২১ বছরের পুরনো দুর্নীতি মামলার ভূত পিছু ছাড়ল না শশীকলার
২১ বছরের পুরনো দুর্নীতি মামলার ভূত পিছু ছাড়ল না শশীকলার। ৪ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিল শীর্ষ আদালত। হাজতবাস আর তার সঙ্গে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের গেরোয় অনিশ্চিত চিন্নাম্মার রাজনৈতিক ভবিষ্যত।
ওয়েব ডেস্ক: ২১ বছরের পুরনো দুর্নীতি মামলার ভূত পিছু ছাড়ল না শশীকলার। ৪ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিল শীর্ষ আদালত। হাজতবাস আর তার সঙ্গে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের গেরোয় অনিশ্চিত চিন্নাম্মার রাজনৈতিক ভবিষ্যত।
সালটা ১৯৯১। প্রথমবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হলেন জয়ললিতা। আর গদিতে বসার পরই দুর্নীতির অভিযোগ। কালি লাগে আম্মার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী শশীকলার গায়েও। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সাড়ে ৬৬ কোটি টাকা সম্পত্তির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
২০০৩-এ সুপ্রিম কোর্টে DMK-এর তরফে বলা হয়, জয়ললিতা মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তামিলনাড়ুতে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার সঠিক বিচার সম্ভব নয়। মামলা কর্নাটকে সরানো হোক। নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলা যায় বেঙ্গালুরুর আদালতে। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন জয়ললিতা, শশীকলা, জয়ললিতার পালিত পুত্র সুধাকরণ এবং তাঁর আত্মীয় এলাবরসি। সুপ্রিম কোর্ট ৪ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়ায় জয়ললিতাকে গদি ছাড়তে হয়। জেলে যান আম্মা-শশীকলা।
আরও পড়ুন
-
ঘাড় ও পিঠের ব্যথা নিত্যসঙ্গী? বদহজমে শরীর বরবাদ? জানুন কী করবেন
-
জানেন কীভাবে ঘুমালে আপনার অনেক শারীরিক সমস্যার সমাধান হবে?
২০১৫-র মে মাসে কর্নাটক হাইকোর্ট জয়ললিতা, শশীকলা ও বাকি দু-জনকে মুক্তি দেয়। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় কর্নাটক সরকার। কর্নাটক হাইকোর্টের রায় খারিজ করে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট শশীকলার ৪ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সাড়ে তিন বছর জেলে কাটবে চিন্নাম্মার। জেল থেকে বেরিয়ে আরও ৬ বছর ভোটে লড়তে পারবেন না তিনি।
১৯৫১-র জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারা বলছে, আদালতের নির্দেশে আইনসভার কোনও সদস্যের কমপক্ষে দুবছর কারাদণ্ড হলেই তাঁকে পদ ছাড়তে হবে। হাজতবাসের পর আরও ৬ বছর তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। কিন্তু একইসঙ্গে আইনের ৮(৪) ধারায় বলা হয়, পদ খারিজের আগে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য দোষী সাব্যস্ত জনপ্রতিনিধি ৩ মাস সময় পাবেন। আইনের এই ফাঁকটুকুর সুযোগ নিয়ে উচ্চ-আদালত থেকে শাস্তির ওপর স্থগিতাদেশ বের করে পার পেয়ে যেতেন জনপ্রতিনিধিরা।
২০১৩-র ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৪) ধারা অসাংবিধানিক বলে রায় দেয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, নিম্ন আদালতে ২ বছর কারাদণ্ড হলেই জনপ্রতিনিধিকে পদ ছাড়তে হবে। হাজতবাসের পর আরও ৬ বছর তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না।
শশীকলা জনপ্রতিনিধি নন। তবে, চার বছর হাজতবাসের নির্দেশের পর তিনি আর মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। জয়ললিতা বেঁচে থাকলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তাঁকেও আবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি মামলায় ৪ বছর কারাদণ্ডের আদেশের পর জয়ললিতাকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়।
২০১৩-র অক্টোবরে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে ৫ বছর হাজতবাসের নির্দেশের পর লোকসভার সদস্য পদ যায় লালুপ্রসাদের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের গেরোয় পড়েন একাধিক রাজনীতিবিদ। জয়ললিতা, লালুপ্রসাদ-সহ সংখ্যাটা এখনও পর্যন্ত ৯।