Railway recruitment scam: স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন গোনা-ই কাজ! রেলে চাকরির নামে আড়াই কোটির ফাঁদ
প্রত্যেক প্রার্থী সুব্বাস্বামীকে ২ লাখ থেকে ২৪ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা দেন। যিনি আবার বিকাশ রানা নামে একজনকে সেই টাকা দিয়েছিলেন। এই বিকাশ রানা নিজেকে দিল্লিতে উত্তর রেলওয়ে অফিসে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। যদিও টাকা আদায়ের জন্য বিকাশ রানা সবসময় তাঁদের সঙ্গে বাইরে দেখা করতেন। কখনও রেল ভবনের ভেতরে নিয়ে যাননি।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন গুনতে হবে! এটাই কাজ! আর এই অভিনব কাজের টোপ দিয়েই চাকরির নামে পাতা হয়েছিল ফাঁদ। আড়াই কোটি টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ সামনে আসতেই পর্দাফাঁস হল গোটা ঘটনার। অভিযোগ, তামিলনাড়ুর অন্তত ২৮ জন চাকরিপ্রার্থীকে এক মাস ধরে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে নতুন দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করানো হয়। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তাঁরা ট্রেন এবং কোচের আগমন-প্রস্থান গণনা করেন। তাঁদের বলা হয়েছিল যে এটি ট্রাভেল টিকিট পরীক্ষক (টিটিই), ট্রাফিক সহকারি এবং কেরানি পদের জন্য প্রশিক্ষণের অংশ। রেলে চাকরি পাওয়ার জন্য প্রত্যেকেই ২ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২৪ লাখ পর্যন্ত টাকাও দেন। জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত এক মাসের প্রশিক্ষণ। আড়াই কোটিরও বেশি, মোট ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা প্রতারণার শিকার হন ওই চাকরিপ্রার্থীরা।
তারপরই তাঁরা বুঝতে পারেন যে, তাঁরা চাকরির নামে বড়সড় ফাঁদে পড়েছেন। কেলেঙ্কারির শিকার হয়েছেন। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিসের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এক প্রাক্তন সেনা জওয়ানও এই ফাঁদে পড়েন। সুব্বাস্বামী নামে সেই প্রাক্তন সেনা জওয়ান-ই ভুক্তভোগীদের সঙ্গে প্রতারকদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দাবি, তিনি জানতেন না যে পুরো জিনিসটি একটি কেলেঙ্কারি। তিনিও নিজেও তাঁদের ফাঁদে পড়েছিলেন। প্রতারিতদের বেশিরভাগই ইঞ্জিনিয়ারিং তথা অন্যান্য কারিগরি বিদ্যায় স্নাতক। স্নেথিল কুমার নামে মাদুরাইয়ের বাসিন্দা ২৫ বছরের এক যুবক জানিয়েছেন, প্রত্যেক প্রার্থী সুব্বাস্বামীকে ২ লাখ থেকে ২৪ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা দিয়েছিলেন। যিনি আবার বিকাশ রানা নামে একজনকে সেই টাকা দেন। এই বিকাশ রানা নিজেকে দিল্লিতে উত্তর রেলওয়ে অফিসে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, যদিও ট্রাভেল টিকিট পরীক্ষক, ট্রাফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ক্লার্কের মতো বিভিন্ন পদের জন্য প্রশিক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হয়, কিন্তু প্রত্যেকে একই প্রশিক্ষণ নিয়েছে, অর্থাৎ স্টেশনে ট্রেন গণনা করা।
অন্যদিকে সুব্বাস্বামী জানান, 'অবসর নেওয়ার পর থেকে, আমি এলাকার বেকার যুবকদের একটি উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পেতে সাহায্য করে আসছি কোনও আর্থিক স্বার্থ ছাড়াই।' তাঁর দাবি, তিনি দিল্লির এমপি কোয়ার্টারে কোয়েম্বাটুরের বাসিন্দা শিবরামন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শিবরামন নিজেকে সাংসদ এবং মন্ত্রীদের খুব ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছিলেন। আর্থিক লাভের পরিবর্তে বেকারদের জন্য রেলওয়েতে কর্মসংস্থানের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। সুব্বাস্বামীর আরও অভিযোগ করেছেন, শিবরামন তাঁকে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে আসতে বলেছিলেন। প্রাথমিকভাবে, তিনি ৩ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে যান। তাঁদের চাকরির প্রশিক্ষণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আরও ২৫ জন প্রার্থী যোগ দেন। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, টাকা আদায়ের জন্য বিকাশ রানা সবসময় তাঁদের সঙ্গে বাইরে দেখা করতেন। কখনও রেল ভবনের ভেতরে নিয়ে যাননি। পরে দেখা যায় ট্রেনিংয়ের নথি সহ পরিচয়পত্র, প্রশিক্ষণ সমাপ্তির শংসাপত্র, চাকরিতে নিয়োগপত্র সব জাল।
আরও পড়ুন, Taj Mahal: টাকার অংক কয়েক কোটি, ৩৭০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার তাজমহলের সঙ্গে ঘটল এঘটনা!
ভুয়ো অফার লেটার! চাকরির নামে কোটি টাকার আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস কলকাতায়
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)