রবার্টসের কটাক্ষ
সেই ফাইনালে লয়েড টসে জিতে কপিলের দলকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন। তবে অ্যান্ডি রবার্টস (৩/৩২), জোয়েল গার্নার (১/২৪), মাইকেল হোল্ডিং (২/২৬) ও ম্যালকম মার্শালের (২/২৪) দাপটে ভারতের ইনিংস মাত্র ১৮৩ রানে শেষ হয়ে যায়। সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেছিলেন কৃষ শ্রীকান্ত।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৯৭৫, ১৯৭৯ সালের পর ১৯৮৩। সেবার লর্ডসে (The Lords) আয়োজিত মেগা ফাইনাল জিতলেই প্রবল প্রতাপশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies) কাছে বিশ্বকাপ জয়ের হ্যাটট্রিক করার সুযোগ ছিল। তবে সেই কাপ যুদ্ধের ফাইনালে সব হিসেব পালটে দিয়েছিল 'কপিলস ডেভিলস' (Kapils Devils)। রুদ্ধশ্বাস মেগা ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৩ রানে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ভারতীয় দল (India)। ক্লাইভ লয়েডের (Clive Lloyd) তারকাখচিত ক্যারিবিয়ানদের নাস্তানাবুদ করে ট্রফি হাতে তুলেছিলেন কপিল দেব (Kapil Dev)। সেই হারের দগদগে ঘা ৪০ বছর ধরে বয়ে বেড়াচ্ছেন অ্যান্ডি রবার্টস (Andy Roberts)। তাই তো প্রাক্তন প্রবাদপ্রতিম জোরে বোলারের দাবি, কপাল জোরে সেবার ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল!
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবার্টস বলেছেন, "আমরা ভারতের কাছে ফাইনালে হার মেনেছিলাম। আমরা সবাই জানি ক্রিকেট মহান অনিশ্চয়তার খেলা। তুমি কখনও জিতবে, আবার কখনও হারবে। কোনও দল আধিপত্য বজায় রেখে আমাদের হারায়নি। ম্যাচ যতক্ষণ চলবে ততক্ষণ ম্যাচের শীর্ষে থাকতে হবে। ভারতের ইনিংস পর্যন্ত আমরা ম্যাচের উপরে প্রাধান্য রেখেছিলাম। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে আমরা দু’বার হেরে যাই। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩– এই বিশ্বকাপের মধ্যে আমরা কেবল দুটো ম্যাচ হেরেছি। আর দুটোই ভারতের বিরুদ্ধে।”
রবার্টস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪৭টি টেস্ট এবং ৫৬টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন। টেস্টে তাঁর উইকেট সংখ্যা ২০২ এবং ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ৮৭টি উইকেট। কিংবদন্তি ক্যারিবিয়ান পেসার বলছেন, "আমরা সবাই দারুণ ফর্মে ছিলাম। কিন্তু একটা বাজে ম্যাচ সব শেষ করে দেয়। ১৯৮৩ সালের ফাইনালে ভারতের ভাগ্য কাজ করেছিল। সেবারও আমাদের দল খুব শক্তিশালী ছিল। দুটি ম্যাচ হেরেছিলাম আর দুটিই ভারতের কাছে। বিশ্বকাপের কয়েকমাস বাদে আমরা ভারতকে ৬-০ হারিয়েছিলাম। বোঝাই যাচ্ছে, ওই একটা ম্যাচ আমাদের অনুকূলে যায়নি। ১৮৩ রানে ভারত শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ভাগ্য ওদের সহায় ছিল। দাপট দেখিয়ে আমাদের হারায়নি। আমরা ম্যাচটা হেরে গিয়েছিলাম। তবে আতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বা আত্মতৃপ্তি গ্রাস করেনি।"
আরও পড়ুন: IND vs PAK, Asia Cup 2023: কবে এশিয়া কাপের 'মাদার অফ অল ব্যাটল'? চলে এল বড় আপডেট
আরও পড়ুন: Team India: বার্বাডোজে স্যর সোবার্সের ক্লাসে বিরাটরা! মন ছুঁয়ে নেওয়া ভিডিয়ো নিমেষে ভাইরাল
কোনও ভারতীয় ব্যাটারদের দেখে প্রভাবিত হননি রবার্টস। সেটাও স্পষ্ট জানিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান পেসার। রবার্টস ফের যোগ করেন, "কোনও ভারতীয় ব্যাটারের ব্যাটিং আমাকে খুশি করতে পারেনি। কেউ অর্ধ শতরান করেনি। কোনও বোলার পাঁচ উইকেট নেয়নি। চারটি উইকেটও পায়নি কেউ। ফলে ব্যক্তিগত ভাবে আমি মোটেও প্রভাবিত হইনি ভারতীয়দের খেলা দেখে। দুরন্ত ইনিংস খেললে তবেই একজন ব্যাটার নজর কাড়তে পারে। ভারতের কেউই তা করতে পারেনি। তবুও ওরা বিশ্বকাপ জিতেছিল। এটা কপালের জোরে বিশ্বকাপ জয় ছাড়া আর কি বলতে পারেন।"
সেই ফাইনালে লয়েড টসে জিতে কপিলের দলকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন। তবে অ্যান্ডি রবার্টস (৩/৩২), জোয়েল গার্নার (১/২৪), মাইকেল হোল্ডিং (২/২৬) ও ম্যালকম মার্শালের (২/২৪) দাপটে ভারতের ইনিংস মাত্র ১৮৩ রানে শেষ হয়ে যায়। সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেছিলেন কৃষ শ্রীকান্ত। একমাত্র অফ স্পিনার ল্যারি গোমসের ঝুলিতে এসেছিল ৪৯ রানে ২ উইকেট। ৬০ ওভারে ১৮৪ রান চেজ করে কাপ যুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন হওয়া মোটেও কঠিন ছিল না। তবে মদন লাল, মোহিন্দর অমরনাথ, বলবিন্দর সিং সান্ধুর দাপুটে বোলিংয়ের সৌজন্যে মাত্র ১৪০ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস। একটা সময় ম্যাচ ভিভ রিচার্ডস জাঁকিয়ে বসলেও মদন লালের বলে ডিপ স্কোয়ার লেগে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন কপিল। সেখান থেকেই ঘুরে যায় ম্যাচ। বিশ্বজয়ী হয় ভারত। তবে সুনীল গাভাসকর-রজার বিনিরা ইতিহাস তৈরি করলেও, সেটা এখনও মানতে পারছেন না অ্যান্ডি রবার্টস। আর তাই তো ৭২ বছর বয়সে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন।