1/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288547-dab-205007-1.jpg)
অনুসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়: ''যে মানুষটার সঙ্গে ৬০ বছরের মত আলাপ, সেই ১৯৫৯ থেকে, তাঁকে নিয়ে কী আর বলব। পরিবারেরই একজনকে হারালাম। এত ঘটনা, এত স্মৃতি, এত ছবি, এত মুহূর্ত, কত বলব ওনাকে নিয়ে...। ভীষণই খারাপ লাগছে। শেয়ার করার মত অনেক ঘটনা রয়েছে। ওনার উপর একটা তথ্যচিত্র হচ্ছে, সেটার বিষয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষবার দেখা হয়েছিল। বিভিন্ন লোকজন ছিলেন। আমি তখনও তরতাজা দেখিছি। আমি আর বেনু (সব্যসাচী চক্রবর্তী) ছিলাম ওকে বাবার ছবি (সত্যজিৎ রায় ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছিলাম, কথাবার্তা হচ্ছিল। উনি তো চিরকালই ভালো কথা বলেন। বাবার (সত্যজিৎ রায়) সম্পর্কে নানান কথা বলছিলেন। সেগুলিই রেকর্ড হচ্ছিল।''------ পরিচালক সন্দীপ রায়
2/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288550-6c929a79-cd33-485b-b319-b6134c358c27.jpg)
''বাংলা সিনেমা আজ অভিভাবকহীন হয়ে গেল। একটা বটগাছের মত ছিলেন। একটা অপূরণীয় ক্ষতি। উনি সবসময়ই কাজ করতে চাইতেন। যে মানুষটা নিজের জন্মদিনও উদযাপন করেননি, কাজের মধ্যে দিয়েই উনি জন্মদিন উদযাপন করেছেন। কোনও দিনটা যেন অলসতার মধ্যে দিয়ে না কাটে, সেটা খেয়াল রাখতেন। আমার কাছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এমনই একজন মানুষ। কোনো রোগ, অসুস্থতা ওনাকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। সেইটা আমাকে এই দীর্ঘসময় ধরে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল, উনি এটা পছন্দ করতেন না। ওনার নাতিকে নিয়ে যখন পরিবারে কঠিন সময় গেছে, তখনও তিনি পোস্ত-র শ্যুটিং করেছেন। ওনার স্ত্রীও যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তখনও ভেঙে পড়ার কথা বলেননি, কাজ করেছেন। ওনার ব্যক্তিগত জীবনে কোনও উদ্বেগের জায়গাই কখনও জানতে দেননি। সত্যিই উনি একটা উদাহরণ। আরও অনেককিছুই আছে, এত স্বল্প পরিসরে বলা যাবে না। একটা কথাই বলব, স্যার, ভালো থাকবেন।''-----------শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
photos
TRENDING NOW
3/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288521-maxresdefault.jpg)
''পৌলমী মার কাছে নাচ শিখতেন, তখন সৌমিত্রদা পৌলমীকে নিয়ে আসতেন। যেমন অন্য অভিভাবকরা আসতেন, তেমনই। আমার মা-বাবার খুবই কাছের ছিলেন। সেই সময় থেকেই পরিচিতি। এত ছবি করেছি ওনার সঙ্গে, এমন মানুষ দেখিনি। যেমন অভিনয়, তেমন জ্ঞান, তেমন লেখা, শ্যুটিংয়ে যতক্ষণ থাকতাম, প্রতিমুহূর্তে শিখতাম। প্রথমদিকে অত বুঝতাম না, পরে ওনাকে শুধু দেখতাম, শেখার চেষ্টা করতাম। অনেক ঘটনা মনে পড়ছে, অনেক ঘটনা...। শান্তনা দেওয়ার ভাষা নেই, আর কিছুই বলার নেই...(ধরা গলায়)।------ নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর''
4/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288503-5ade34ee-91ca-4e16-a644-e8d3a2afd753.jpg)
''আমি বুঝতে পারছি না কী বলব। এত বড় ক্ষতি। আমি খুব কষ্টে আছি কী বলব বুঝতে পারছি না। আমি সৌভাগ্যবতী যে আমি তিনটে ছবি করেছি, তিনটেই সৌমিত্রদার সঙ্গে। আর কোনও ছবিই করিনি সেইরকম। সৌমিত্রদাকে তো আমি শুধু অভিনেতা হিসাবে চিনতাম না, উনি জীবনশিল্পী ছিলেন। যেমন কবিতা লিখতে, তেমন পাঠ করতেন, তেমন অভিনয়, ভোজনরসিক ছিলেন, কত আড্ডা, কত হাসির স্মৃতি...'' অভিনেত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত
5/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288501-4b9e7430-e881-4d71-8d46-45087280bbe3.jpg)
