গেহলটের কৌশল প্রকাশ্যে! বিধানসভা অধিবেশনের বিরোধিতা না করেও সরকারকে ৩ প্রশ্ন রাজ্যপালের
অধিবেশন ডাকার পেছনে গেহলট রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, করোনা নিয়ে তিনি একটি অর্ডিন্যান্স জারি করতে চলেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের কৌশলে ফের বাধ সাধলেন রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বিধানসভা অধিবেশন ডাকার অনুরোধ জানান। যুক্তি ছিল, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি-সব বেশ কিছু বিষয়ে বিধানসভায় আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী ওই কথা বললেও রাজ্য রাজনীতিতে গেহলটের কৌশল চাপা ছিল না। এবার সেখানেই পাল্টা আঘাত করলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন-ইদের উপহার! এক-দুটো নয়, বাংলাদেশকে ১০টি রেল ইঞ্জিন পাঠাল ভারত
রাজ্যপাল আজ জানিয়েছেন, বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে তাঁর নীতিগত কোনও আপত্তি নেই কিন্তু এনিয়ে তাঁর ৩টি প্রশ্ন রয়েছে সরকারের কাছে।
কী সেই প্রশ্ন?
কলরাজ মিশ্র প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কি চাইছেন এই অধিবেশনেই আস্থা ভোট করতে? সরকারের দেওয়া প্রস্তাবে তার কোনও উল্লেখ না থাকলেও গেহলট প্রকাশ্যে আস্থাভোটের কথাই বলছেন।
রাজ্যপালের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে গেহলট ৩১ জুলাই থেকে বিধানসভার অভিবেশন ডাকার কথা বলেছিলেন। এনিয়ে কলরাজ মিশ্রের দ্বিতীয় প্রশ্ন, করোনার এই মহামারীর সময়ে এত কম সময়ে সব বিধায়কের পক্ষে বিধানসভায় যোগ দেওয়া মুসকিল। অধিবেশনের জন্য আপনি অন্তত বিধায়কদের ২১ দিন সময় দিতে পারেন?
করোনা মহামারীকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যবিধির কথা কথা তুলেছেন রাজ্যপাল। কলকাজ মিশ্রের প্রশ্ন, বিধানসভার অধিবেশন বসলে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে কীভাবে?
এদিকে, রাজস্থান বিধানসভার স্প্রিকারের ক্ষমতা নিয়ে আজ মামলা উঠেছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যপাল আগেই রাজ্য হাইকোর্টে হওয়া মামলার কথা টেনে সচিন-সহ ১৯ বিধায়কের বিধায়ক পদ খারিজের বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছিলেন।
শুক্রবার পর্যন্ত আস্থাভোটের জন্য রাজ্যপালের কাছে চাপাচাপি করার পর কৌশল পরিবর্তন করেন গেহলট। আস্থাভোটের পরিবর্তে তিনি বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য রাজ্যপালকে অনুরোধ করেন। আইন অনুযায়ী রাজ্যপাল ওই অধিবেশন ডাকতে বাধ্য। রাজনৈতিক মহলের ধারণা গেহলট শিবির চাইছে, যে কোনও মূল্যে সচিন পাইলট শিবিরকে সময় না দেওয়া। তাই সাততাড়াতাড়ি সুপ্রিম কোর্টে দৌড়েছেন স্পিকার। পাশাপাশি, এবার অধিবেশনের পক্ষে সায় দিয়েও যে ২১ দিন সময় গেহলটকে দিতে বলছেন তাতেও চাপ তৈরি হয়ে যাবে গেহলট শিবিরে।
আরও পড়ুন- আপনি আস্থা ভোট চান কি চান না? গেহলটের প্রস্তাব ফিরিয়ে পাল্টা প্রশ্ন রাজ্যপালের, চরমে সংঘাত
অধিবেশন ডাকার পেছনে গেহলট রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, করোনা নিয়ে তিনি একটি অর্ডিন্যান্স জারি করতে চলেছেন। সেখানে ভোটাভুটির জন্য দলের বিধায়কদের হুইপ জারি করবেন। ফলে ওই হুইপ মেনে সচিন পাইলট ও তাঁর অনুগামীদের ভোটাভুটিতে থাকতে হবে। সেক্ষত্রে অনুপস্থিত থাকলে বা বিপক্ষে ভোট দিলে দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ এনে তাদের বিধায়কপদ খারিজ করে দেওয়া যেতে পারে। সেই কৌশলের দিকটি কোনও রাখঢাক না করেই আজ উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। ফলে রাজস্থানে রাজনীতির বল ফের অন্যদিকে গড়িয়ে গেল। এখন গেহলটট কী করেন সেটাই দেখার।