প্রাসঙ্গিকতা ফেরানোর পথে ইতিহাসই অন্তরায় সাংমার

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রাইসিনা হিলসে প্রবেশ নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। কিন্তু উত্সবের আনন্দে হারিয়ে যেতে বসেছে আর একটি নাম। পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। নিজের দল ছেড়ে, বিজেপির সমর্থনে রাষ্ট্রপতি ভোটে লড়ে হেরে গিয়েছেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই আদিবাসী নেতা। ইতিহাস বলছে রাষ্ট্রপতি ভোটে পরাজিত প্রার্থীরা চিরতরে হারিয়ে গেছেন বিস্মৃতির আড়ালে।

Updated By: Jul 26, 2012, 11:22 AM IST

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রাইসিনা হিলসে প্রবেশ নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। কিন্তু উত্সবের আনন্দে হারিয়ে যেতে বসেছে আর একটি নাম। পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। নিজের দল ছেড়ে, বিজেপির সমর্থনে রাষ্ট্রপতি ভোটে লড়ে হেরে গিয়েছেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই আদিবাসী নেতা। ইতিহাস বলছে রাষ্ট্রপতি ভোটে পরাজিত প্রার্থীরা চিরতরে হারিয়ে গেছেন বিস্মৃতির আড়ালে। সাংমা কি পারবেন সেই ধারা পাল্টাতে?
জাতীয় রাজনীতিতে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লেও, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণব মুখার্জির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে নিজের হারানো রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা অনেকটাই ফেরাতে পেরেছেন পি এ সাংমা। জীবনে প্রথমবার এই নির্বাচনে হার তাই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের পুনরুত্থান ঘটাতে পারে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সোনিযা গান্ধীর বিদেশিনি পরিচয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলে ১৯৯৯ সালে শরদ পাওয়ারের সঙ্গেই কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি গড়েছিলেন সাংমা। প্রণব মুখার্জির বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে গিয়ে সেই দলও ছাড়তে হয়েছে তাঁকে।
কিন্তু এই প্রথমবার দেশের আদিবাসী ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার জন্য তাঁর দাবি কিছুটা হলেও আলোড়ন ফেলেছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের লড়াইয়ে হারের পর এটুকুই সান্ত্বনা হতে পারে সাংমার কাছে। সাম্প্রতিক অতীতের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হারের পর অনেক বড় মাপের রাজনীতিককেও হারিয়ে যেতে হয়েছে বিস্মৃতির আড়ালে। একমাত্র ব্যতিক্রম নীলম সঞ্জীব রেড্ডি। ১৯৬৯-এ ভিভি গিরির কাছে রাষ্ট্রপতি ভোটে হেরে গেলেও ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের পরাজয়ের পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি হন তিনি।

১৯৯৭ সালে কে আর নারায়ণনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন টিএন সেশন। কিন্তু সেই সঙ্গেই শেষ হয়ে যায় দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের রাজনৈতিক জীবন। ২০০২ সালে বামেদের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হন সদ্যপ্রয়াত লক্ষ্মী সেহগল। কিন্তু এপিজে আবদুল কালামের কাছে বিপুল ভোটে হারতে হয় তাঁকে। এমনকী ২০০৭ সালে প্রতিভা পাটিলের কাছে হেরে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিতে বাধ্য হন ভৈঁরো সিং শেখাওয়াতের মত প্রবীণ রাজনীতিক।
রাইসিনার রেসে নেমে পরাজয়ের পর রাজনৈতিক বানপ্রস্থে যাওয়ার নজির রয়েছে সাংমার নিজের রাজ্য মেঘালয়েও! ১৯৯২ সালে শঙ্করদয়াল শর্মার সঙ্গে পয়লা নম্বর নাগরিক হওয়ার দ্বৈরথে নেমে পরাজিত হওয়ার পর সক্রিয় রাজনীতিকে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়েছিলেন লোকসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার জর্জ গিলবার্ট সোয়েল। তুরার মুকুটহীন রাজা পি এ সাংমা ইতিহাসের এই পাল্টাতে পারেন কিনা তার উত্তর অবশ্য জানা যাবে আগামী দিনে।

.