''যখন খুব কাছের মানুষ চলে যায়, মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়, ঠিক কী করবে, বলবে বুঝতে পারে না। আমারও অবস্থা ঠিক তেমনই। কী বলব বুঝতে পারছি না। মনটা অনেকদিন ধরেই খারাপ ছিল। উনি অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। যখনই উনি অসুস্থ হয়েছেন, আমি প্রার্থনা করেছি, যাতে উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যান। এই লম্বা জীবনের পরিসরে উনি অনেকবারই অসুস্থ হয়েছেন, তবে আমাদের সকলকে হাসিয়ে ফিরে এসেছেন। আমাদের নিরাশ করেননি। তবে আজকে নিরাশ হলাম (গলা ধরে এল)। ২৫-২৬ বছর আগে যখন অভিনয় করে এসেছিলাম, তখন থেকেই সৌমিত্র কাকুর ভালোবাসা পেয়েছি। এত ভালোবাসা, আবেগ, শিক্ষা আর কারোর কাছে পেয়েছি কিনা জানি না। আমি ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত দেখেছি ওনাকে। পরিচালক শিশির মজুমদারের শেষ চিঠি বলে একটা ছবিতে তনুজা আন্টি আর সৌমিত্র কাকুর সঙ্গে কাজ করেছিলাম, প্রথমদিকে ভয়ে ভয়ে থাকতাম। সেটা অনেকবছর আগে। তখন উনি অনেক ইয়ং। পরবর্তীকালে কাকুর সঙ্গে যখন আরও কাজ করেছি, বলেছিলাম, এত হ্যান্ডসাম ম্যান কম দেখেছি। রঙিন শার্ট পরতেন। আমি মজা করে জিজ্ঞাসা করতাম, এইটা তোমায় কোন গার্লফ্রেন্ড দিয়েছে? উনিও মজা করে বলতেন এটা জার্মানি থেকে আমায় পাঠিয়েছে। কত গল্প বলতেন, কবিতা বলতেন। কিছুদিন আগে বসু পরিবার ছবির শ্যুটিং করছিলাম। অপর্ণা সেন ও সৌমিত্র কাকুর কথা শুনছিলাম, কেউ জীবনানন্দ বলছে, তো কেউ রবীন্দ্রনাথ পাঠ করছেন। কী অসাধারণ! অদ্ভুত সময় কেটেছে। অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসছে, আর কত বলব। এত স্মৃতি না, আরোহন করেছি, পারমিতার একদিন, বেলাশেষের মত ছবি করেছি। তারপর বসু পরিবার। বেলাশুরু ছবিটাও মুক্তি পাবে। আন্তর্জাতিক মাপের অভিনেতা। নক্ষত্রপতন তো বটেই...। আন্তর্জাতিক স্তরে, জাতীয় স্তরেও অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন। তবে বাংলা ভাষা, কবিতা, ছবিতে এতভালো বাসতেন, সেগুলোকে আঁকড়ে ছিলেন। বাংলা ভাষাকে কোথায় পৌঁছে দেওয়া যায়, উনি কবিতা, লেখা, অভিনয় সবকিছু দিয়েই দেখিয়ে দিয়েছেন। ওনার মধ্যে একটা ভালো মানুষ ছিল। মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করতেন, তখন ওনার আন্তরিক আশীর্বাদ অনুভব করতে পারতাম। যেখানে থেকো ভালো থেকো, এটাই বলব...''------ অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
6/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288490-saj-dev-main-png710x400xt.jpg)
''ভীষণই দুঃখজনক ঘটনা। বাংলার সিনেমা জগতের বড় ক্ষতি। আমার সঙ্গে ওনার সম্পর্ক সাঁঝবাতির পর থেকে অনেকটাই ভালো। কারণ, কাজের সময় অনেক কথা হত। উনি অভিনয়ের ক্ষেত্রে উনি নিজেই একটা সিলেবাস, একটা প্রতিষ্ঠান। কাজের সময় ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমরা এখনও মনে আছে, একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, মুম্বই থেকে একজন এসে নাচছিল। আমায় উনি বললেন, ও কি করছ, তুই গিয়ে ওর থেকে ভালো নাচবি। আমরা কি কম নাকি। উনি এভাবেই আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা। আজকে উনি চলে যাওয়ার পর আমার ব্যক্তিগতভাবেও অনেকটা ক্ষতি হল, কারণ, কাজের কথাবার্তা চলছিল। আমি হবুচন্দ্ররাজা গবুচন্দ্রমন্ত্রী বলে যে ছবিটার প্রযোজক, ওই ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। ওনার সঙ্গে আমার এটাই শেষকাজ। একজন মানুষ, যিনি শেষপর্যন্ত কাজ করে গিয়েছেন। সাঁঝবাতির সময় উনি পুরোদমে কাজ করেছেন, কখনও ক্লান্ত মনে হয়নি ওনাকে। এই বয়সে গিয়েও যে এনার্জি...। উনি সবাইকে নিয়ে চলতে জানতেন। আমার মত যাঁরা ভালো অভিনয় করতে পারে না, তাঁদেরকেও যেভাবে হেল্প করা যায় ওনি সেটা করতেন। ওনার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্যিই আমার কাছে ভীষণই ভালো। আমি ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।''------ সাংসদ, অভিনেতা দেব
