'লাদাখে LAC বরাবর সেনা সমাবেশ করেছে চিন, যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি আমাদের সেনাও'
মে মাসে এলএসির কাছে ভারতের ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করে চিন। ভারত তা ভেস্তে দেয়। চিনকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ জিনিস বরদাস্ত করবে না ভারত।
নিজস্ব প্রতিবেদন: লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে লোকসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী কী বলেন তা জানার জন্য মুখিয়ে ছিলেন সংসদে উপস্থিত বিরোধী সাংসদরা। গত কয়েক মাস ধরে চলা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাতে চলা উত্তেজনা নিয়ে রাজনাথ বলেন-
## লাদাখের পরিস্থিতি অন্যবারের থেকে একেবারেই আলাদা। তাই এইসময় সেনার পাশে গোটা দেশকে থাকতে হবে।
## লাদাখে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি আমরা। সেখানে মোতায়েন সেনা জওয়ানদের সাহস ও উত্সাহ অপরিসীম। দেশের ১৩০ কোটি মানুষ তাদের সঙ্গে রয়েছে। তাদের জন্য টেন্ট, গোলবারুদ, অস্ত্র সবই পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হয়েছে।
## চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে আমার এনিয়ে কথা হয়েছে। তাদের সেনা পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেছি। সাফ জানিয়ে দিয়েছি, ভারত নিজের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
## এই উত্তেজক অবস্থার মধ্যেও কথাবার্তার মধ্যেম লাদাখ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছে ভারত।
গত কয়েক দশক ধরে এলএসিতে পরিকাঠামো বাড়িয়েছে চিন। ভারতও সীমান্ত এলাকায় রাস্তা সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নতি করেছে।
Troops are accordingly being provisioned with suitable clothing, habitat & required defence wherewithal. They are capable of serving at forbidding altitudes with scarce oxygen & in extremely cold temperatures, something that they've done over last many years on Siachen &Kargi: RM https://t.co/mK5SUvFtEi pic.twitter.com/vQBBP2fvPt
— ANI (@ANI) September 15, 2020
## সংসদকে নিশ্চিত করতে চাই আমাদের আর্মড ফোর্স অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে।
## প্যাংগং লেক-সহ এলএসির বিভিন্ন জয়গায় চিন সেনা সমাবেশ করেছে। পাল্টা সমাবেশ করেছে ভারতও।
## এলএসিতে চিন যেভাবে সেনা সমাবেশ করেছে তা চিন-ভারত সমঝোতার পরীপন্থী। এর জন্যই প্রায়ই এলএসিতে সংঘাত হচ্ছে।
## ২৯ ও ৩০ অগাস্ট প্যাংগং লেকের দক্ষিণ ফের আগ্রাসেনর চেষ্টা করেছিল চিন। তা বিফল করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
## দুপক্ষকেই সংযম বজায় রাখতে হবে, সব সমঝোতা মেনে চলেতে হবে।
## পড়শির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারত।
## লাদাখে যেখানে সংযমের প্রয়োজন ছিল সেখানে সংযম দেখিয়েছে সেনা। যেখানে শৌর্য দেখানোর প্রয়োজন সেখানে তা আমরা দেখিয়েছি।
## ১৫ জুন চিনের হামলার চেষ্টা ভেস্তে দেয় ভারত।
China continues to be in illegal occupation of approximately 38,000 sq. kms in #Ladakh. In addition, under the so-called Sino-Pakistan 'Boundary Agreement' of 1963, Pakistan illegally ceded 5,180 sq. km. of Indian territory in Pakistan Occupied Kashmir to China: Defence Minister pic.twitter.com/QdMw9p0m4b
— ANI (@ANI) September 15, 2020
## মে মাসে এলএসির কাছে ভারতের ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করে চিন। ভারত তা ভেস্তে দেয়। চিনকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ জিনিস বরদাস্ত করবে না ভারত। স্টেটাস কো বজায় রাখতে হবে।
## এপ্রিল মাসে চিনের সেনা বেড়ে যায়। মে মাসে গালওয়ানে ভারতের পেট্রোলিংয়ে বাধা দিতে শুরু করে চিন।
## সীমান্তে তিন বাহিনী মেতায়েন রয়েছে। কাজ করছেন গোয়েন্দারা।
## ১৯৯০-২০০৩ পর্যন্ত একটা সমঝোতার মধ্য়ে দুদেশ চলছিল। কিন্তু এখন তা মানতে রাজী নয় চিন।
## চিনের সঙ্গে সমঝোতা রয়েছে যে সীমান্তে দুদেশ সেনা কম করবে।
## ১৯৮৮ সালের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত হয়েছিল। কিন্তু এলএসসিতে অশান্তি হলে তার প্রভাব সম্পর্কে পড়বে।
## ভারত ও চিন দুদেশই মানে সীমানা নির্ধারণ জটিল বিষয়। তবে সীমায় শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে একমত।
## গত যুদ্ধে চিন ভারতের একাংশ দখল করে রেখেছে।
## চিনের সঙ্গে ভারতের সীমা নির্ধারণ এখনও অসম্পূর্ণ। চিন বর্তমান সীমানা মানে না। ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে বাউন্ডারি নির্ধারিত হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে দুদেশের পৃথক ধারণা রয়েছে।
## লাদাখে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেনাদের উত্সাহ দিয়েছেন। আমিও গিয়েছিলাম। ওঁদের সাহস ও শৌর্যের পরিচয় পেয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ডোকা লা-য় ভারত -চিন সংঘাত নিয়ে সংসদে কোনও আলোচনা করেনি সরকার। এনিয়ে প্রবল হইচই করেছিল বিরোধীরা। সূত্রের খবর ছিল মঙ্গলবার সংসদের বাদল অধিবেশেনর দ্বিতীয় দিনে পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সংঘাত নিয়ে বিবৃতি দিতে পারেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। শেষপর্যন্ত সেটাই করলেন রাজনাথ।
গত ১৫ জুন গালওয়ানের সংঘর্ষে ২০ জওয়ান শহিদ হওয়ার পরই সরকারকে চেপে ধরে বিরোধীরা। বিশেষ করে রাহুল গান্ধী-সহ অন্যান্য কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন তোলেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনা ঢুকেছিল কিনা তা স্পষ্ট করুক সরকার। রবিবার বিষয়টি উঠেছিল পার্লামেন্ট অ্যাডভাইসরি বিজনেস কমিটির মিটিংয়ে। এনিয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, লাদাখ ইস্যুর গুরুত্ব বিচার করে এনিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
সংসদে বাদল অধিবেশনে একাধিক বিষয় নিয়ে কথা তোলার ব্যাপারে মুখিয়ে রয়েছে বিরোধীরা। এর মধ্যে রয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারত-চিন উত্তেজনা, দেশের আর্থিক মন্দা, করোনা পরিস্থিতি ও বেকারির মতো ইস্যু। এর মধ্যে লাদাখ ইস্যুই জোরদার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী অধিবেশনের প্রথম দিনেই বলেছেন, সেনার পাশে রয়েছে সরকার। চাই বিরোধীরাও থাকুক।