পায়ের ছাপ ধরে পাকড়াও কেরলের ধর্ষক
অপরাধ ঢাকতে ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনও করা হয় আইনের ওই ছাত্রীকে। এমনকি তাঁর যৌনাঙ্গেও ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ধারালো অস্ত্র। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও উঠে আসে ধর্ষণের নৃশংস বিবরণ।

নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০১৬ সালের এপ্রিল। সেদিনটাকে এখনও ভুলতে পারেনি কেরল। বাড়ির সামনের জলাশয় থেকে উদ্ধার হয়েছিল আইনের ছাত্রীর রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ। ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তাঁকে। ঘটনার প্রতিবাদে জ্বলে উঠেছিল কেরল। সেই ঘটনায় প্রায় ১৮ মাস পর মূল অভিযুক্ত বছর পঞ্চাশের আমির উল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করল কোচি হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ‘কংগ্রেস ব্লু হোয়েল গেম খেলছে, ফাইনাল এপিসোড ১৮ ডিসেম্বর’, মন্তব্য মোদীর
এরনাকুলাম জেলার পেরুমবাভোর এলাকায় ছোট্ট এক কামরার ঘরে মা ও বোনের সঙ্গে থাকতেন নিহত ওই দলিত কন্যা। গত বছর এপ্রিলের এক সন্ধ্যায় বাড়ির সামনের জলাশয় থেকে উদ্ধার হয় রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত দেহ। ৩০ বছরের ওই যুবতীর সারা শরীরে হিংস্রতার ছাপ স্পষ্ট। বোঝাই যাচ্ছিল, লালসার শিকার হয়েছিলেন তিনি। অপরাধ ঢাকতে ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনও করা হয় আইনের ওই ছাত্রীকে। এমনকি তাঁর যৌনাঙ্গেও ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ধারালো অস্ত্র। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও উঠে আসে ধর্ষণের নৃশংস বিবরণ। ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা শহর। ক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যে।
পরবর্তীকালে তদন্তে উঠে আসে বছর পঞ্চাশের ব্যক্তি আমির উল ইসলামের নাম। ওই ব্যক্তি দলিত যুবতীর প্রতিবেশী। পেশায় শ্রমিক আমির আদতে অসমের বাসিন্দা। দলিত অ্যাট্রোসিটিশন প্রিভেনশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, আমিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তখনও অধরা ছিল আমির। দোষীকে গ্রেফতার ও তার উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে আগুন জিইয়ে থাকে কেরলবাসীর মধ্যে।
আরও পড়ুন: বিকাশ ভুলে 'তু-তু ম্যায়-ম্যায়' করেছেন মোদী, তীব্র আক্রমণ শিবসেনার
ঘটনাকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। ক্ষমতায় আসার পর গত বছর ২৫ মে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকেই এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব অন্য অন্য সংস্থার হাতে দেয় পিনারাই বিজয়নের এলডিএফ সরকার। গঠিত হয় সিট। তদন্তের স্বার্থে প্রায় একশো জন পুলিস কর্মী দেড় হাজার মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় একশো জনের। তদন্তে পুলিসের হাতে উঠে আসে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। দলিত যুবতীর বাড়ির পাশেই একটি খালের ধারে দুটি পায়ের ছাপ খুঁজে পান তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই শেষমেশ মূল অভিযুক্ত আমিরের কাছে পৌঁছয় পুলিস।
মঙ্গলবার কোচি আদালতে এই মামলারই শুনানি ছিল। দলিত কন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের দায়ে আমির উল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।