7/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288504-78398882.jpg)
''এত খারাপ খবর পাব ভাবিনি। অনেক লড়াই করছিলেন। আমরা ভেবেছিলাম, উনি লড়াই করে আবারও ফিরে আসবেন। সেটা হল না। এটা একটা বাংলা সিনেমা নয়, গোটা দেশের চলচ্চিত্র জগতেরই বড় ক্ষতি। জ্যেঠুর সঙ্গে ছোট থেকেই অনেক ছবিতে কাজ করেছি। বেশকয়েকটা শর্ট আমার মনে পড়ে। একবার ওনার পাশে দাঁড়িয়ে কবিতা বলার ছিল, খুব নার্ভাস হয়ে যাচ্ছিলাম, বারবার মনে হচ্ছিল এতগুলো লাইন কীভাবে বলব। জ্যেঠু নিজে পাশে থেকে আমাকে যেভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন, ঠিক তারপরেই শটটাই ওকে হয়ে গেছিল। গয়া স্টেশনের ধারে একটা দৃশ্য ছিল একবার। যে এক পকেটমার জ্যেঠুর পকেট থেকে ওয়ালেট নিয়ে পালাবে। আমি তাকে ধরব, পকেটমার ধাক্কা মেরে আমায় ফেলে দেবে। ওখানকার পুলিস ভাবে সত্যি ঘটনা, পকেটমারকে ধরে মারে। তখন বোঝানো হয় শ্যুটিং চলছে। এইরকমই অনেক স্মৃতি আছে। জ্যেঠুর সঙ্গে শেষবার চাঁদেরবাড়ি করেছিল। তারপর অনেক জায়গায় দেখা হয়েছে। ওই যে জ্যেঠু ডাকতেন, হ্যাঁ রে বাবা কেমন আছিস রে? ওই ডাকটা কোনওদিনও ভুলব না। ওই স্নেহ, অদ্ভুত ভালোবাসা, মানুষটা যে হঠাৎ করে চলে যাবেন ভাবিনি। আমি নিজেও হাসপাতালে ভর্তি, তাই যেতে পারছি না। ওনি যেখানে থাকুন ভালো থাকুন। মন খারপ তো লাগছে। ওনার জায়গা পূরণ হবে না। যতদিন সিনেমা বেঁচে থাকবে, ততদিন উনি থাকবেন।''------অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী
8/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288487-2fc503ea-7e13-4cd5-95da-274f24897a2f.jpg)
''যবে থেকে সৌমিত্র জ্যেঠুর অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়েছি, তখন থেকেই আমাদের সবার প্রার্থনার মধ্যেই ছিল যাতে উনি যাতে সুস্থ হয়ে ওঠেন। দুর্ভাগ্য আমাদের যে আজকের দিনটি দেখতে হল। তবে আমার মনে হয় ওনার কাজটা মনে রাখব। এতবছর ধরে উনি বিনোদন জগতের সঙ্গে রয়েছেন, এত ভালো ভালো ছবি করেছেন, এত বড় অভিনেতা উনি, এটাই আমরা সারাজীবন মনে রাখব। ওনার জীবনকে উদযাপন করব। আর আমার স্বল্প কেরিয়ারের মধ্যে আমার সৌভাগ্য যে আমি ওনার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি।'' ------সাংসদ, অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী
9/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288480-2e424b56-886e-4413-a09a-125f35acb478.jpg)
''বলতে গেলে বাবার পর আবারও মাথার উপর থেকে ছাতা সরে গেল। অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন, এই যাওয়াটা ভালোই হল, উনি তো কষ্ট পেলেন না, যা পেলাম আমরা আশেপাশের লোকজন পেলাম। উনি অনেকদিন ধরেই কোমাতে ছিলেন বলে আমার ধারনা। তবে উনি তো শুধু অভিনেতা ছিলেন না। সাহিত্যিক ছিলেন, নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক ছিলেন, এতরকম প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ, বলতে গেলে উনি নিজেই একজন প্রতিষ্ঠান।'' ------ অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
10/10
![](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/11/15/288478-119172.jpg)
''সৌমিত্রবাবুর চলে যাওয়া বাংলা তথা ভারতবর্ষের এমনকি আন্তর্জাতিক ছবির ক্ষেত্রেও একটা বিরাট ক্ষতি। সৌমিত্রবাবু শুধু একজন অভিনেতা নন। সৌমিত্রবাবু, একজন নাট্যকার, আবৃত্তিকার, একজন কবি, উনি এমন একজন মানুষ যাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক দর্শন ছিল। সবমিলিয়ে এমন মানুষ তো দুর্লভ। গোটা পৃথিবীতেই দুর্লভ। তাঁর চলে যাওয়া অবশ্যই আমাদের কাছে বেদনাদায়ক। অনেকদিন রোগে ভুগছিলেন, সেটার থেকে মুক্তি পেলেন। এইরকম একজন মানুষ আর পাব কিনা জানি না। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র জগতের একটা বড় ক্ষতি।'' ------পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়
photos