হঠাত্ মোদী বন্ধুহীন? কাছে ছিল যাঁরা, সরছেন একে একে
মুম্বইয়ে এই বৈঠক যখন চলছে তখনই দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে তাণ্ডব চালাচ্ছিল মুখোশধারীরা। তারপর দেশজুড়ে পরিস্থিতি আরও বদলেছে। সরাসরি JNU-এর প্রতিবাদীদের কাছে পৌঁছে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন
নিজস্ব প্রতিবেদন: বৈঠকে সাড়া দিল না বলিউড। নিন্দায় সরব দুই নোবেলজয়ী। কূটনৈতিক স্তরেও বাড়ছে অস্বস্তি। মোদী কি হঠাত্ বন্ধুহীন হয়ে পড়লেন?
অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন বলিউডের হুজহুরা। মহাত্মা গান্ধীর দেড়শোতম জন্ম জয়ন্তী। সেই উপলক্ষে দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে বলিউডের সমর্থন চেয়েছিলেন মোদী। সম্মতিও পেয়েছিলেন। তিন মাসও হয়নি। আমূল বদলে গেছে পরিস্থিতি। এবার শাসকের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না বলিউড।
রবিবার পাঁচই জানুয়ারি, মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলে বলিউডের চিত্র নির্মাতা ও সুরকারদের ডাকা হয়েছিল। নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে বলিউডের সমর্থন চাইতেই ওই বৈঠক ডাকেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। বৈঠকে যোগ দেননি, জাভেদ আখতার, ফারহান আখতার, কবীর খান, সিদ্ধার্থ রয় কাপুর, দিয়া মির্জা, আয়ুষ্মান খুরানা, রাজকুমার রাও ও ভিকি কৌশল।
আরও পড়ুন- জোর ধাক্কা খেল 'ডন', গ্রেফতার দাউদ ইব্রাহিমের ডান হাত এজাজ
মুম্বইয়ে এই বৈঠক যখন চলছে তখনই দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে তাণ্ডব চালাচ্ছিল মুখোশধারীরা। তারপর দেশজুড়ে পরিস্থিতি আরও বদলেছে। সরাসরি JNU-এর প্রতিবাদীদের কাছে পৌঁছে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন অভিনেতা অক্ষয় কুমার। সরকারের বিভিন্ন সাফল্যকে ভিত্তি করে তৈরি ছবিতে তাঁকে দেখা যায়। সেই অক্ষয় কুমারের স্ত্রী টুইঙ্কল খান্নাও JNU-তে গুন্ডামির নিন্দা করেছেন। তিনি টুইট করেছেন, যে দেশে ছাত্রদের থেকে গরুর নিরাপত্তা বেশি, সেই দেশ এখন মাথা নোয়াতে অস্বীকার করছে। হিংসা দিয়ে মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে না...
আরও পড়ুন- ফাঁসির তারিখ ২২ জানুয়ারি, তার আগেই সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি জানাল ধর্ষক বিনয় শর্মা
বলিউড হঠাত্ করে মোদী বিমুখ হয়ে পড়েছে এমন নয়। সুশান্ত সিং রাজপুত, আয়ূষ্মান খুরানার মতো অভিনেতারা গোড়া থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনীর বিরুদ্ধে। আলিয়া ভাট, সোনাক্ষী সিনহা ও ঈশান খট্টর প্রতিবাদ করেছেন। উরি দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভিকি কৌশল। তিনিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আবার অনুপম খের, পরেশ রাওয়ালের মতো প্রবীণ অভিনেতা নাগরিকত্ব সংশোধনের পক্ষে। কিন্তু, তিন খান, আমির-শাহরুখ ও সলমন এখনও মুখ খোলেননি। নীরব রয়েছেন শাহেনশা অমিতাভ বচ্চনও।
অর্থনীতিতে নোবেল প্রাপক অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, নাত্সি শাসনের আগে জার্মানিতে যা রব ছিল, ভারতে তারই প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। JNU -তে যা ঘটেছে তা উদ্বেগজনক। বলেছেন আর এক নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা দেশের অর্থনীতিতে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আন্তর্জাতিক বিশ্বেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পড়তে হচ্ছে মোদী সরকারকে। বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, বন্ধু মুসলিম দেশগুলি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। নিন্দা করতে শুরু করেছে পশ্চিমী মানবাধিকার সংগঠনগুলি।